বিহারে আসন বণ্টনের দড়ি টানাটানিতে এনডিএর সঙ্কট

বিহারের ২০২০ বিধানসভা নির্বাচন রাজ্যের রাজনীতিতে এক বিশেষ অধ্যায় হয়ে থাকবে। মাত্র ১২ হাজারেরও সামান্য বেশি ভোট—যা মোট ভোটের মাত্র ০.০৩ শতাংশ—দূরত্বে দাঁড়িয়েছিল দুই প্রধান…

When Strength Becomes a Strain: NDA’s Seat-Sharing Challenge in Bihar

বিহারের ২০২০ বিধানসভা নির্বাচন রাজ্যের রাজনীতিতে এক বিশেষ অধ্যায় হয়ে থাকবে। মাত্র ১২ হাজারেরও সামান্য বেশি ভোট—যা মোট ভোটের মাত্র ০.০৩ শতাংশ—দূরত্বে দাঁড়িয়েছিল দুই প্রধান রাজনৈতিক শিবির। একদিকে বিজেপি নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স (এনডিএ) (Nitish Kumar) এবং অন্যদিকে আরজেডি নেতৃত্বাধীন মহাগঠবন্ধন।

ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি), জনতা দল (ইউনাইটেড), লোক জনশক্তি পার্টি (রামবিলাস), হিন্দুস্তানি আওয়াম মোর্চা এবং রাষ্ট্রীয় লোক মর্চা—এই পাঁচটি দল নিয়ে বিহারে এনডিএর মূল কাঠামো। এত বড় একটি জোট থাকা সত্ত্বেও, তাদের বিজয় ব্যবধান ছিল অত্যন্ত সামান্য। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠেছে—কেন এই অস্বস্তি?

   

জানা গিয়েছে, এনডিএর বিভিন্ন সহযোগী দলের আপেক্ষিক শক্তি এবং তাদের আসনভিত্তিক পারফরম্যান্সের সঙ্গে ২০২০-র ফলাফল একেবারেই মেলে না। এই বিশ্লেষণ দুটি প্রধান সূচকের ওপর দাঁড়িয়ে:

১. গত চারটি নির্বাচনে কোন দল কতগুলি আসনে প্রথম বা দ্বিতীয় স্থানে ছিল।

২. কোন কোন আসনে কোনও দলের ভোট ভাগ ছিল ৩০ শতাংশ বা তার বেশি।

Advertisements

এই দুটি সূচক থেকে দেখা যাচ্ছে, এনডিএর অন্তর্গত প্রতিটি দলের শক্তির জায়গা আলাদা হলেও, সমন্বয়ের অভাব তাদের প্রভাব ফেলেছে ফলাফলের ওপর। বিজেপি বিহারে এখনও একটি বড় শক্তি হলেও, তাদের সাফল্য অনেকটাই নির্ভর করে জেডিইউর মতো পুরনো আঞ্চলিক দলের সমর্থনের ওপর। অন্যদিকে, লোক জনশক্তি পার্টি (রামবিলাস) এবং হিন্দুস্তানি আওয়াম মোর্চার মতো ছোট দলগুলি কয়েকটি নির্বাচনী ক্ষেত্রে প্রভাব বিস্তার করলেও, রাজ্যজুড়ে তাদের প্রভাব সীমিত।

ফলে আসন বণ্টনের সময় এই দলগুলির মধ্যে টানাপোড়েন এবং প্রার্থীপদ নিয়ে অসন্তোষ তৈরি হয়েছিল। ২০২০-র নির্বাচনের আগে থেকেই আসন বণ্টন নিয়ে এনডিএর ভেতরে অস্বস্তি স্পষ্ট ছিল। লোক জনশক্তি পার্টি (রামবিলাস) কিছু আসনে স্বতন্ত্রভাবে প্রার্থী দেওয়ায় বিজেপি-জেডিইউর ভোটে ভাঙন দেখা দেয়। ছোট ছোট এই ভাঙনগুলোই শেষ পর্যন্ত ভোটের অঙ্কে বড় ফারাক তৈরি করেছে বলে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মত।

২০২০-র ফলাফল এনডিএকে একটি বড় বার্তা দিয়েছে—কেবল জোট গড়লেই চলবে না, ভোটারদের কাছে একটি সুস্পষ্ট ও সমন্বিত বার্তা পৌঁছে দেওয়া জরুরি।