Republic Day: পুলিশ অফিসারদের বড় সাফল্য, রাষ্ট্রপতি পদক লিস্টে ২২ জনের নাম

২০২৫ সালের প্রজাতন্ত্র দিবসে দেশের পুলিশ অফিসার ও কর্মীদের জন্য রাষ্ট্রপতি পদক প্রাপ্তদের তালিকা প্রকাশিত হয়েছে। সেই তালিকায় পশ্চিমবঙ্গ থেকে দু’জন আইপিএস অফিসারকে যথাক্রমে ‘অসামান্য…

West Bengal: 22 Police Officers Featured in Rashtrapati Padak Recipients List on Republic Day

২০২৫ সালের প্রজাতন্ত্র দিবসে দেশের পুলিশ অফিসার ও কর্মীদের জন্য রাষ্ট্রপতি পদক প্রাপ্তদের তালিকা প্রকাশিত হয়েছে। সেই তালিকায় পশ্চিমবঙ্গ থেকে দু’জন আইপিএস অফিসারকে যথাক্রমে ‘অসামান্য অবদান’ (ডিস্টিংগুইশড সার্ভিস) এবং ‘উল্লেখযোগ্য অবদান’ (মেরিটোরিয়াস সার্ভিস)-এর জন্য রাষ্ট্রপতি পদকে মনোনীত করা হয়েছে। তাঁরা হলেন, মালদা রেঞ্জের আইজি দীপনারায়ণ গোস্বামী এবং কোচবিহারের পুলিশ সুপার দ্যুতিমান ভট্টাচার্য।

এছাড়া পশ্চিমবঙ্গের আরও ২০ জন পুলিশ অফিসার এবং কর্মী ‘উল্লেখযোগ্য অবদান’-এর জন্য কেন্দ্রীয় স্বীকৃতি পাচ্ছেন। তবে, এই স্বীকৃতি পাওয়ার পাশাপাশি, রাজ্যের পুলিশের মধ্যে কিছু প্রশ্নও উঠে এসেছে। বিশেষত, কেন গত কয়েক বছরে প্রজাতন্ত্র দিবস এবং স্বাধীনতা দিবসের পুলিশ পদক তালিকায় পশ্চিমবঙ্গের আইপিএস অফিসারদের নাম প্রায় কখনোই দেখা যাচ্ছে না?

   

এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সচিব পর্যায়ের এক আধিকারিক জানালেন, “প্রথমত, পশ্চিমবঙ্গ সরকার যে শর্তগুলি মেনে নাম পাঠানোর কথা, সেগুলো অধিকাংশ সময়েই মানে না। ফলে স্ক্রিনিংয়ের সময়েই অনেক নাম বাতিল হয়ে যায়। দ্বিতীয়ত, অনেক ক্ষেত্রে আইপিএস অফিসারদের নাম মেরিটোরিয়াস সার্ভিসের জন্য পাঠানো হয় না। রাজ্য সরকার যদি নাম না পাঠায়, তবে আমাদের কিছু করার থাকে না।”

এই পরিস্থিতি নিয়ে রাজ্যের শীর্ষ পুলিশ আধিকারিকদের মধ্যে একাংশের বক্তব্য, “মনোনয়ন পাঠানো হলেও বিভিন্ন কারণে তা বাতিল হয়ে যায়।” তবে তারা এই ব্যাপারে সরাসরি রাজনৈতিক কোনও যুক্তি দেননি। তাদের ভাষ্যে, “এটা একটি প্রবণতা, যা এখনও চলতে রয়েছে।” এক্ষেত্রে পরিসংখ্যানও বিষয়টিকে স্পষ্ট করে। রাজ্যগুলির মধ্যে, উত্তরপ্রদেশ, বিহার, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিসগড়, গুজরাটের মতো রাজ্যগুলির পদক প্রাপকদের সংখ্যা সব সময়েই বাংলার তুলনায় বেশি থাকে।

এছাড়া, পুলিশ মহলের একাংশের দাবি, রাজ্য পুলিশের মধ্যে অনেক বৈষম্য লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিশেষত, প্রোমোটি আইপিএস অফিসাররা এই পদক বেশি পাচ্ছেন, আর নিয়মিত আইপিএস অফিসারদের মনোবলে এর প্রভাব পড়ছে। এক শীর্ষ পুলিশ আধিকারিকের মতে, “যারা নিয়মিত আইপিএস, তাদের মনোবলে এটি ধাক্কা দিতে পারে।”

এদিকে, রাজ্যের পুলিশ আধিকারিকদের একাংশের দাবি, নন-আইপিএস স্তরের পুলিশ অফিসারদের জন্য পাঠানো মনোনয়নগুলো বেশিরভাগ সময়েই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক গ্রহণ করে এবং পদক দিয়ে স্বীকৃতি দেয়। কিন্তু আইপিএস অফিসারদের ক্ষেত্রে কেন তা ঘটছে না, এ প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।

পশ্চিমবঙ্গের পুলিশ মহলে এই ব্যাপারে ক্ষোভের সঞ্চার হচ্ছে, কারণ একদিকে রাজ্যের বহু পুলিশ কর্মী গৌরবময় সেবা প্রদান করছেন, অন্যদিকে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে তাদের যথাযথ মূল্যায়ন করা হচ্ছে না, এমন অভিযোগ উঠছে।

তবে, এ বছর রাজ্য থেকে ২২ জন পুলিশ অফিসার এবং কর্মী পদক পেয়ে অবশ্যই উজ্জ্বল হয়েছেন। এটি অবশ্যই প্রশংসনীয় এবং রাজ্যের পুলিশ বাহিনীর জন্য একটি বড় সাফল্য। কিন্তু সামগ্রিকভাবে, এই পদক বিতরণ প্রক্রিয়া ও মনোনয়ন পাঠানোর ক্ষেত্রে আরও স্বচ্ছতা এবং নিয়মিততার প্রয়োজন অনুভূত হচ্ছে, যাতে ভবিষ্যতে রাজ্যের পুলিশ বাহিনীও তাদের পরিশ্রমের সঠিক স্বীকৃতি পেতে পারে।