নয়া দিল্লি: দেশের উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচন (Vice President Election) ঘিরে বড় ঘোষণা করল নির্বাচন কমিশন। আগামী ৯ সেপ্টেম্বর হবে ভোটগ্রহণ। বর্তমান উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়ের আকস্মিক ইস্তফা-র পর এই নির্বাচন কার্যত অত্যাবশ্যক হয়ে উঠেছিল।
নির্বাচন কমিশনের ঘোষণা অনুযায়ী, ৭ অগস্ট থেকে শুরু হচ্ছে মনোনয়ন জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া। ২১ অগস্ট পর্যন্ত প্রার্থীরা মনোনয়ন জমা দিতে পারবেন। ২২ অগস্ট হবে স্ক্রুটিনি বা যাচাই-বাছাই। এরপর ২৫ অগস্ট পর্যন্ত প্রার্থীরা তাঁদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে পারবেন। সবশেষে, ৯ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলবে। গণনার দিন পরে ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছে কমিশন।
গত ২১ জুলাই, সন্ধ্যেবেলা আচমকা ইস্তফা দেন উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়। সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়, শারীরিক অসুস্থতার কারণেই পদত্যাগ করেছেন তিনি। তবে রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে জল্পনা। বিরোধীরা মনে করছেন, এই ইস্তফার পিছনে শুধুমাত্র স্বাস্থ্যগত কারণ নেই, এর পেছনে রাজনৈতিক কৌশলও থাকতে পারে।
ভারতের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৬৮ (২) অনুযায়ী, উপরাষ্ট্রপতির পদ খালি হলে যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচন করাতে হবে। উপরাষ্ট্রপতির পদে অস্থায়ীভাবে কাউকে নিযুক্ত করা যায় না, তাই এই প্রক্রিয়া দেরি না করেই শুরু করা হয়েছে।
যেহেতু ধনখড় প্রায় তিন বছর দায়িত্বে ছিলেন, তাই নতুনভাবে নির্বাচিত উপরাষ্ট্রপতি পূর্ণ পাঁচ বছরের জন্য দায়িত্ব সামলাবেন। উপরাষ্ট্রপতির কাজ শুধুমাত্র সাংবিধানিক নয়, সংসদের উচ্চকক্ষে (রাজ্যসভা) সভাপতিত্ব করাও এই পদাধিকারীর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।
নতুন উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচন ঘিরে নজর যাচ্ছে বিরোধী জোট INDIA-র দিকে। এই জোটের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শরিক তৃণমূল কংগ্রেস এই নির্বাচনে কেমন ভূমিকা নেয়, তা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।
বিগত রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিরোধীদের প্রার্থীকে সমর্থন করলেও শেষ মুহূর্তে কিছু বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছিল তৃণমূলের অবস্থান নিয়ে।
এইবার সেই ভুল পুনরাবৃত্তি না করে একক ও স্পষ্ট অবস্থান নিতে চাইছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল। বিরোধী শিবিরের মধ্যে ঐক্যবদ্ধ বার্তা দেওয়ার ক্ষেত্রেও এই নির্বাচন বড় সুযোগ হতে চলেছে। তৃণমূলের সাংসদ সংখ্যা বিরোধীদের ভোট সমীকরণে বড় ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়াবে।
উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচন ২০২৫ কেবলমাত্র একটি সাংবিধানিক প্রক্রিয়া নয়, বরং দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যতের নির্ধারকও হতে চলেছে। বিরোধী জোটের ঐক্য, তৃণমূল কংগ্রেসের ভূমিকা এবং এনডিএ-র প্রতিপক্ষকে চ্যালেঞ্জ দেওয়ার কৌশল—এই সব কিছু নিয়েই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে আগামী ৯ সেপ্টেম্বরের ভোট।