নিউজ ডেস্ক, নয়াদিল্লি: সাংবাদিকতার জগতে ইন্দ্রপতন। চলে গেলেন প্রবীণ সাংবাদিক বিনোদ দুয়া (Vinod Dua)। শনিবার দুপুরে দিল্লির এক বেসরকারি হাসপাতালে দীর্ঘ এক বছরের লড়াইয়ের অবসান হল। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৭। চলতি বছরের শুরুতেই করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি। তারপর থেকেই করোনা সংক্রান্ত নানা সমস্যায় ভুগছিলেন এই প্রবীণ সাংবাদিক।
শুক্রবার এই প্রবীণ সাংবাদিকের কন্যা মল্লিকা দুয়া সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর বাবার সঙ্কটজনক শারীরিক অবস্থার কথা জানিয়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত শনিবার দুপুরে তাঁর জীবনাবসান হয়। উল্লেখ্য চলতি বছরের শুরুতেই করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় বেশ কিছুদিন তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি থাকতে হয়েছিল। বেশকিছু দিন হাসপাতালে কাটিয়ে বাড়ি ফিরলেও এপ্রিল মাস থেকে একাধিক শারীরিক সমস্যা শুরু হয়। চিকিৎসার জন্য তাঁকে ফের নিয়ে যেতে হয় হাসপাতালে। দিন চারেক আগে বিনোদের মেয়ে অভিনেত্রী মল্লিকা দুয়া জানিয়েছিলেন, তাঁর বাবার শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত সঙ্কটজনক। এই মুহূর্তে তিনি আইসিইউতে রয়েছেন। চিকিৎসকরা আপ্রাণ চেষ্টা চালালেও শেষ পর্যন্ত আর শেষ রক্ষা হল না।
উল্লেখ্য, দিল্লির উদ্বাস্তু কলোনিতে বড় হয়েছিলেন বিনোদ। মাত্র ২৫ বছর বয়সে তিনি যোগ দিয়েছিলেন দূরদর্শনে। হিন্দি সাংবাদিকতার অন্যতম পথিকৃৎ তিনি। দীর্ঘ ৪২ বছরের সাংবাদিকতার জীবন। দূরদর্শনের পর তিনি দীর্ঘদিন এনডিটিভির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এনডিটিভি থেকে বেরিয়ে এসে তিনি ‘দ্য ওয়্যারে’ যোগ দেন। দূরদর্শনে হিন্দি সংবাদপাঠের ইতিহাসে তাঁকে পথ প্রদর্শক বলেই মনে করা হয়। রবিবার বিনোদ দুয়ার শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।
এদিন বাবার মৃত্যু খবরও সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে জানিয়েছেন মল্লিকা। সেখানেই মল্লিকা লিখেছেন, আমার বাবা ছিলেন একজন ভয়ডরহীন মানুষ। তিনি সত্যি কথাটা লিখতে কখনও পিছিয়ে আসেননি। জীবনে কখনও ভয় পাননি আমার বাবা। অসীম সাহস থাকার কারণেই সামান্য এক উদ্বাস্তু কলোনি থেকে তিনি এমন একটি জীবনে পৌঁছতে পেরেছিলেন। সাংবাদিকতার ৪২ বছরের জীবনে সব সম্মান অর্জন করেছেন তিনি। বাবা সর্বদাই আমাদের সত্যের পথে চলতে, সত্যের পাশে থাকতে বলে গিয়েছেন।
আজ থেকে আমার বাবা স্বর্গে গিয়ে আমার মায়ের পাশেই থাকবেন। আমি নিশ্চিত সেখানেও আমার মা ও বাবা আবার এক সঙ্গেই রান্না করবেন, গান গাইবেন, ঘুরে বেড়াবেন। অবশ্যই কাজের ফাঁকে ঝগড়াও করবেন। উল্লেখ্য, চলতি বছরের জুন মাসেই বিনোদের স্ত্রী চিন্না দুয়াও প্রয়াত হয়েছেন। তিনিও করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন। চিন্না ছিলেন একজন রেডিওলজিস্ট। চিন্নাও করোনার বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন লড়াই চালিয়ে হার মানেন।