দেশজুড়ে ‘বন্দে মাতরম’-এর ১৫০ বছর পূর্তি উদ্যাপনের প্রস্তুতি নিচ্ছে কেন্দ্র। তার আগেই রাজনৈতিক তাপমাত্রা চড়ল বিজেপি-কংগ্রেস তরজায়। শুক্রবার বিজেপি কংগ্রেসের দিকে অঙুল তুলে বলে, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর নেতৃত্বে দলটি ইচ্ছাকৃতভাবে জাতীয় গানের ঐতিহাসিক রূপ বিকৃত করেছিল।
বন্দে মাতরম–এর সংক্ষিপ্ত সংস্করণ
দলের জাতীয় মুখপাত্র সি. আর. কেসবন শুক্রবার এক্স-এ লিখেছেন, “১৯৩৭ সালে জওহরলাল নেহরুর সভাপতিত্বে কংগ্রেস বন্দে মাতরম–এর সংক্ষিপ্ত সংস্করণ অনুমোদন করে। গানটির যে স্তবকে মা দুর্গার বন্দনা ছিল, সেটি ইচ্ছে করেই বাদ দেওয়া হয়। ধর্মনিরপেক্ষতার নামে কংগ্রেস আসলে জাতির আত্মাকে বিকৃত করেছিল।”
কেসবনের বক্তব্যে তীব্রতা স্পষ্ট, “বন্দে মাতরম ছিল আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের মন্ত্র, জাতীয় ঐক্যের শপথ। কিন্তু কংগ্রেস ধর্মীয় তুষ্টিকরণের রাজনীতি করে গানটিকে বিভেদের প্রতীকে পরিণত করেছে। যুব প্রজন্মের জানা উচিত, এটি শুধুমাত্র একটি রাজনৈতিক ভুল নয়, বরং এক ঐতিহাসিক পাপ।”
বন্দে মাতরম মুসলমানদের ‘বিরক্ত’ করতে পারে
বিজেপি মুখপাত্র নেহরুর একাধিক চিঠির উল্লেখও করেছেন। তাঁর দাবি, “১৯৩৭ সালের ১ সেপ্টেম্বর নেহরু নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুকে চিঠিতে লিখেছিলেন, বন্দে মাতরম মুসলমানদের ‘বিরক্ত’ করতে পারে। পরে ২০ অক্টোবর আরেক চিঠিতে তিনি গানটিকে জাতীয় সংগীত হিসেবে অযোগ্য বলেছিলেন।” কেসবনের ভাষায়, “নেহরুর এই মতামত ভারতের সাংস্কৃতিক ঐক্যের ভিত নাড়িয়ে দিয়েছিল, যেখানে নেতাজি ছিলেন পূর্ণাঙ্গ সংস্করণের দৃঢ় সমর্থক।”
এখানেই শেষ নয়। কেসবন সমসাময়িক রাজনীতিতেও তুলেছেন তুলনা, “নেহরুর হিন্দু-বিরোধী মানসিকতার প্রতিধ্বনি আজ রাহুল গান্ধীর বক্তব্যে ফিরে এসেছে। সম্প্রতি ছট্ পূজাকে ‘নাটক’ বলে কটাক্ষ করে তিনি কোটি ভক্তের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করেছেন।”
বন্দে মাতরম–এর ১৫০ বছর পূর্তি
এই তীব্র রাজনৈতিক টানাপোড়েনের মধ্যেই শুক্রবার ইন্দিরা গান্ধী ইনডোর স্টেডিয়ামে প্রধানমন্ত্রী মোদী উদ্বোধন করবেন বন্দে মাতরম–এর ১৫০ বছর পূর্তি উদ্যাপন। অনুষ্ঠানেই প্রকাশ পাবে বিশেষ স্মারক ডাকটিকিট ও স্মারক মুদ্রা। একই সঙ্গে দেশজুড়ে হবে বন্দে মাতরম–এর সমবেত গীতধ্বনি, যা সূচনা করবে বছরব্যাপী জাতীয় উদ্যাপনের, চলবে নভেম্বর ২০২৬ পর্যন্ত।


