উত্তরপ্রদেশের (Uttar Pradesh) সীতাপুরে আবারও প্রকাশ্যে খুন হলেন একজন সাংবাদিক। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার দুপুরে। নিহত সাংবাদিকের নাম রাঘবেন্দ্র বাজপেয়ী। তিনি একটি হিন্দি দৈনিকের স্থানীয় সংবাদদাতা ছিলেন। গুলি করে তাকে হত্যা করা হয়েছে এবং এই নারকীয় ঘটনার পেছনে কী কারণ ছিল তা নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে এবং বিভিন্ন দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
রাঘবেন্দ্র বাজপেয়ী ছিলেন ৩৫ বছর বয়সী একজন স্থানীয় সাংবাদিক। শনিবার দুপুরে তিনি বাড়িতে ছিলেন। সেই সময় তার মোবাইলে একটি ফোন আসে। ফোন পাওয়ার পর তিনি বাইক নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। লখনউ-দিল্লি জাতীয় সড়কের উপর দিয়ে যাচ্ছিলেন। হঠাৎ করে কিছু দুষ্কৃতী তার পেছনে এসে বাইকটি ধাক্কা মারলে তিনি সড়কে পড়ে যান। এরপর আততায়ীরা তাকে লক্ষ্য করে পরপর তিনটি গুলি চালায়। গুলির পর তারা এলাকা ছেড়ে চলে যায়।
স্থানীয়রা তড়িঘড়ি রাঘবেন্দ্রকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। তবে হাসপাতালে পৌঁছানোর পর চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। জানা গেছে, রাঘবেন্দ্রের বুকে ও মাথায় গুলি লেগেছিল। মৃত্যুর পর এই ঘটনা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। কেন এমনভাবে প্রকাশ্যে একজন সাংবাদিককে হত্যা করা হলো? তিনি কি কোনও গুরুত্বপূর্ণ খবরের সূত্র পেয়েছিলেন? নাকি এই হত্যার পেছনে অন্য কোনো কারণ রয়েছে?
পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই হত্যার তদন্ত শুরু করা হয়েছে। পুলিশ ঘটনার স্থান এবং হাসপাতাল পরিদর্শন করেছে। পাশাপাশি, মাহোলি, ইমালিয়া এবং কোতোয়ালি থানার পুলিশও ঘটনার তদন্তে নেমেছে। সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করা হচ্ছে, যা থেকে দুষ্কৃতীদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। এর পাশাপাশি, আশপাশের এলাকায় তল্লাশি চলছে।
এখন প্রশ্ন উঠছে, কেন রাঘবেন্দ্র ফোন পেয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেলেন? তিনি কি কোনও বিশেষ খবর পেয়ে গিয়েছিলেন? অথবা কি কোনও ব্যক্তিগত শত্রুতার কারণে তাকে হত্যা করা হল? স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রাঘবেন্দ্র একজন সতর্ক এবং পরিশ্রমী সাংবাদিক ছিলেন। তিনি সাধারণত সমাজের অবিচার ও দুষ্কৃতী কার্যকলাপ নিয়ে সংবাদ তৈরি করতেন। এমনকি তিনি বিভিন্ন গ্যাং ও অপরাধী চক্রের বিরুদ্ধে রিপোর্টও করতেন। তবে কি এই ধরনের কাজের কারণেই তাঁকে জীবন দিতে হলো?
এছাড়া, পুলিশ আরও তদন্ত করছে রাঘবেন্দ্রের মোবাইল ফোন নিয়ে। সম্ভবত ফোনটির মধ্যে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য থাকতে পারে, যা হত্যার কারণ উন্মোচন করতে সহায়তা করবে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ফোনটি খতিয়ে দেখার পর আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যেতে পারে, যা হত্যার পেছনের আসল কারণ বের করার জন্য প্রয়োজনীয় হবে।
এমনকি, রাঘবেন্দ্রের হত্যার ঘটনার পর এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। সাংবাদিকদের সংগঠনগুলো এই ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে এবং তাদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। পাশাপাশি, রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবিও উঠেছে। অপরাধীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে কঠোর শাস্তি দেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে।