ওয়াশিংটনে পালাবদলের তোড়জোড়ের মধ্যেই রবিবার ভারত সফরে আসছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সালিভান (Jack Sulivan)। এই সফরটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে, কারণ এটি আসছে এমন সময়ে যখন আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি দ্রুত পরিবর্তনশীল এবং ভারতের সঙ্গে আমেরিকার সম্পর্কের (India-US relation) ক্ষেত্রে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে আলোচনার প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হচ্ছে। আমেরিকার বিদেশ দফতর থেকে জানানো হয়েছে যে, জ্যাক সালিভান (Jack Sulivan) দুই দিনের জন্য ভারত সফর করবেন, যেখানে তিনি ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালসহ (Ajit Doval) শীর্ষ ভারতীয় সরকারের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।
চিন বিরোধিতায় এক সুরে ভারত-বাংলাদেশ
এই সফরে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা হতে পারে। সরকার সূত্রে জানা গেছে, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের নানা দিক, বিশেষ করে আদানিদের বিরুদ্ধে ঘুষের মামলা এবং আমেরিকা ও কানাডার মাটিতে খলিস্তানপন্থীদের তৎপরতা নিয়ে কথা হতে পারে। এছাড়া, ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালকে আমেরিকার আদালত দ্বারা সমন পাঠানোর বিষয়টি এবং বাংলাদেশে সাম্প্রতিক পরিস্থিতিও আলোচনার টেবিলে আসতে পারে। দুই দেশের নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের মধ্যে আলোচনায় ভারতের নিরাপত্তা পরিস্থিতি, দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার দিকে বিশেষ মনোযোগ দেওয়া হবে।
এছাড়া, ভারত সফরের সময় জ্যাক সালিভান দিল্লি আইআইটিতে (Delhi IIT) বিদেশনীতি সংক্রান্ত একটি আলোচনা সভাতেও অংশ নেবেন। এই আলোচনা সভায় দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এবং আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়গুলি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে। বিশেষ করে, ‘ইনিশিয়েটিভ অন ক্রিটিকাল অ্যান্ড এমার্জিং টেকনোলজি’ (আইসিইটি) নিয়ে আলোচনা গুরুত্ব পাবে, যা ভারত ও আমেরিকার মধ্যে প্রযুক্তির ক্ষেত্রে সহযোগিতার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে। ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের নিরাপত্তা পরিস্থিতি এবং পশ্চিম এশিয়ার যুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হতে পারে।
ছিলেন পোখরান পারমাণবিক পরীক্ষার পুরোধা! প্রয়াত পদ্মবিভূষণ বিজ্ঞানী রাজাগোপাল চিদাম্বরম
এই সফরটি আসছে এমন সময়ে, যখন ভারত ও আমেরিকার মধ্যে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সামরিক সম্পর্ক আরও দৃঢ় হওয়ার পথে। দুই দেশের মধ্যে সামরিক সহযোগিতা, বাণিজ্যিক সম্পর্ক এবং সাইবার নিরাপত্তা ক্ষেত্রে সম্প্রতি বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, জলবায়ু পরিবর্তন, আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এবং মহাকাশ গবেষণায়ও একে অপরকে সহযোগিতা করার বিষয়ে আগ্রহ বাড়ছে।
দিল্লি নির্বাচনে কেজরিওয়ালের বিরুদ্ধে লড়বেন বিজেপির পরবেশ বর্মা
এছাড়া, দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা পরিস্থিতি এবং বিশেষ করে পাকিস্তান ও চীনের প্রভাব, এই বিষয়গুলোও আলোচনায় গুরুত্ব পাবে। বিশেষত চীনের সাথে ভারতের সীমান্ত সংঘর্ষ এবং দক্ষিণ চীন সাগরের পরিস্থিতি নিয়ে ভারতের নিরাপত্তা নীতির সাথে আমেরিকার সহযোগিতা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। সুতরাং, এই সফর দুই দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি নতুন সূচনা হতে পারে, যেখানে ভারতের শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের সঙ্গে আমেরিকার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার আলাপচারিতায় বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কৌশলগত আলোচনা হতে পারে।