লখনউ, ১৮ অক্টোবর ২০২৫: উত্তরপ্রদেশ পুলিশের আরেকটি বড় অভিযান শিরোনামে উঠে এলো। শনিবার ভোররাতে শামলি জেলায় পুলিশের সঙ্গে এনকাউন্টারে কুখ্যাত অপরাধী নাফিস নিহত হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে মোট ৩৪টি অপরাধমূলক মামলা ছিল এবং তাঁর মাথার ওপর ঘোষিত ছিল ১ লক্ষ টাকার পুরস্কার।
কে এই নাফিস?
নাফিস দীর্ঘদিন ধরেই পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের অপরাধ জগতে পরিচিত নাম। পুলিশের রেকর্ড অনুযায়ী, তাঁর বিরুদ্ধে—
- খুন
- চাঁদাবাজি
- ডাকাতি
- অবৈধ অস্ত্র ব্যবসা
- গ্যাং অপারেশন
সহ একাধিক গুরুতর মামলা দায়ের ছিল।
স্থানীয় সূত্র জানাচ্ছে, তিনি একসময় ছোটখাটো অপরাধ দিয়ে শুরু করলেও ধীরে ধীরে বড়সড় অপরাধচক্রের অন্যতম মাথা হয়ে ওঠেন।
পুলিশের অভিযান
উত্তরপ্রদেশ পুলিশ জানিয়েছে, গোপন সূত্রে খবর পেয়ে শুক্রবার গভীর রাতে শামলির এক গ্রামে তল্লাশি চালানো হয়। এসময় নাফিস তাঁর সহযোগীদের নিয়ে পালানোর চেষ্টা করে এবং পুলিশের ওপর গুলি চালায়। পাল্টা গুলিতে গুরুতর জখম হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায় নাফিস।
পুলিশের দাবি, এই অভিযানে আইন অনুযায়ী সব ধাপ মেনে চলা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হয়েছে বেশ কিছু অস্ত্র ও গুলি।
যোগী সরকারের “জিরো টলারেন্স” নীতি
মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই অপরাধ দমনে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন। বিশেষ করে কুখ্যাত গ্যাংস্টারদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানোই হয়েছে অগ্রাধিকার।
সরকারি রেকর্ড বলছে, গত কয়েক বছরে শতাধিক কুখ্যাত অপরাধী পুলিশের এনকাউন্টারে ধরা পড়েছে বা নিহত হয়েছে। পুলিশের দাবি, এর ফলে অপরাধের গ্রাফ উল্লেখযোগ্যভাবে নেমে এসেছে।
রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া
শাসকদল বলছে, এই অভিযান প্রমাণ করছে যে আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে যোগী সরকার আপসহীন।
বিরোধীরা প্রশ্ন তুলছে, এনকাউন্টারকে সরকার অপরাধ দমনের একমাত্র হাতিয়ার বানাচ্ছে কি না। তাঁদের অভিযোগ, বিচারব্যবস্থার বাইরে গিয়ে এমন পদক্ষেপ গণতান্ত্রিক দৃষ্টিকোণ থেকে উদ্বেগজনক।
সাধারণ মানুষের প্রতিক্রিয়া
শামলির স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। তাঁদের মতে, নাফিস ও তাঁর গ্যাং এলাকার ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষকে দীর্ঘদিন ধরে আতঙ্কে রেখেছিল। পুলিশের পদক্ষেপে তাঁদের মনে নিরাপত্তার অনুভূতি তৈরি হয়েছে।
শামলিতে পুলিশের এনকাউন্টারে কুখ্যাত গ্যাংস্টার নাফিসের মৃত্যু উত্তরপ্রদেশ সরকারের “জিরো টলারেন্স” নীতিরই প্রতিফলন। তবে প্রশ্ন থাকছে—এনকাউন্টার নির্ভর কৌশল কতটা স্থায়ী সমাধান আনতে পারবে? আপাতত একটাই স্পষ্ট—অপরাধীদের জন্য উত্তরপ্রদেশ এখন আর নিরাপদ জায়গা নয়।