ATS অভিযানে দিল্লি-বারাণসী থেকে পাক চর গ্রেফতার

Pakistan spy in India: ভারতের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার বিরুদ্ধে চক্রান্তকারী দুই পাক চরকে গ্রেফতার করল উত্তরপ্রদেশের এন্টি টেররিজম স্কোয়াড (UP ATS)। একদিকে বারাণসী থেকে ধৃত তুফাইল…

Pakistan spy in India

Pakistan spy in India: ভারতের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার বিরুদ্ধে চক্রান্তকারী দুই পাক চরকে গ্রেফতার করল উত্তরপ্রদেশের এন্টি টেররিজম স্কোয়াড (UP ATS)। একদিকে বারাণসী থেকে ধৃত তুফাইল নামের এক ব্যক্তি পাকিস্তানের জন্য গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছে, অন্যদিকে দিল্লির সীলমপুর এলাকা থেকে মোহাম্মদ হারুন নামে আরও একজনকে পাক দূতাবাসের সঙ্গে আর্থিক প্রতারণা ও গোপন তথ্য পাচারের অভিযোগে আটক করা হয়েছে। দুটি ঘটনাই দেশজুড়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে।

বারাণসী থেকে ধৃত তুফাইল
UP ATS-এর তথ্য অনুযায়ী, বারাণসীর রাজঘাট এলাকার বাসিন্দা তুফাইল, পিতা মকসুদ আলম, দীর্ঘদিন ধরে পাকিস্তানের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রাখছিল। তদন্তে জানা গেছে, সে পাকিস্তানের নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন তেহরিক-ই-লাব্বাইক (Tehreek-e-Labbaik)-এর নেতা মৌলানা শাদ রিজভীর ভিডিও বিভিন্ন হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে শেয়ার করত। এই ভিডিওগুলোর মাধ্যমে ভারতে শরিয়তি আইন কার্যকর করার, বাবরি মসজিদের ‘বদলা’ নেওয়ার আহ্বান জানানো হত।

   

তুফাইল শুধু কট্টরপন্থী বার্তা নয়, বরং ভারতের গুরুত্বপূর্ণ স্থানের ছবি পাকিস্তানে পাঠিয়ে দিচ্ছিল। এদের মধ্যে ছিল রাজঘাট, নামো ঘাট, জ্ঞানভাপী মসজিদ, বারাণসী রেলস্টেশন ও লালকেল্লার মতো জায়গা। ATS-এর সন্দেহ, এই তথ্য পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থার হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছিল।
আরও উদ্বেগজনক বিষয় হল, তুফাইল পাকিস্তানের এক মহিলা, নাফিসা নামের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখত, যার স্বামী পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সদস্য। সে প্রায় ৬০০-এর বেশি পাকিস্তানি নাগরিকের সঙ্গে যুক্ত ছিল বলে জানা গেছে। এমনকি বারাণসীর মধ্যে পাকিস্তানি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপগুলোর লিংক ছড়িয়ে দিচ্ছিল যাতে আরও মানুষ সেই চক্রে জড়িয়ে পড়ে।

দিল্লিতে ধৃত হারুন
একইসঙ্গে, UP ATS দিল্লির সীলমপুর এলাকা থেকে মোহাম্মদ হারুন নামের এক স্ক্র্যাপ ব্যবসায়ীকেও গ্রেফতার করেছে। হারুন পাকিস্তান দূতাবাসের কর্মী মুজাম্মিল হুসেইনের সঙ্গে মিলে পাকিস্তানি ভিসা পাইয়ে দেওয়ার নামে লোকজনের থেকে টাকা তুলছিল। শুধু তাই নয়, ATS-এর দাবি, সে ভারতের বিভিন্ন সংবেদনশীল তথ্যও পাকিস্তানে পাচার করছিল।

এই তথ্যের ভিত্তিতে ভারত সরকার ইতিমধ্যেই মুজাম্মিল হুসেইনকে ‘persona non grata’ ঘোষণা করে দেশ ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে। মুজাম্মিল পাকিস্তান দূতাবাসের মাধ্যমে এই চরবৃত্তির নেটওয়ার্কে সহায়তা করছিল বলে ATS-এর সন্দেহ।

Advertisements

তদন্ত ও সতর্কতা
ATS-এর আধিকারিকরা জানিয়েছেন, দুই ধৃতের মোবাইল ও ডিজিটাল ডিভাইস পরীক্ষা করে বহু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হাতে এসেছে। এরফলে ভবিষ্যতে পাক চর চক্রের অন্য সদস্যদেরও চিহ্নিত করা সম্ভব হবে বলে আশা।

সরকারি মহল সূত্রে জানা গেছে, পাকিস্তানের তরফে ভারতে গুপ্তচরদের মাধ্যমে অস্থিরতা সৃষ্টির চেষ্টা দীর্ঘদিন ধরেই চলছে। তবে ATS, ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো ও অন্যান্য নিরাপত্তা সংস্থার তৎপরতায় একের পর এক ষড়যন্ত্র নস্যাৎ হচ্ছে।

বর্তমানে ধৃতদের বিরুদ্ধে ইউএপিএ (UAPA), অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। দুইজনকেই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।

এই ঘটনাগুলি ফের একবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল যে, দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা প্রশ্নে কড়া নজরদারি ও তৎপরতা কতটা জরুরি। বারাণসী থেকে দিল্লি—কোথাও নিরাপত্তা ফাঁকি দিলেই শত্রুপক্ষ সুযোগ নিতে পিছপা হয় না। ATS-এর এই অভিযান নিঃসন্দেহে এক বড় সাফল্য।