রাজস্থানের বিকানের জেলার মহাজন ফিল্ড ফায়ারিং রেঞ্জে ট্রেনিং চলাকালীন এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় (Bikaner explosion) দুই সেনার মৃত্যু হয়েছে এবং একজন গুরুতর আহত হয়েছেন। আজ (১৮ ডিসেম্বর) সকালে একটি ট্যাঙ্কে গোলাবারুদ লোড করার সময় এই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এটি এই সপ্তাহে রেঞ্জে দ্বিতীয় প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা।
ডিফেন্স মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল অমিতাভ শর্মা জানিয়েছেন, “ঘটনায় দুই সেনার মৃত্যু হয়েছে এবং একজন আহত হয়েছে। আহত সেনাকে হেলিকপ্টারের মাধ্যমে চণ্ডীগড়ের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।”
বিস্ফোরণের বিবরণ
সামরিক সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটে যখন তিনজন সেনা ট্যাঙ্ক নিয়ে প্রশিক্ষণ করছিলেন। মৃত দুই সেনা হলেন অশুতোষ মিশ্র এবং জিতেন্দ্র। আহত সেনার পরিচয় এখনও প্রকাশ করা হয়নি। সার্কেল অফিসার লুংকরনসার (বিকানের) নরেন্দ্র কুমার পুনিয়া জানিয়েছেন, “ট্যাঙ্কে প্রশিক্ষণের সময় বিস্ফোরণ ঘটে। এতে অশুতোষ মিশ্র এবং জিতেন্দ্র প্রাণ হারিয়েছেন। আহত সেনাকে দ্রুত চিকিৎসার জন্য হেলিকপ্টারে স্থানান্তর করা হয়েছে।”
শোকের ছায়া সেনাবাহিনীতে
মৃত সেনাদের মধ্যে অশুতোষ মিশ্র উত্তর প্রদেশের দেওরিয়া জেলার বাসিন্দা এবং জিতেন্দ্র রাজস্থানের দৌসার বাসিন্দা। তাঁদের দেহ বিকানের থেকে সরতগড় মিলিটারি স্টেশনে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় সেনাবাহিনীতে গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
এ সপ্তাহের দ্বিতীয় দুর্ঘটনা
উল্লেখ্য, এই সপ্তাহেই মহাজন ফায়ারিং রেঞ্জে আরেকটি মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটেছিল। রবিবার (১৭ ডিসেম্বর) গানার চন্দ্র প্রকাশ প্যাটেল একটি বন্দুক টোয়িং ভেহিকল দিয়ে গান হুক করার সময় দুর্ঘটনার শিকার হন। টোয়িং ভেহিকল হঠাৎ পিছলে যায় এবং প্যাটেল গুরুতর আহত হন। পরবর্তীতে তিনি প্রাণ হারান।
প্রতিক্রিয়া ও তদন্তের নির্দেশ
সেনাবাহিনী এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনার বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। ঘটনার সঠিক কারণ খুঁজে বের করার জন্য একটি উচ্চপর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিস্ফোরণের ফলে কীভাবে এমন প্রাণহানি ঘটল, তা খতিয়ে দেখা হবে। স্থানীয় পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং সেনাবাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় রেখে তদন্ত শুরু করেছে।
সেনা পরিবারের শোক
মৃতদের পরিবার এই দুঃসংবাদে শোকস্তব্ধ। অশুতোষ মিশ্র এবং জিতেন্দ্র তাঁদের পরিবারের একমাত্র রোজগেরে ছিলেন। তাঁদের অকাল মৃত্যুতে পরিবারগুলির উপর নেমে এসেছে গভীর সংকট।
রাজস্থানের মহাজন ফিল্ড ফায়ারিং রেঞ্জে এমন একের পর এক দুর্ঘটনা দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং সামরিক প্রশিক্ষণ নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। সেনাবাহিনীর তরফে ইতিমধ্যে নিরাপত্তার মানোন্নয়নের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। তবে, এই ধরনের ঘটনা এড়াতে প্রশিক্ষণের সময় আরও সতর্কতা এবং আধুনিক প্রযুক্তির প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হচ্ছে।