বিপুল আগ্নেয়াস্ত্র-সহ যৌথ বাহিনীর জালে দুই জঙ্গি, সংঘর্ষ এড়িয়ে আত্মসমর্পণ

Kashmir terror crackdown: জম্মু ও কাশ্মীরের শোপিয়ান জেলার বাসকুচান এলাকায় যৌথ বাহিনীর এক কৌশলগত অভিযান সফলভাবে দুই লস্কর-ই-তইয়্যবা (LeT) সন্ত্রাসবাদীর আত্মসমর্পণে পরিণত হয়েছে। বিপুল পরিমাণ…

Liquor Ban in Jammu and Kashmir? PDP, NC's Demand Ignites Controversy

Kashmir terror crackdown: জম্মু ও কাশ্মীরের শোপিয়ান জেলার বাসকুচান এলাকায় যৌথ বাহিনীর এক কৌশলগত অভিযান সফলভাবে দুই লস্কর-ই-তইয়্যবা (LeT) সন্ত্রাসবাদীর আত্মসমর্পণে পরিণত হয়েছে। বিপুল পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্র ও বিস্ফোরক-সহ ধৃত দুই যুবক দীর্ঘদিন ধরেই “হাইব্রিড জঙ্গি” হিসেবে সক্রিয় ছিল বলে সূত্রের খবর।

বিশেষ সূত্রে পাওয়া গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে, শোপিয়ানের স্পেশাল অপারেশন গ্রুপ (SOG) বৃহস্পতিবার সকালে ৪৪ রাষ্ট্রীয় রাইফেলস (RR) ও ১৭৮ ব্যাটালিয়ন কেন্দ্রীয় রিজার্ভ পুলিশ বাহিনী (CRPF)-এর সঙ্গে মিলিতভাবে একটি কর্ডন অ্যান্ড সার্চ অপারেশন (CASO) শুরু করে। বাসকুচান এলাকার একটি বাগানে সন্দেহজনক গতিবিধি লক্ষ্য করার পর, বাহিনী দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে পুরো এলাকাকে ঘিরে ফেলে।

   

এরপর, বাহিনীর কৌশলগত মনোভাব ও তৎপরতার ফলেই কোনো সংঘর্ষ না ঘটিয়ে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয় দুই যুবক—ইরফান বশির ও উজাইর সালাম। দুইজনেই লস্কর-ই-তইয়্যবার “হাইব্রিড জঙ্গি” হিসেবে পরিচিত, যারা সাধারণ নাগরিকদের মতো জীবনযাপন করলেও গোপনে জঙ্গি কার্যকলাপে যুক্ত ছিল।

পুলিশ জানিয়েছে, এই অভিযানে যে পরিমাণ অস্ত্র ও অন্যান্য সামগ্রী উদ্ধার হয়েছে, তা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। উদ্ধার হওয়া সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে:

  • ০২টি একে-৫৬ রাইফেল
  • ০৪টি ম্যাগাজিন
  • ১০২ রাউন্ড ৭.৬২×৩৯ মিমি গুলি
  • ০২টি হাতবোমা
  • ০২টি পাউচ
  • নগদ ₹৫৪০০
  • ০১টি মোবাইল ফোন
  • ০১টি স্মার্টওয়াচ
  • ০২টি বিস্কুটের প্যাকেট
  • ০১টি আধার কার্ড

প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, এই দুই হাইব্রিড জঙ্গি নাশকতা চালানোর উদ্দেশ্যে এলাকায় ঢুকেছিল এবং তাদের লক্ষ্য ছিল নিরাপত্তা বাহিনী কিংবা বেসামরিক নাগরিকদের উপর হামলা চালানো। তবে বাহিনীর দ্রুত পদক্ষেপ সেই পরিকল্পনাকে ব্যর্থ করে দেয়।

ঘটনার পর ইতিমধ্যেই সংশ্লিষ্ট ধারায় একটি এফআইআর নথিভুক্ত করা হয়েছে এবং তদন্ত প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। দুই অভিযুক্তকে জিজ্ঞাসাবাদ করে আরও বড় কোনও ষড়যন্ত্র বা সংগঠনের যোগসূত্র উদঘাটনের চেষ্টা চলছে।

Advertisements

কাশ্মীর পুলিশ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, “এই ধরণের হাইব্রিড জঙ্গিদের চিহ্নিত করা ও সময়মতো প্রতিরোধ করাই বর্তমানে বাহিনীর অন্যতম অগ্রাধিকার। সাধারণ নাগরিকের ছদ্মবেশে এরা সমাজে ঘুরে বেড়ালেও মূলত তারা সক্রিয় জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত।”

বিশেষজ্ঞদের মতে, সংঘর্ষ ছাড়াই এই আত্মসমর্পণ ভবিষ্যতের জন্য একটি ইতিবাচক দৃষ্টান্ত। কারণ এতে একদিকে যেমন প্রাণহানির সম্ভাবনা এড়ানো যায়, তেমনি অপরাধীদের থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যও পাওয়া যায় যা ভবিষ্যতের নিরাপত্তা কৌশলে সহায়ক হবে।

এই ঘটনার পর গোটা বাসকুচান এলাকায় নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হয়েছে এবং সাধারণ মানুষকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। পুলিশ জনগণকে অনুরোধ করেছে, কোনও সন্দেহজনক ব্যক্তিকে বা কার্যকলাপকে লক্ষ্য করলে দ্রুত স্থানীয় থানায় বা নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করতে।

এই সফল অভিযানের জন্য সংশ্লিষ্ট নিরাপত্তা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলিকে সাধুবাদ জানানো হয়েছে। তদন্তের অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে আরও তথ্য সামনে আসবে বলে মনে করা হচ্ছে।