মণিপুরের (Manipur) ইমফাল এলাকায় এই সপ্তাহের শুরুতে ঘটে যাওয়া এক জঙ্গি হামলায় দুইজন অসম রাইফলসের সেনা নিহত হয়েছেন এবং আরও পাঁচজন আহত হয়েছেন। শনিবার পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত সন্দেহে দুইজনকে আটক করা হয়েছে। পাশাপাশি, হামলায় ব্যবহৃত বলে সন্দেহ করা একটি ভ্যানও উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধারকৃত ভ্যানটি ঘটনার স্থান থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার দূরে মুটুম ইয়াংবি থেকে পাওয়া গেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, উদ্ধারকৃত গাড়িটির একাধিক মালিক রয়েছে, যাদের সবাইকে চিহ্নিত করা হয়েছে। এই ঘটনার পর গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে আইন-শৃঙ্খলার পরিস্থিতি কিছুটা উত্তেজনাপূর্ণ থাকলেও নিয়ন্ত্রণে রাখা হয়েছে। রাজ্য প্রশাসন এবং নিরাপত্তা বাহিনী শান্তিপুর ও ইশোক এলাকায় ব্যাপক অভিযান পরিচালনা করেছে।
নিহত দুই সেনার নাম পরিচয় জানা গিয়েছে। তাঁরা হলেন নাইব স্যাবেদার শ্যাম গুরুং এবং রাইফেলম্যান রঞ্জিত সিং কাশ্যপ। পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, কনভয়টি আক্রমণের সময় সড়কে একটি জঙ্গি দলের হাতে ফাঁদে পড়েছিল। হামলায় ব্যবহৃত স্থানটি প্রাথমিকভাবে নির্দিষ্ট করা হয়েছে নম্বল সাবাল লেকাই এলাকায়। পুলিশ এবং নিরাপত্তা বাহিনী তৎক্ষণাৎ প্রতিক্রিয়া দেখায়, তবে দুঃখজনকভাবে দুইজন সেনা শহিদ হন এবং পাঁচজন আহত হন।
আহতদের দ্রুত চিকিৎসার জন্য রিজিওনাল ইনস্টিটিউট অফ মেডিকেল সায়েন্সেস (RIMS), ইমফালে পাঠানো হয়েছে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, আহতদের অবস্থা স্থিতিশীল হলেও সকলের সঠিক চিকিৎসা চলছে।
হামলায় ব্যবহৃত ভ্যানটি উদ্ধার করার পর পুলিশ জানিয়েছে, গাড়িটির মালিকরা বিভিন্ন ব্যক্তি এবং সবাইকে শনাক্ত করা হয়েছে। এই অভিযান মণিপুরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী করার লক্ষ্যে নেওয়া হয়েছে। শীর্ষ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ভ্যান উদ্ধার এবং অভিযানের মাধ্যমে হামলার পেছনের আসল উদ্দেশ্য এবং দায়ীদের শনাক্ত করা সহজ হবে।
ঘটনার পরদিন, রাজ্যপাল অজয় কুমার ভল্লার নেতৃত্বে একটি উচ্চস্তরের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে রাজ্যের সংবেদনশীল ও ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা শক্তিশালী করার বিষয়ে আলোচনা করা হয়। বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন রাজ্যের শীর্ষ কর্মকর্তারা এবং সিনিয়র পুলিশ অফিসাররা। বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, সন্ত্রাসী হামলার পুনরাবৃত্তি রোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
এই হামলা শুধু সেনাদের উপরই নয়, পুরো মণিপুর রাজ্যের নিরাপত্তা পরিবেশে প্রভাব ফেলেছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সম্প্রতি মণিপুর সফরের সময় যে সড়কটি তিনি ব্যবহার করেছিলেন, সেই একই সড়কেই হামলা ঘটায় নিরাপত্তা প্রশ্ন তুলেছে। স্থানীয় জনগণও আতঙ্কিত হয়েছে। পুলিশ এবং নিরাপত্তা বাহিনী নিরাপত্তা জোরদার করার জন্য এলাকা জুড়ে উপস্থিতি বাড়িয়েছে।