রবিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (trump) ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সাম্প্রতিক সংঘর্ষের অবসানকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এই শান্তি চুক্তি না হলে দুই দেশের মধ্যে সম্ভাব্য পারমাণবিক সংঘাতে লক্ষ লক্ষ মানুষের প্রাণহানি হতে পারত। ট্রাম্প (trump)তার সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশ্যালে এক পোস্টে বলেন, “ভারত ও পাকিস্তানের শক্তিশালী ও অটল নেতৃত্বের জন্য আমি গর্বিত।
তাদের জ্ঞান, সাহস এবং দৃঢ়তার কারণে তারা বুঝতে পেরেছেন যে এই সংঘাত বন্ধ করার সময় এসেছে, যা লক্ষ লক্ষ নিরীহ মানুষের মৃত্যু ও ধ্বংসের কারণ হতে পারত। আপনাদের এই সাহসী পদক্ষেপ আপনাদের ঐতিহাসিক উত্তরাধিকারকে আরও সমৃদ্ধ করেছে।”
ট্রাম্প দাবি করেছেন (trump)
ট্রাম্প (trump) দাবি করেছেন যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই শান্তি চুক্তির মধ্যস্থতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে এবং তিনি কাশ্মীর ইস্যুতে সমাধানের জন্য মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, “মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই ঐতিহাসিক ও বীরত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তে পৌঁছাত ৭০০ শব্দে বাংলায় সংবাদ বিষয়বস্তু লিখুন। আমি গর্বিত যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আপনাদের এই সিদ্ধান্তে সহায়তা করতে পেরেছে। এছাড়াও, আমি দুই মহান দেশের সঙ্গে বাণিজ্য উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করব।
এর পাশাপাশি, আমি আপনাদের সঙ্গে মিলে কাজ করব (trump), যাতে হাজার বছর ধরে চলা কাশ্মীর সমস্যার একটি সমাধান খুঁজে বের করা যায়। ভারত ও পাকিস্তানের নেতৃত্বকে এই কাজের জন্য আশীর্বাদ করছি।” তবে, ভারত বারবার জম্মু ও কাশ্মীর ইস্যুতে তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ প্রত্যাখ্যান করেছে এবং স্পষ্টভাবে জানিয়েছে যে এই অঞ্চল ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ।
শনিবার ভারত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের (trump) ভূমিকাকে কম গুরুত্ব দিয়ে বলেছে যে এই শান্তি চুক্তি দুই দেশের সামরিক অপারেশনের মহাপরিচালকদের (ডিজিএমও) মধ্যে সরাসরি আলোচনার মাধ্যমে সম্পন্ন হয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেছেন
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেছেন, “ভারত সবসময় সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে দৃঢ় ও অবিচল অবস্থান বজায় রেখেছে। ভারত ও পাকিস্তান আজ গোলাগুলি ও সামরিক পদক্ষেপ বন্ধ করার বিষয়ে একটি সমঝোতায় পৌঁছেছে। ভারত সন্ত্রাসবাদের সব রূপ ও প্রকাশের বিরুদ্ধে তার দৃঢ় অবস্থান অব্যাহত রাখবে।”
East Bengal: চার্চিলের এই ডিফেন্ডারকে নিয়ে আগ্ৰহী লাল-হলুদ ?
জয়রামের কটাক্ষ
ট্রাম্পের (trump) এই বক্তব্য এবং এর আগে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর বিবৃতি ইতিমধ্যে বিরোধী দল কংগ্রেসের সমালোচনার মুখে পড়েছে। কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ বলেছেন, “মার্কো রুবিওর ‘নিরপেক্ষ স্থানে’ ভারত-পাকিস্তান সংলাপের উল্লেখ অনেক প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
আমরা কি শিমলা চুক্তি ত্যাগ করেছি? আমরা কি তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতার দরজা খুলে দিয়েছি? ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস জানতে চায়, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কূটনৈতিক চ্যানেল কি পুনরায় খোলা হচ্ছে? আমরা কী কী প্রতিশ্রুতি চেয়েছি এবং পেয়েছি?”
কংগ্রেস আরও দাবি করেছে যে অপারেশন সিঁদুরের পর, যেখানে ভারত পাকিস্তানে নয়টি জঙ্গি ঘাঁটি ধ্বংস করেছে, এই বিষয়ে একটি সর্বদলীয় বৈঠক ডাকা উচিত। অপারেশন সিঁদুর ছিল পাকিস্তানের পহেলগাঁওয়ে ২৬ জনের মৃত্যুর পর ভারতের প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ, যার মধ্যে বেশিরভাগই ছিলেন হিন্দু পর্যটক। এই হামলার জন্য ভারত পাকিস্তানকে দায়ী করেছে এবং তার প্রতিক্রিয়ায় ভারতীয় বিমান বাহিনী পাকিস্তান ও পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীরে জঙ্গি ঘাঁটিগুলো ধ্বংস করেছে।
শেহবাজ শরিফ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকার প্রশংসা
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকার প্রশংসা করেছেন এবং শান্তি প্রতিষ্ঠায় ট্রাম্পের (trump) নেতৃত্বের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। তবে, ভারতের সরকারী বিবৃতিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কোনো ভূমিকার উল্লেখ নেই। ভারতের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “ভারত ও পাকিস্তান সরাসরি দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে এই চুক্তিতে পৌঁছেছে।”
এই শান্তি চুক্তি চার দিনের তীব্র সংঘর্ষের পর স্থাপিত হয়েছে, যেখানে দুই পক্ষই একে অপরের সামরিক ও বেসামরিক স্থাপনায় ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে। তবে, চুক্তি কার্যকর হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই উভয় পক্ষ একে অপরের বিরুদ্ধে চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছে। ভারতীয়-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের শ্রীনগর ও জম্মুতে বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গেছে, এবং পাকিস্তান অভিযোগ করেছে যে ভারত তাদের আকাশসীমায় ড্রোন পাঠিয়েছে।
কাশ্মীরের দীর্ঘদিনের বিরোধের প্রেক্ষাপট
এই ঘটনাগুলো কাশ্মীরের দীর্ঘদিনের বিরোধের প্রেক্ষাপটে ঘটেছে, যা ১৯৪৭ সালে ভারত ও পাকিস্তানের স্বাধীনতার পর থেকে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনার প্রধান কারণ। শিমলা চুক্তি (১৯৭২) অনুসারে, ভারত ও পাকিস্তান দ্বিপাক্ষিকভাবে এই বিরোধ সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, এবং ভারত সবসময় তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপের বিরোধিতা করে আসছে। কংগ্রেসের সমালোচনা এই শিমলা চুক্তির সম্ভাব্য লঙ্ঘনের উপর আলোকপাত করেছে, যা ভারতের কূটনৈতিক নীতির একটি মূল ভিত্তি।
এই শান্তি চুক্তি সত্ত্বেও, কাশ্মীরে শান্তি কতটা টেকসই হবে তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে এই অঞ্চল নিয়ে বিরোধ দশকের পর দশক ধরে চলছে, এবং সাম্প্রতিক সংঘর্ষ এই সমস্যার জটিলতাকে আরও স্পষ্ট করেছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, জাতিসংঘ সহ, এই চুক্তিকে শান্তির দিকে একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে স্বাগত জানিয়েছে, তবে স্থায়ী সমাধানের জন্য আরও কূটনৈতিক প্রচেষ্টার প্রয়োজন।