ভারতের উপর ৫০% শুল্ক চাপিয়ে এবার ‘সেকেন্ডারি স্যাংশন’-এর হুঁশিয়ারি ট্রাম্পের

ভারতের উপর আমদানি শুল্ক দ্বিগুণ করার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই আরও এক ধাক্কা। এবার রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেল কেনার প্রশ্নে ভারতকে ‘সেকেন্ডারি স্যাংশন’-এর কঠোর হুঁশিয়ারি দিলেন…

John Bolton criticism India-US relations

ভারতের উপর আমদানি শুল্ক দ্বিগুণ করার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই আরও এক ধাক্কা। এবার রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেল কেনার প্রশ্নে ভারতকে ‘সেকেন্ডারি স্যাংশন’-এর কঠোর হুঁশিয়ারি দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (Trump threatens secondary sanctions)। স্পষ্ট করে জানিয়ে দিলেন, ভারতের অবস্থান নিয়ে ওয়াশিংটন সন্তুষ্ট নয় এবং প্রয়োজনে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

ওভাল অফিসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে ট্রাম্প বলেন, “এখন তো মাত্র আট ঘণ্টা হয়েছে। দেখা যাক এরপর কী হয়। অনেক কিছু বাকি আছে। এত সেকেন্ডারি স্যাংশন আসবে, গুনে শেষ করতে পারবেন না।”

   

এই মন্তব্য নিছক কূটনৈতিক ভাষ্য নয়, বরং স্পষ্টভাবে ইঙ্গিত দেয়, মার্কিন নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক চাপের সামনে ভারত যদি রাশিয়ার সঙ্গে তার শক্তিশালী জ্বালানি সম্পর্ক বজায় রাখে, তাহলে পরিণতি আরও কঠিন হতে পারে।

চিনকেও ছুঁয়ে গেল প্রশ্ন, কিন্তু মোদীর ভারতকেই কেন নিশানা?

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে প্রশ্ন করা হয়, চিনও তো রাশিয়ান তেল কিনছে, তাহলে শুধু ভারতকেই কেন নিশানা করা হচ্ছে? উত্তরে ট্রাম্প তাঁর চিরাচরিত ঘনঘন ব্যাখ্যা না দিয়ে কেবল বলেন, “আরও অনেক কিছু আসছে।”

এই সংক্ষিপ্ত বাক্যেই লুকিয়ে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য রাজনীতির জটিল বাস্তবতা। চিনকে সরাসরি আক্রমণ না করে ট্রাম্প প্রশাসন যে ভারতকেই প্রাথমিক চাপের ক্ষেত্র হিসাবে বেছে নিয়েছে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

Advertisements

শান্তিচুক্তি হলে কি মাফ হবে বাড়তি শুল্ক?

এই উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠছে, যদি রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে কোনও সম্ভাব্য শান্তিচুক্তি হয়, তবে কি ভারতের উপর থেকে বাড়তি শুল্কের বোঝা সরানো হবে?

উত্তরে ট্রাম্প জানান, “সেটা আমরা পরে বিবেচনা করব।” এই ‘পরে’-র ভাষ্য থেকেই স্পষ্ট, আপাতত ভারতকে আরও সময় দিতে রাজি নয় আমেরিকা।

 জোড়া চাপের মুখে দিল্লি

ট্রাম্প প্রশাসনের এই অবস্থান কেবল অর্থনৈতিক নয়, কূটনৈতিক দিক থেকেও ভারতের সামনে এক জটিল চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে। একদিকে রাশিয়ার সঙ্গে জ্বালানি নির্ভরতা, অন্যদিকে আমেরিকার সঙ্গে কৌশলগত অংশীদারিত্ব, এই দ্বৈত ভারসাম্য রক্ষা করাই এখন দিল্লির বড় পরীক্ষার মঞ্চ।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধরণের শুল্কবৃদ্ধি ও হুঁশিয়ারি ভারতের ‘স্ট্র্যাটেজিক অটোনমি’-কে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলতে পারে। ট্রাম্প যেভাবে একতরফাভাবে চাপ তৈরি করছেন, তা শুধু বাণিজ্যের পরিসরে নয়, আন্তর্জাতিক শক্তি সমীকরণেও ভারতের ভূমিকার উপর প্রভাব ফেলতে চলেছে।