বাইডেনের সিদ্ধান্তে ‘তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের’ আশঙ্কা, ক্ষুব্ধ ট্রাম্পপুত্র

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন (Joe Biden) সম্প্রতি এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, যা রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যকার চলমান যুদ্ধের নতুন মাত্রা যোগ করেছে। বাইডেন (Joe…

18 thousand indians identified as illegal migrants in us

short-samachar

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন (Joe Biden) সম্প্রতি এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, যা রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যকার চলমান যুদ্ধের নতুন মাত্রা যোগ করেছে। বাইডেন (Joe Biden) প্রশাসন ইউক্রেনকে আমেরিকার সরবরাহ করা দীর্ঘ পাল্লার অস্ত্র (Joe Biden) ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে, যা রাশিয়ার অভ্যন্তরীণ সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম। ইউক্রেনের(Joe Biden) পক্ষ থেকে জানা গেছে, এই অস্ত্রগুলি ব্যবহার করে শিগগিরই একটি বড় সামরিক অভিযান চালানোর পরিকল্পনা রয়েছে।

   

এই সিদ্ধান্ত ঘিরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং আন্তর্জাতিক মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বড় ছেলে ডোনাল্ড ট্রাম্প জুনিয়র এই সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করেছেন। তিনি দাবি করেছেন, বাইডেন(Joe Biden)প্রশাসন এই পদক্ষেপের মাধ্যমে বিশ্বযুদ্ধের পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে এবং এটি মূলত ট্রাম্পের আগামী প্রেসিডেন্ট পদের স্থিতিশীলতা নষ্ট করার ষড়যন্ত্র।

জো বাইডেন(Joe Biden) ইউক্রেনকে মার্কিন-প্রস্তুত আর্মি ট্যাকটিকাল মিসাইল সিস্টেমস (ATACMS) ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছেন। এই মিসাইলগুলোর পাল্লা প্রায় ১৯০ মাইল এবং এগুলো বড় ধরনের বিস্ফোরণ ঘটানোর ক্ষমতা রাখে। অনুমান করা হচ্ছে, ইউক্রেন এই অস্ত্রগুলির (Joe Biden)সাহায্যে রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চলে হামলা চালাতে পারে।

গত তিন বছরে রাশিয়ার আক্রমণের ফলে ইউক্রেনে বহু নাগরিক হতাহত হয়েছেন। ইউক্রেন দীর্ঘদিন ধরে এই অস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি চেয়ে আসছিল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্ত ইউক্রেনের সামরিক প্রস্তুতির জন্য একটি বড় ধরনের সমর্থন হিসেবে কাজ করবে।

ডোনাল্ড ট্রাম্প জুনিয়র এই সিদ্ধান্তকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেছেন। তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে বলেন, “মিলিটারি ইন্ডাস্ট্রিয়াল কমপ্লেক্স (সেনা-শিল্প কমপ্লেক্স) যেন বিশ্বযুদ্ধ শুরু করতে চায়, যাতে আমার বাবা শান্তি প্রতিষ্ঠার সুযোগ না পান। এই বিলিয়ন ডলারের খেলা থামাতে হবে।”

ট্রাম্প জুনিয়র আরও অভিযোগ করেন যে, বাইডেন প্রশাসন ইচ্ছাকৃতভাবে যুদ্ধকে বাড়িয়ে তুলছে, যাতে তাঁর বাবা ক্ষমতা গ্রহণের পর একটি স্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করতে না পারেন। তিনি দাবি করেন, এটি একটি ষড়যন্ত্র, যা মূলত আমেরিকার অস্ত্র ব্যবসাকে সচল রাখতে এবং যুদ্ধের মাধ্যমে অর্থ উপার্জনের উদ্দেশ্যে করা হয়েছে।

ডোনাল্ড ট্রাম্প, যিনি সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান ঘটানোর অঙ্গীকার করেছেন। তিনি ঘোষণা করেছেন, তাঁর প্রশাসন উভয় পক্ষের মধ্যে আলোচনা শুরু করবে এবং যুদ্ধ থামানোর জন্য কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালাবে। ট্রাম্প বলেন, “আমরা রাশিয়া এবং ইউক্রেন নিয়ে কঠোর পরিশ্রম করব। এটি থামতেই হবে। এ যুদ্ধের কারণে অনেক নিরীহ মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে।”

ট্রাম্পের কমিউনিকেশন ডিরেক্টর স্টিভেন চুং জানিয়েছেন, ট্রাম্পই একমাত্র নেতা, যিনি এই যুদ্ধ থামানোর জন্য উভয় পক্ষকে একত্রিত করতে সক্ষম। তবে তিনি এখনও নির্দিষ্ট কোনো কৌশল বা পরিকল্পনা প্রকাশ করেননি।ট্রাম্প জুনিয়রের মন্তব্য এবং বাইডেন প্রশাসনের সিদ্ধান্ত মার্কিন রাজনীতিতে বড় ধরনের প্রভাব ফেলেছে। ট্রাম্প জুনিয়রের দাবি অনুযায়ী, বর্তমান প্রশাসনের এই পদক্ষেপ নতুন প্রেসিডেন্টের জন্য চ্যালেঞ্জ তৈরি করবে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বাইডেনের এই সিদ্ধান্ত শুধুমাত্র ইউক্রেনের জন্য একটি সামরিক সমর্থন নয়, বরং ট্রাম্পের আসন্ন প্রেসিডেন্ট পদের জন্য একটি পরীক্ষা।

ইতিমধ্যেই, ট্রাম্প জুনিয়র তাঁর পিতার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। তিনি ট্রাম্পের দলীয় কৌশল এবং মন্ত্রিসভার গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগের বিষয়ে উল্লেখযোগ্য প্রভাব রাখেন।

জো বাইডেনের ইউক্রেনকে অস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত এবং ট্রাম্প পরিবারের প্রতিক্রিয়া যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে উত্তেজনার নতুন মাত্রা যোগ করেছে। ইউক্রেন এই অস্ত্রগুলোর মাধ্যমে রাশিয়ার বিরুদ্ধে তাদের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে চাইছে। তবে ট্রাম্প এবং তাঁর সমর্থকরা এই সিদ্ধান্তকে ভবিষ্যৎ বিশ্ব শান্তির জন্য হুমকি হিসেবে দেখছেন।

পরবর্তী কয়েক মাসে এই পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেবে, তা দেখার অপেক্ষায় রয়েছে আন্তর্জাতিক মহল। ট্রাম্প যদি শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করতে পারেন, তবে এটি তাঁর রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্জন হিসেবে বিবেচিত হবে। অন্যদিকে, বাইডেন প্রশাসনের এই পদক্ষেপ যুদ্ধের ফলাফল কীভাবে প্রভাবিত করবে, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।