দুষ্কতি তাণ্ডবে বিধানসভার অধ্যক্ষ গেলেন থানায়, মুখ্যমন্ত্রীর মুখ চুন! বাম আমলে এমন হয়নি

রাজ্যে বেনজির ঘটনা। স্বয়ং বিধানসভা অধ্যক্ষক দুষ্কৃতিদের তাণ্ডবে ভয় পেয়ে থানা ঢুকে ওসির কাছে চলে গেলেন। এমন ঘটনা বিগত বাম আমল তার আগে রক্রাক্ত নকশাল…

Tripura Law Order

রাজ্যে বেনজির ঘটনা। স্বয়ং বিধানসভা অধ্যক্ষক দুষ্কৃতিদের তাণ্ডবে ভয় পেয়ে থানা ঢুকে ওসির কাছে চলে গেলেন। এমন ঘটনা বিগত বাম আমল তার আগে রক্রাক্ত নকশাল আন্দোলন ও তৎকালীন কংগ্রেস জমানাতেও হয়নি বলেই জানা যাচ্ছে। খোদ বি়ধানসভা অধ্যক্ষের এমন ভূমিকায় রাজ্য সরকার তীব্র অস্বস্তুিতে। আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে ভালো বলা মুখ্যমন্ত্রীর মুখ চুন বলছে বিরোধীরা (Tripura Law Order)।

মুখ্যমন্ত্রী আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির সার্বিক উন্নতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন। পুলিশকে ফ্রি হ্যান্ড দেওয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছিলেন। অথচ রাজ্য বিধানসভার অধ্যক্ষ আইন শৃঙ্খলার অবনতি হচ্ছে দাবিতে থানায় গেলেন।

   

এমনই পরিস্থিতি বিজেপি শাসিত ত্রিপুরা। প্রধান বিরোধী দল সিপিআইএম নেতাদের কটাক্ষ, সরকারের মুখ পুড়িয়েছেন খোদ বিধানসভা অধ্যক্ষ! উল্লেখ্য রাজ্যে ২০১৮ সালে টানা পঁচিশ বছরের বাম শাসন শেষ হয়ে বিজেপি সরকার চলছে।

রাম রাজ্যে লঙ্কাকাণ্ড পরিস্থিতি!

ত্রিপুরা বিধানসভার অধ্যক্ষ বিশ্ববন্ধু সেন রাজ্যের অন্যতম জনপদ ধর্মনগরের আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে থানার ওসির দ্বারস্থ হন। কোনোরকম রাখঢাক না রেখেই ধর্মনগরের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি যে ভালো নয় তা জানান ওসিকে। যেভাবে অধ্যক্ষ সরাসরি থানায় গিয়ে হাজির হয়েছেন, তা নিয়ে শাসকদলের মধ্যে তীব্র অস্বস্তুি। মুখ্যমন্ত্রী ডা. মানিক সাহা আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় কোনও ভূমিকা নিতে পারছেন না বলে অভিযোগ বিরোধী দলনেতা জীতেন্দ্র চৌধুরীর। তিনি সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক।

আইনশৃঙ্খলা রসাতলে অভিযোগ নিয়ে অধ্যক্ষের থানায় যাওয়া নিয়ে রাজ্য সরগরম। আগরতলার বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে তীব্র সমালোচিত বিজেপি সরকার। প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, ওসিকে উদ্দেশ্য করে অধ্যক্ষকে বলতে শোনা যাচ্ছে ধর্মনগরের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি খুব সিরিয়াস। পরিস্থিতি শাসকদলের পক্ষে নেগেটিভ। আগের ওসিকেও তিনি এ সম্পর্কে ওয়াকিবহাল করিয়েছিলেন কিন্তু ওসি সেভাবে পরিস্থিতি সামাল দিতে পারেননি। অভিযোগ, ওসিকে কেমন এফআইআর নিতে হবে তাও তিনি বলে দিচ্ছেন।

ক্ষমতায় বিজেপি Tripura Law Order

ত্রিপুরায় গত বিধানসভা নির্বাচনে (২০২৩) বিজেপি জোট পরপর দুবার সরকার ধরে রেখেছে। ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা যায় ৬০ আসনের বিধানসভায় এক ডজনের বেশি আসনে উপজাতি দল তিপ্রা মথা ভোট কেটে নেওয়ায় অল্প ব্যবধানে বিজেপিকে জয়ী হয় ও সিপিআইএম পরাজিত হয়। পরে মথা পার্টি প্রধান বিরোধী দল হলেও পরে তারা সরকারে সামিল হয়েছে। আর কংগ্রেস সমর্থনে বাম শিবির ( বিজেপির কটাক্ষ বামগ্রেস) প্রধান বিরোধী দল।

Advertisements

সম্প্রতি তিপ্রা মথা পার্টির হামলায় বিজেপি প্রবল আতঙ্কিত। খোয়াই জেলার আশারামবাড়িতে মোদীর মন কি বাত অনুষ্ঠানে মথা সমর্থকদের মারে একাধিক বিজেপি নেতা জখম হন। বহু নেতা পলাতক।

রাজ্য জুড়ে বিজেপি ছেড়ে সিপিআইএমে যোগদান চলছে। পার্বত্য এলাকায় তিপ্রা মথার দাপটে বিজেপি বিলীন। তবে আড়াই দশক ক্ষমতার অভিজ্ঞতায় সিপিআইএম নতুন করে সাংগঠনিক কার্যক্রম ছড়িয়েছে।

প্রায় প্রতিদিনই শাসক দল বিজেপির বিভিন্ন উপগোষ্ঠীর মধ্যে সংঘাত লেগেই আছে। এর ফলে ধর্মনগর থানায় প্রায় প্রতিদিনই অভিযোগ লেগেই রয়েছে। ধর্মের বিজেপির একাধিক গোষ্ঠী। তারা পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে, এক গোষ্ঠীর হয়ে বিধানসভার অধ্যক্ষ থানায় ঢুকে পুলিশের কার্যকলাপে হস্তক্ষেপ করেছেন। আগরতলার রাজনীতি সরগরম।

ক্ষমতায় আসার আগে নেশা মুক্ত ত্রিপুরা গঠনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল বিজেপি। জাতীয় অপরাধ পরিসংখ্যানে স্পষ্ট রাম শাসনে ত্রিপুরায় মাদক পাচারকারীদের রাম রাজত্ব!