Tribunals Reforms Act Struck Down
বিচারব্যবস্থার স্বাধীনতা ও ক্ষমতার পৃথকীকরণের মৌলিক নীতি লঙ্ঘন করে সংসদে পাস হওয়া ট্রাইবুনাল রিফর্মস অ্যাক্ট, ২০২১–কে বুধবার সরাসরি বাতিল করল সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই গবাই এবং বিচারপতি কে বিনোদ চন্দ্রনের বেঞ্চ মন্তব্য করে, “যে ধারাগুলি এই আদালত অতীতে বাতিল করেছে, সরকার সেগুলিকেই সামান্য বদলে আবার ফিরিয়ে এনেছে। এটি অসাংবিধানিক এবং বিচার বিভাগীয় স্বাধীনতার পরিপন্থী।”
কেন্দ্রের প্রতি আদালতের তীব্র অসন্তোষ
বেঞ্চ জানায়, ট্রাইবুনাল নিয়োগ-সংক্রান্ত বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট পূর্ববর্তী রায়ে যে নির্দেশাবলি দিয়েছিল, কেন্দ্র তা কার্যকর করেনি। আদালতের ভাষায়, এটি “সুপ্রিম কোর্টের রায়কে পাশ কাটানোর এক উদ্বেগজনক প্রয়াস।”
আইনের বিতর্কিত বিধানগুলির মধ্যে ছিল- সদস্যপদে নিয়োগের ন্যূনতম বয়স ৫০ বছর, মাত্র চার বছরের কার্যকাল, সার্চ-কম-সিলেকশন কমিটি–কে মাত্র দু’জন প্রার্থীর নাম পাঠানোর অনুমতি, যাদের মধ্য থেকে সরকার একজন বেছে নেবে।
সুপ্রিম কোর্ট আগেই পর্যবেক্ষণ করেছিল, ন্যূনতম বয়স ৫০ বছর হলে বহু যোগ্য তরুণ আইনজীবী আগ্রহ হারাবেন, যা ট্রাইবুনালের কর্মদক্ষতা ক্ষতিগ্রস্ত করবে।
শুনানিতে উত্তেজনার পরিবেশ Tribunals Reforms Act Struck Down
৬ নভেম্বর চূড়ান্ত শুনানির দিনে অ্যাটর্নি জেনারেল অনুপস্থিত থাকায় অসন্তোষ প্রকাশ করে বেঞ্চ। প্রধান বিচারপতি এমন প্রশ্নও করেন, “সরকার কি ইচ্ছাকৃতভাবে এই বেঞ্চে শুনানি বিলম্বিত করতে চাইছে? আমার অবসরের অপেক্ষা করছে কি?” পরে অ্যাটর্নি জেনারেল আদালতে উপস্থিত হয়ে ক্ষমাপ্রার্থনা করেন এবং ব্যস্ততার জন্য অনুপস্থিতির কারণ ব্যাখ্যা করেন।
মাদ্রাজ বার অ্যাসোসিয়েশনের অভিযোগ
আবেদনকারী মাদ্রাজ বার অ্যাসোসিয়েশন–এর যুক্তি, আদালত যেসব বিধান পূর্বে বাতিল করেছিল, সরকার সেগুলিই ফেরত এনে বিচারব্যবস্থার স্বাধীনতা ক্ষুণ্ণ করছে।
অভিযোগ আরও—
প্রার্থীদের ‘চেরি-পিকিং’ করা হয়েছে,
আইবি-র গোপন রিপোর্ট দেখিয়ে প্রার্থীদের বাদ দেওয়া হয়েছে, যা সিলেকশন কমিটিকে জানানো হয়নি,
উচ্চস্থানীয় প্রার্থীদের বাদ দিয়ে ওয়েটলিস্ট থাকা প্রার্থীদের সুপারিশ করা হয়েছে।
কেন ট্রাইবুনালের স্বাধীনতা এত জরুরি
ট্রাইবুনাল শুধু বিকল্প বিচারমঞ্চ নয়—এখানে নিষ্পত্তি হয় কোটি টাকার ট্যাক্স-বিতর্ক, কোম্পানি আইন, পরিবেশ ছাড়পত্র, এবং সেনা-অধিকারিকদের সার্ভিস-সংক্রান্ত সংবেদনশীল মামলার।
সুপ্রিম কোর্ট বহুবার জানিয়েছে, ট্রাইবুনালের স্বশাসনক্ষমতা সংবিধানের মৌলিক কাঠামোর অংশ।
কেন্দ্রের যুক্তি
সরকারের দাবি, ট্রাইবুনাল যেহেতু আইন দ্বারা সৃষ্ট সংস্থা, তাই প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণ রাষ্ট্রেরই থাকা উচিত। দক্ষতা, জবাবদিহি ও একরূপতা বজায় রাখতেই আইনটি আনা হয়েছিল।
উপসংহারে সুপ্রিম কোর্ট
রায়ের মাধ্যমে শীর্ষ আদালত স্পষ্ট জানিয়ে দিল, বিচারবিভাগের স্বাধীনতার ওপর কোনওরকম নির্বাহী চাপ বা বিধানগত ওভাররাইড বরদাস্ত করা হবে না। ট্রাইবুনাল নিয়োগপ্রক্রিয়া হবে স্বচ্ছ, নিরপেক্ষ এবং সম্পূর্ণ স্বাধীন, এটাই সংবিধানের প্রত্যাশা।
Bharat: The Supreme Court invalidated the Tribunals Reforms Act, 2021, calling it unconstitutional and a violation of judicial independence, showing “deep displeasure” with the government.
