শ্রাবণ মাসের পবিত্র দিনে শিবভক্ত ও কাওড়িয়াদের উপচে পড়া ভিড়ের মাঝে ঘটে গেল মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। উত্তরাখণ্ডের হারিদ্বার শহরের প্রসিদ্ধ মানসা দেবী মন্দিরে (Temple in Haridwar) রবিবার ভোরে পদদলিত হয়ে মৃত্যু হল অন্তত ৬ জনের। আহত হয়েছেন আরও বহু মানুষ। গুরুতর আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলেও জানা গিয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে মন্দিরের মূল পথের সিঁড়ির উপরে, যেখানে ভোর থেকে কয়েক হাজার ভক্ত জড়ো হয়েছিলেন পুজোর জন্য। গঢ়বাল ডিভিশনের কমিশনার বিনয় শঙ্কর পাণ্ডে সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ভিড় সামলাতে না পেরে হুড়োহুড়ির মধ্যে হঠাৎ পদদলিতের পরিস্থিতি তৈরি হয়। সেখানেই ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে নিশ্চিত করেন তিনি।
এই সময় উপস্থিত ছিলেন বহু কাওড়িয়া ভক্ত, যাঁরা গঙ্গাজল সংগ্রহ করে বিভিন্ন শিবমন্দিরে পৌঁছে দেন শ্রাবণ মাসে। এই সময় প্রতি বছরই লক্ষাধিক ভক্তের সমাগম হয় হারিদ্বারে। কিন্তু এবছর কোনও নির্দিষ্ট ভিড় নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা না থাকায় পরিস্থিতি দ্রুত হাতের বাইরে চলে যায় বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
ঘটনার পরেই উদ্ধারকাজে নামে উত্তরাখণ্ড পুলিশ এবং SDRF (স্টেট ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্স)। আহতদের তড়িঘড়ি স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ভেতরে ঢোকার রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে আপাতত। মন্দির চত্বর ও আশপাশে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে।
উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি এক টুইট বার্তায় বলেন, “মানসা দেবী মন্দিরে পদদলিত হওয়ার খবর শুনে আমি অত্যন্ত ব্যথিত। SDRF, পুলিশ ও প্রশাসনের দল দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে গেছে। উদ্ধার ও ত্রাণকার্য চলছে। আমি নিজেও প্রশাসনের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি এবং পরিস্থিতির উপর নজর রাখছি। মা মানসার কাছে প্রার্থনা করি, সকলে নিরাপদে থাকুন। প্রয়োজনে আহতদের উন্নত চিকিৎসার জন্য দেরাদুনে স্থানান্তর করা হবে।”
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতদের পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে এবং তাঁদের পরিবারকে খবর দেওয়া হয়েছে। ঘটনাস্থলে একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে এবং হেল্পলাইন নম্বর চালু করা হয়েছে। ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। স্থানীয় প্রশাসন এবং পুলিশকে কড়া বার্তা দিয়ে তিনি বলেন, ভবিষ্যতে যাতে এরকম ঘটনা না ঘটে, তার জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এই মর্মান্তিক ঘটনায় সারা রাজ্যে শোকের ছায়া। সোশ্যাল মিডিয়ায় বহু মানুষ শোকপ্রকাশ করেছেন এবং মৃতদের আত্মার শান্তি কামনা করেছেন।