ক্রিকেটার থেকে রাজনীতিক হওয়া এবং তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ কীর্তি আজাদ সোমবার সকালে সোশ্যাল মিডিয়াতে একটি রহস্যময় পোস্ট করে নতুন বিতর্ক সৃষ্টি করেছেন। তার এই পোস্ট মুহূর্তের মধ্যে ভাইরাল হয়ে যায় এবং রাজনৈতিক মহলে এক নতুন আলোচনা শুরু হয়ে যায়। কীর্তি আজাদ তাঁর পোস্টে প্রশ্ন তুলেছেন, “সে পন্ডিত নেহরুর মতো হতে চায়, কিন্তু তাঁর মতো দৃষ্টি নেই। সে ইন্দিরা গান্ধীর মতো হতে চায়, কিন্তু তাঁর মতো সাহস নেই। সে ড. মনমোহন সিংয়ের মতো হতে চায়, কিন্তু তার মতো শিক্ষিত নয়। আপনি বলুন, সে কে?”
এই পোস্টের মাধ্যমে কির্তি আজাদ যে ব্যক্তিকে নিশানা করেছেন, তা নিয়ে শুরু হয়ে যায় তুমুল জল্পনা। পোস্টটি দেওয়ার পর থেকেই সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম X (পূর্বের টুইটার) তে নানা ধরনের মন্তব্য ও আলোচনা শুরু হয়। বেশিরভাগ মানুষই মনে করছেন, কীর্তি আজাদ হয়তো কংগ্রেসের সভাপতি রাহুল গান্ধীকে লক্ষ্য করেছেন। তবে কিছু সংখ্যক মানুষ এই মন্তব্যের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকেও আক্রমণ করেছেন, আবার কিছু হাস্যরসাত্মক মন্তব্যকারীরা ভাবছেন, তিনি নিজেই হয়তো এর মাধ্যমে আত্মনিরীক্ষা করছেন।
কীর্তি আজাদ তাঁর পোস্টে যে বিশিষ্ট রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের নাম উল্লেখ করেছেন, তা কোনো সাধারণ কথা নয়। পন্ডিত নেহরু, ইন্দিরা গান্ধী, এবং ড. মনমোহন সিং—এই তিনটি নাম ভারতের রাজনৈতিক ইতিহাসে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কির্তি আজাদ যখন বলেন, “সে পন্ডিত নেহরুর মতো হতে চায়, কিন্তু তাঁর মতো দৃষ্টি নেই”, তখন তিনি হয়তো কোনো নেতার দৃষ্টি বা দূরদৃষ্টি ক্ষমতার অভাবকে তুলে ধরেছেন। ইন্দিরা গান্ধীর সাহসিকতা এবং ড. মনমোহন সিংয়ের শিক্ষাগত যোগ্যতার উল্লেখও একইভাবে গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক অবদানগুলিকে ব্যাখ্যা করতে ব্যবহৃত হয়েছে।
এমন একটি প্রশ্ন তোলার মাধ্যমে কির্তি আজাদ কেবল একটি সাধারণ রাজনৈতিক মন্তব্যই করেননি, বরং তিনি একটি দৃষ্টিকোণ থেকে বর্তমান রাজনৈতিক নেতাদের তুলনা করছেন। এই মন্তব্যের মাধ্যমে তিনি এমন এক নেতাকে নিশানা করতে চেয়েছেন, যার কাছে এসব গুণাবলী অনুপস্থিত। পোস্টটি প্রকাশ হওয়ার পর থেকেই সোশ্যাল মিডিয়াতে আলোচনা শুরু হয়ে যায়। অধিকাংশ লোকই মনে করছেন, কির্তি আজাদ এর মাধ্যমে রাহুল গান্ধীকে একধরনের তির্যক মন্তব্য করছেন। বিশেষ করে, রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বের কুণ্ঠা এবং অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক সমর্থনের অভাব নিয়ে তার দীর্ঘদিনের সমালোচনা রাজনৈতিক মহলে চলছে। কির্তি আজাদের পোস্টের মাধ্যমে সেটিকে আবার উসকে দেওয়া হয়েছে। তবে, কিছু লোকের মতে, এই পোস্টের উদ্দেশ্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকেও হতে পারে। নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বের বিভিন্ন দিক, বিশেষ করে তার রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং শাসন ব্যবস্থার তুলনা করতে গিয়ে কির্তি আজাদ এক ধরনের ব্যঙ্গাত্মক মন্তব্য করেছেন, যা অনেকের কাছে প্রশংসা পাওয়ার পরিবর্তে বিরোধিতা সৃষ্টি করেছে।
একটি বিশেষ দৃষ্টিভঙ্গি ছিল যেখানে কিছু হাস্যরসাত্মক মন্তব্যকারীরা বলেছেন, কির্তি আজাদ হয়তো নিজেই সেই ব্যক্তির প্রতিনিধি, যাঁর মধ্যে এই গুণগুলি নেই। রাজনৈতিক জগতে কির্তি আজাদের অবস্থান বিশেষ কিছু নয়, যদিও তিনি একজন অভিজ্ঞ ক্রিকেটার এবং রাজনীতিবিদ। এমন মন্তব্যগুলি যেন সবার চোখে একটি হালকা মেজাজ এবং সেলফ-সার্কাজম তৈরি করে। এটি অনেকে মজা হিসেবে নিয়েছেন এবং একে কির্তি আজাদের সেলফ-ইরনি হিসাবে দেখেছেন।
