দিল্লি পুলিশের চিঠিতে চটে শাহ-মোদীকে আক্রমণ তৃণমূল সেনাপতির

তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক এবং সাংসদ অভিষেক ব্যানার্জি (Shah-Modi)বিজেপি-শাসিত রাজ্যগুলোতে বাংলাভাষীদের উপর নিগ্রহ এবং দিল্লি পুলিশের একটি চিঠিতে বাংলা ভাষাকে ‘বাংলাদেশি ভাষা’ হিসেবে উল্লেখ…

Shah-Modi slammd by abhishek

তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক এবং সাংসদ অভিষেক ব্যানার্জি (Shah-Modi)বিজেপি-শাসিত রাজ্যগুলোতে বাংলাভাষীদের উপর নিগ্রহ এবং দিল্লি পুলিশের একটি চিঠিতে বাংলা ভাষাকে ‘বাংলাদেশি ভাষা’ হিসেবে উল্লেখ করার ঘটনায় বিজেপির বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তিনি এই ঘটনাকে “বাংলা ভাষা এবং বাঙালি পরিচয়ের উপর পরিকল্পিত আক্রমণ” হিসেবে উল্লেখ করেন।

তিনি বিজেপিকে “বাংলা বিরোধী” এবং “জমিদার” বলে সমালোচনা করেছেন। অভিষেক এক্স প্ল্যাটফর্মে লিখেছেন, “এটি কোনো সাধারণ ভুল নয়। এটি বিজেপির একটি পরিকল্পিত প্রচেষ্টা, যার মাধ্যমে তারা পশ্চিমবঙ্গকে অপমান করছে, আমাদের সাংস্কৃতিক পরিচয়কে দুর্বল করছে এবং সংকীর্ণ রাজনৈতিক প্রচারের জন্য পশ্চিমবঙ্গকে বাংলাদেশের সঙ্গে তুলনা করছে।”

   

ঘটনার পটভূমি

অভিষেকের অভিযোগ, গত কয়েক মাস ধরে বিজেপি-শাসিত রাজ্যগুলোতে, যেমন ওড়িশা, মহারাষ্ট্র, দিল্লি, হরিয়ানা, রাজস্থান এবং আসামে, বাংলাভাষী অভিবাসী শ্রমিক এবং অন্যান্য ব্যক্তিদের লক্ষ্য করে হয়রানি, গ্রেফতার এবং এমনকি জোরপূর্বক বাংলাদেশে নির্বাসনের ঘটনা বেড়েছে।

দিল্লি পুলিশ সম্প্রতি একটি অফিসিয়াল চিঠিতে বাংলা ভাষাকে “বাংলাদেশি ভাষা” হিসেবে উল্লেখ করেছে, যা তৃণমূল কংগ্রেসের কাছে অত্যন্ত আপত্তিকর এবং বাঙালি সম্প্রদায়ের জন্য অপমানজনক বলে বিবেচিত হয়েছে।

অভিষেক বলেন, “বাংলা ভাষা ভারতের সংবিধানের অষ্টম তফসিলে স্বীকৃত এবং সংবিধানের ৩৪৩ নম্বর অনুচ্ছেদের অধীনে সুরক্ষিত। ‘বাংলাদেশি’ বলে কোনো ভাষা নেই। বাংলাকে বিদেশি ভাষা বলা শুধু অপমান নয়, এটি আমাদের পরিচয়, সংস্কৃতি এবং অস্তিত্বের উপর আক্রমণ।”

তৃণমূলের দাবি ও প্রতিবাদ

অভিষেক তাঁর বক্তব্যে দাবি করেছেন, দিল্লি পুলিশের তদন্তকারী অফিসার অমিত দত্তের তাৎক্ষণিক সাসপেনশন চাই। তিনি আরও বলেন বিজেপি এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের নেতৃত্বাধীন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়া উচিত। তিনি বলেন, “বাংলা এবং বাঙালিরা ভারতীয়। বাংলা আমাদের গর্ব। আমরা আমাদের পরিচয়কে পদদলিত হতে দেব না।”

এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি এই ঘটনাকে “ভাষাগত সন্ত্রাস” হিসেবে অভিহিত করে কলকাতার মায়ো রোডে গান্ধী মূর্তির সামনে প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করেছেন। মমতা বলেন, “বাংলা ভাষায় কথা বললেই কেউ বাংলাদেশি হয়ে যায় না। এটি বিজেপির বাঙালি-বিরোধী মনোভাব।”

Advertisements

বিজেপির প্রতিক্রিয়া

বিজেপি এই অভিযোগের জবাবে দাবি করেছে, তৃণমূল এই ইস্যুকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করছে এবং বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের আড়াল করার চেষ্টা করছে। বিজেপির আইটি সেল প্রধান অমিত মালব্য এক্স-এ লিখেছেন, “তৃণমূল বাংলাদেশি এবং রোহিঙ্গাদের বৈধ নথি দিয়ে ভোটার তালিকায় যুক্ত করছে, যা জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি।” তবে, তৃণমূলের সাংসদ সমিরুল ইসলাম এই দাবির জবাবে বলেন, “আধার এবং ভোটার আইডি কেন্দ্রীয় সরকার জারি করে। বিজেপি তাদের ব্যর্থতা লুকোতে বাঙালিদের উপর দোষ চাপাচ্ছে।”

8GB ব়্যাম ও 6000mAh ব্যাটারির Vivo Y04s লঞ্চ হল, দাম ৭৫০০ টাকার কম

আইনি ও রাজনৈতিক পদক্ষেপ

তৃণমূল কংগ্রেস এই ঘটনার বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নিয়েছে। কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের করা একটি হেবিয়াস কর্পাস মামলায় দিল্লি সরকারকে বাংলাভাষী ছয়জন ব্যক্তির বাংলাদেশে নির্বাসনের বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।

তৃণমূল দাবি করেছে, এই ধরনের পদক্ষেপ ভারতের সংবিধানের অষ্টম তফসিল এবং নাগরিকদের মৌলিক অধিকারের লঙ্ঘন। অভিষেক বলেন, “বিজেপি ভারতের বৈচিত্র্যকে সম্মান করে না। তারা বিভাজনের রাজনীতির মাধ্যমে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়।”

অভিষেক ব্যানার্জির এই তীব্র সমালোচনা এবং তৃণমূলের প্রতিবাদ বাংলা ভাষা এবং বাঙালি পরিচয়ের প্রতি তাদের অঙ্গীকারের প্রতিফলন। দিল্লি পুলিশের চিঠিতে বাংলা ভাষাকে ‘বাংলাদেশি ভাষা’ বলার ঘটনা বাঙালি সম্প্রদায়ের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।

তৃণমূলের এই আন্দোলন ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। তৃণমূলের দাবি, যতক্ষণ না দিল্লি পুলিশ এবং বিজেপি নিঃশর্ত ক্ষমা না চায়, ততক্ষণ তাদের প্রতিবাদ অব্যাহত থাকবে।