‘সরকার বদলের সময় এসে গেছে ‘, চাকরিহারা প্রসঙ্গে বিস্ফোরক দিলীপ

ভারতীয় জনতা পার্টির (BJP) নেতা দিলীপ ঘোষ (dilip) সোমবার পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা করেছেন। এসএসসি শিক্ষক নিয়োগ মামলায় ২৬,০০০ শিক্ষকের…

dilip ghosh burst out on government

ভারতীয় জনতা পার্টির (BJP) নেতা দিলীপ ঘোষ (dilip) সোমবার পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা করেছেন। এসএসসি শিক্ষক নিয়োগ মামলায় ২৬,০০০ শিক্ষকের চাকরি হারানোর প্রেক্ষাপটে চলতে থাকা শিক্ষক বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে “অজনপ্রিয়” বলে আখ্যা দিয়েছেন।

দিলীপ কি বলেছেন (dilip)

সংবাদ মাধ্যমের এর সঙ্গে কথা বলার সময় ঘোষ (dilip)বলেন, সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনা করলে মানুষকে হুমকির মুখে পড়তে হয়। তিনি জোর দিয়ে বলেন, এখন সরকার পরিবর্তনের সময় এসেছে। তিনি আরও যুক্তি দেন, শিক্ষকরা রাস্তায় বিক্ষোভ করলে ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যৎ প্রশ্নের মুখে পড়বে।

   

ঘোষ (dilip)বলেন, “এই সরকার অজনপ্রিয় হয়ে গেছে। তারা কোনও সিদ্ধান্ত নিচ্ছে না। যখন মানুষ তাদের বিরুদ্ধে কথা বলছে, তখন তাদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এখন সরকারের যাওয়ার সময় এসেছে। যে শিক্ষকদের স্কুলে পড়ানোর কথা, তারা আজ রাস্তায় বিক্ষোভ করছেন। বাংলার শিশুদের ভবিষ্যতের কথা কে ভাববে?”

এসএসসি শিক্ষক বিক্ষোভের প্রেক্ষাপট

কলকাতার বিকাশ ভবনের সামনে শিক্ষকরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নেতৃত্বাধীন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করছেন। এই বিক্ষোভের মূল কারণ হল এসএসসি নিয়োগ মামলায় ২৬,০০০ শিক্ষকের চাকরি বাতিল হওয়া। সুপ্রিম কোর্টের একটি রায়ে বলা হয়েছে, ২০১৬ সালের পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়াটি দুর্নীতিগ্রস্ত ছিল। এই রায়ের পর শিক্ষকরা রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ শুরু করেছেন।

সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ স্পষ্ট করেছে যে, নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অনিয়মের কারণে যাদের চাকরি বাতিল হয়েছে, তাদের মধ্যে যারা “দুর্নীতিমুক্ত” তাদের নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত চাকরি চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হবে(dilip)। তবে, গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি-তে কর্মরত শিক্ষকদের ক্ষেত্রে এই ছাড় দেওয়া হয়নি, কারণ এই বিভাগে “দুর্নীতিগ্রস্ত” প্রার্থীর সংখ্যা বেশি।

আদালত আরও নির্দেশ দিয়েছে যে, পশ্চিমবঙ্গ সরকার এবং পশ্চিমবঙ্গ স্টাফ সিলেকশন কমিশনকে ৩১ মে-র মধ্যে সহকারী শিক্ষকদের জন্য নতুন নিয়োগের বিজ্ঞাপন প্রকাশ করতে হবে এবং ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। সুপ্রিম কোর্ট এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে যাতে বর্তমান শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।

‘সুপারস্টার’ প্রমাণিত হবে STAR মিসাইল, এর গতি শব্দের গতির চেয়ে আড়াই গুণ বেশি!

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া

১৭ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্টের রায়ের প্রতিক্রিয়ায় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, এই মামলার সমাধান এক বছরের মধ্যে হয়ে যাবে। তিনি বলেন, “সুপ্রিম কোর্ট শিক্ষকদের ২০২৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত চাকরি চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে। আমরা চিন্তিত ছিলাম যে তাদের বেতন কীভাবে দেওয়া হবে।

Advertisements

আগে বলা হয়েছিল, বেতন দেওয়া যাবে না। আমরা তাদের আশ্বাস দিয়েছিলাম যে তারা কোনও সমস্যায় পড়বেন না। আমাদের ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় আছে। এই এক বছরের মধ্যে বিষয়টির সমাধান হয়ে যাবে।”

শিক্ষকদের দাবি ও বিক্ষোভ

এসএসসি নিয়োগ মামলায় চাকরি হারানো শিক্ষকরা বিকাশ ভবনের সামনে তাদের চাকরি ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ করছেন। তারা দাবি করছেন, নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কিছু অনিয়ম থাকলেও সব শিক্ষক দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত নন। শিক্ষকদের একাংশ বলছেন, তারা বছরের পর বছর ধরে নিষ্ঠার সঙ্গে পড়াচ্ছেন, এবং তাদের চাকরি হারানো অন্যায়। তারা রাজ্য সরকারের কাছে ন্যায়বিচারের দাবি জানিয়েছেন।

বিক্ষোভকারী শিক্ষকরা আরও বলছেন, সুপ্রিম কোর্টের রায়ে “দুর্নীতিমুক্ত” শিক্ষকদের চাকরি চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হলেও, অনেক ক্ষেত্রে কোন শিক্ষক দুর্নীতিগ্রস্ত এবং কোন শিক্ষক দুর্নীতিমুক্ত, তা স্পষ্ট নয়। এই অস্পষ্টতার কারণে শিক্ষকদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে।

রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া

দিলীপ ঘোষের(dilip) এই মন্তব্য তৃণমূল সরকারের প্রতি বিজেপির ক্রমবর্ধমান সমালোচনার অংশ। ঘোষের মতে, (dilip)তৃণমূল সরকার শিক্ষকদের সমস্যার সমাধানে ব্যর্থ হয়েছে, যা শিক্ষা ব্যবস্থার উপর বিরূপ প্রভাব ফেলছে। তিনি বলেন, “শিক্ষকদের রাস্তায় নামতে হচ্ছে কারণ সরকার তাদের সমস্যার সমাধান করতে পারছে না। এর ফলে ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনা ব্যাহত হচ্ছে।”

অন্যদিকে, তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারা দাবি করছেন, তারা শিক্ষকদের পাশে আছেন এবং সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করবেন। তবে, বিক্ষোভকারী শিক্ষকদের ক্ষোভ এখনও প্রশমিত হয়নি।

শিক্ষা ব্যবস্থার উপর প্রভাব

এই বিক্ষোভ এবং নিয়োগ মামলার ফলে পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষা ব্যবস্থা একটি অনিশ্চিত পরিস্থিতির মুখে পড়েছে। শিক্ষকদের চাকরি হারানোর ফলে অনেক স্কুলে শিক্ষক সংকট দেখা দিয়েছে, যা ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনার উপর সরাসরি প্রভাব ফেলছে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হলেও, এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে সময় লাগবে। এই সময়ের মধ্যে শিক্ষা ব্যবস্থার ক্ষতি পূরণ করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ হবে।

এসএসসি (dilip)শিক্ষক নিয়োগ মামলা এবং তার ফলে সৃষ্ট বিক্ষোভ পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষা ব্যবস্থা এবং রাজনৈতিক পরিস্থিতির উপর গভীর প্রভাব ফেলেছে। দিলীপ ঘোষের সমালোচনা তৃণমূল সরকারের প্রতি জনগণের ক্রমবর্ধমান অসন্তোষকে আরও উসকে দিয়েছে। অন্যদিকে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন সরকার এই সংকটের সমাধানে কতটা সফল হবে, তা আগামী দিনে স্পষ্ট হবে। শিক্ষকদের বিক্ষোভ এবং ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ এখন রাজ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।