উত্তরপ্রদেশের (Uttarpradesh) পিলভিটে সোমবার সকালে পুলিশ ও তিন খলিস্তানি (Khalistani) জঙ্গির মধ্যে এনকাউন্টার ঘটেছে, যার ফলস্বরূপ তিন জন জঙ্গি নিহত হয়েছে। এই এনকাউন্টারটি পঞ্জাব এবং উত্তরপ্রদেশ পুলিশের যৌথ অভিযান চালানোর পর ঘটে। পঞ্জাব পুলিশের পক্ষ থেকে এই তিন জঙ্গিকে ‘ওয়ান্টেড’ ঘোষণা করা হয়েছিল, এবং তারা দীর্ঘ সময় ধরে পুলিশের নজরদারিতে ছিল। পুলিশের দাবি, গোপন সূত্রে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তারা পিলভিটে অভিযানে নেমে ছিল।
মহিলার মৃত্যু ঘিরে উন্মত্ত জনতা, ঢিল ছুঁড়ল অল্লুর বাড়িতে
পুলিশ জানায়, তিন খলিস্তানি জঙ্গি পিলভিটের একটি নির্জন এলাকায় অবস্থান করছিলেন। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে, পঞ্জাব এবং উত্তরপ্রদেশ পুলিশ একটি যৌথ দল তৈরি করে। পুলিশের বক্তব্য অনুযায়ী, জঙ্গিরা যখন পুলিশকে দেখতে পায়, তখন তারা গুলি চালাতে শুরু করে। পাল্টা আক্রমণে পুলিশও গুলি চালায়। গুলিবিদ্ধ হওয়া তিন জঙ্গিকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, কিন্তু তাদের সবার মৃত্যু হয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায়।
এই এনকাউন্টারটি এমন একটি সময়ে ঘটেছে যখন খলিস্তানি আন্দোলন আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। বেশ কিছু দিন ধরেই পঞ্জাব ও অন্যান্য রাজ্যে খলিস্তানি জঙ্গিদের উপস্থিতি ও তৎপরতা বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। এই ধরনের এনকাউন্টারগুলো সাধারণত প্রশাসনের কঠোরতা এবং জঙ্গিদের বিরুদ্ধে সংঘটিত অভিযানকে প্রতিফলিত করে। এনকাউন্টার বা পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হওয়ার ঘটনা রাজনৈতিক এবং সামাজিকভাবে বিতর্কিত হলেও, পুলিশ এটি একটি সফল অভিযান হিসেবে দেখছে, যেহেতু এই জঙ্গিরা দীর্ঘদিন ধরে পুলিশের খাতায় ‘ওয়ান্টেড’ ছিলেন।
সড়ক দূর্ঘটনায় মৃত্যু আইটি সংস্থার কর্ণধারের, দামী গাড়ি আদৌ কী নিরাপদ? প্রশ্ন পরিবারের
এই ধরনের অপারেশনগুলোতে পুলিশ কৌশলগতভাবে কাজ করে থাকে। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে এবং বিস্তারিত পরিকল্পনা তৈরি করে পুলিশ যখন অভিযানে নামতে থাকে, তখন তাদের লক্ষ্য থাকে একে অপরের সমন্বয়ে অভিযান চালিয়ে অপরাধীদের গ্রেপ্তার করা। এই অভিযানে পুলিশের সক্ষমতা ও প্রস্তুতি অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। পুলিশের দাবি, এনকাউন্টারটি সম্পূর্ণভাবে আত্মরক্ষার প্রয়োজনে ছিল, কারণ অভিযুক্তরা প্রথমে গুলি চালিয়েছিল।
এনকাউন্টারের ফলে রাজ্যে আবারও নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়ে গেছে। খলিস্তানি আন্দোলনের পুনরুত্থান এবং এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সন্ত্রাসী কার্যকলাপ নিয়ে বিভিন্ন মহলে উদ্বেগ প্রকাশ করা হচ্ছে। বিশেষত পঞ্জাবের মত রাজ্যে, যেখানে এই ধরনের জঙ্গি তৎপরতা অতীতে ব্যাপক ছিল, সেখানে পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীকে আরও সতর্ক থাকতে বলা হচ্ছে। একইসাথে, এই এনকাউন্টার সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সরকারের কঠোর অবস্থানকে প্রকাশ করেছে, যা বিশেষ করে সমাজে শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে মনে করা হচ্ছে।
প্রিয়াঙ্কার কাছে পরাজিত বিজেপির নব্যা ভোটের ফলাফলে সন্তুষ্ট নন, দ্বারস্থ আদালতের
তবে এই ধরনের এনকাউন্টার সাধারণত বিতর্ক সৃষ্টি করে, কারণ অনেকেই এর আইনগত বৈধতা এবং মানবাধিকারের প্রশ্ন তোলেন। কিছু মানুষের মতে, পুলিশের হাতে বিচার করার সুযোগ না দেওয়ার কারণে এটি আইনশৃঙ্খলার বিপরীতে যায়। কিন্তু অন্যদিকে, পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর মতে, এগুলি এক ধরনের আত্মরক্ষা, যেখানে তারা নিজেদের জীবন রক্ষার্থে গুলি চালাতে বাধ্য হয়।
সর্বশেষ, এই এনকাউন্টারটি উত্তরপ্রদেশ ও পঞ্জাবের মধ্যে নিরাপত্তা সংক্রান্ত সহযোগিতার একটি দৃষ্টান্ত হিসেবে সামনে এসেছে। এটি পরবর্তী সময়ে রাজ্যগুলোর মধ্যে যৌথ অভিযান আরও মজবুত করার একটি প্রমাণ হতে পারে।