বিদেশমন্ত্রকের সাহায্য চাইছেন মানস সরোবর যাত্রায় আটকে পড়া হাজারও ভারতীয়

নয়াদিল্লি: দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর অবশেষে মানস সরোবর যাত্রার সুযোগ পেয়েছিলেন ত্রিশূরের চিকিৎসক সুজয় সিধান। ২০২০ র পর ফের শুরু হয়েছিল কৈলাস মানস সরোবর যাত্রা। তবে…

বিদেশমন্ত্রকের সাহায্য চাইছেন মানস সরোবর যাত্রায় আটকে পড়া হাজারও ভারতীয়

নয়াদিল্লি: দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর অবশেষে মানস সরোবর যাত্রার সুযোগ পেয়েছিলেন ত্রিশূরের চিকিৎসক সুজয় সিধান। ২০২০ র পর ফের শুরু হয়েছিল কৈলাস মানস সরোবর যাত্রা। তবে বহু কাঙ্খিত তীর্থ যাত্রায় গিয়ে ফেরার পথে যে বড় বিপত্তি অপেক্ষা করতে পারে তার লেশমাত্র জানা ছিল না সুজয় বাবুর। নেপালের ভয়ঙ্কর বিশৃঙ্খল পরিস্থিতিতে বর্তমানে তিব্বতের একটি গ্রামে আটকে পড়েছেন তাঁর মত বহু মানস সরোবর যাত্রী।

কৈলাসে পরিক্রমা শেষ করে উচ্চতা এবং অক্সিজেনের ঘাটতি জনিত কারণে বহু পুন্যার্থীই ফিরতি পথে অসুস্থ বোধ করেন। তিব্বতের দারচেনের একটি ছোট্ট গ্রামে অত তীর্থযাত্রীর থাকা খাওয়ার বন্দোবস্ত করা সম্ভব না। তাই আগে যাত্রা সমাপ্ত করা পুন্যার্থীদের নেপাল-চিন সীমান্তের অচেনা গ্রামে স্থানান্তরিত করছে স্থানীয় চিন প্রশাসন।

   

সুজয় বাবু বলছেন, “নেপালের টালমাটাল পরিস্থিতিতে বাড়ি ফিরতে পারছি না। তাই আমাদের অজানা কোনও গ্রামে পাঠিয়ে দিচ্ছে স্থানীয় প্রশাসন। পরের মুহূর্তে আমাদের জন্য যে কি অপেক্ষা করছে তা বিন্দুমাত্র জানা নেই”। নেপালের একটি বেসরকারি ট্যুর অপারেটরের সঙ্গে কৈলাস মানস সরোবর যাত্রায় গিয়েছিলেন সুজয় এবং তাঁর দল। কিন্তু মঙ্গলবার যাত্রা শেষ করে তাঁরা জানতে পারেন, নেপালে গণঅভ্যুত্থান এবং রণক্ষেত্র পরিস্থিতিতে সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

হিমালয়ের কোলে তিব্বতের গ্রামে প্রায় ৬০০০ মিটার উচ্চতায় আটকে পড়েছেন তাঁর মত প্রায় ২০০০ তীর্থযাত্রী বলে জানা গিয়েছে। যাদের মধ্যে ভারতীয়ের সংখ্যাই বেশি। তিব্বতে আটকে পড়া কৈলাস তীর্থযাত্রীদের দেশে ফেরাতে বেজিং-এর ভারতীয় দূতাবাসের সঙ্গে কথা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। চিকিৎসক সুজয় বলেন, “শুনছি নেপালে আচমকা বিমান পরিষেবা এবং সীমান্ত বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে সেখানে প্রায় শতাধিক ভারতীয় আটকে পড়েছে। এদিকে এত উচ্চতায় দারচেনে আটকে থাকা ভারতীয়দের অবস্থা আরও সঙ্গিন। উচ্চতা এবং অক্সিজেনের অভাবে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। তাঁদের মধ্যে অনেক বয়োজ্যেষ্ঠও আছেন”।

Advertisements

উল্লেখ্য, ২০২০ সালের পর বন্ধ হয়ে যায় কৈলাস মানস সরোবর যাত্রা। চলতি বছর চিন-ভারত সম্মতিতে সিকিম এবং উত্তরাখন্ডের রাস্তায় সরকারি এজেন্সি মারফত প্রায় ৭৫০ জন তীর্থযাত্রীকে মানস সরোবর যাত্রার অনুমতি দেওয়া হয়। সেইসঙ্গে বেসরকারি এজেন্সি মারফত সুজয়ের মত হাজারও পুন্যার্থী কৈলাস মানস সরোবর যাত্রায় যান। নেপালের নেপালগঞ্জ থেকে যাত্রা শুরু করে হিলসা থেকে ছোট বিমানে তাঁরা দারচেন পৌঁছন।

দারচেন থেকেই শুরু হয় কৈলাস মানস সরোবরের তীর্থযাত্রা। যাত্রা শেষে একই পথে ফেরার পরিকল্পনা ছিল তাঁদের। বিকল্প কোনও রাস্তার সন্ধান স্থানীয় চিনা গাইডরা দিতে পারেননি বলে জানিয়েছেন সুজয় সিধান। বর্তমানে ভারতের বিদেশমন্ত্রকের কাছ থেকে সাহায্য চাইছেন সুজয় সহ তিব্বতে আটকে পড়া হাজারও ভারতীয় তীর্থ যাত্রী।