News Desk: চাকরির মেয়াদ বাড়ল সিবিআই ও ইডির শীর্ষ আধিকারিকদের। এতদিন সিবিআই বা ইডির মতো কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার ডিরেক্টরদের চাকরির মেয়াদ ছিল ২ বছর। নরেন্দ্র মোদি (narendra modi) সরকার একধাক্কায় সেই মেয়াদ বাড়িয়ে করল ৫ বছর। রবিবার কেন্দ্র এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে। চাকরির মেয়াদ বৃদ্ধির বিষয়ে দুটি আলাদা আলাদা অর্ডিন্যান্সও জারি করা হয়েছে। দুটি অর্ডিন্যান্সেই রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ সই করেছেন।
রবিবার কেন্দ্রের জারি করা অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, সিবিআই (cbi) এবং ইডির (ed)আধিকারিকদের নির্ধারিত দু’বছরের মেয়াদ শেষে তা আরও একবছর করে তিনবার বাড়ানো যেতে পারে। অর্থাৎ সবচেয়ে বেশি পাঁচ বছর সিবিআই এবং ইডির আধিকারিকরা ওই পদে থাকতে পারবেন। তবে, ওই দুই তদন্তকারী সংস্থার শীর্ষপদে কারও মেয়াদ পাঁচ বছর পূর্ণ হয়ে গেলে তা কোনওভাবেই আর বাড়ানো হবে না। তবে ওই অধ্যাদেশে (ordinance) বলা হয়েছে, একমাত্র জনস্বার্থে ইডি এবং সিবিআইয়ের শীর্ষ আধিকারিকদের মেয়াদ বাড়ানো যেতে পারে। কেন কারণ বাড়ানো হল, তাও লিখিতভাবে জানিয়ে দেওয়া হবে।
সম্প্রতি ইডির ডিরেক্টর সঞ্জয়কুমার মিশ্রর (sanjay kumar mishra) মেয়াদ বাড়ানো নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। ২০১৮ সালে সঞ্জয়কে দু’বছরের জন্য নিয়োগ করেছিল মোদি সরকার। ২০২০-র নভেম্বরে তাঁর মেয়াদ একবছর বাড়িয়ে দেয় মোদি সরকার। যা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলাও হয়। মামলাকারীরা প্রশ্ন তোলেন কেন এভাবে সঞ্জয় মিশ্রর মেয়াদ বাড়ানো হল?
ওই প্রশ্নের জবাবে কেন্দ্র জানায়, একাধিক গুরুত্বপূর্ণ তদন্ত শেষ করতেই মিশ্রর মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। কেন্দ্রের বক্তব্য মেনে নিয়ে শীর্ষ আদালতও (Supreme Court) জানায়, বিরল এবং ব্যতিক্রমী ঘটনার ক্ষেত্রে সিবিআই বা ইডির আধিকারিকদের মেয়াদ বাড়ানো যেতেই পারে। তবে, সেটা শুধু বিরল এবং ব্যতিক্রমী ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হবে। তবে ব্যতিক্রমী ঘটনা হলেও কোনও আধিকারিকের মেয়াদ ১ বছরের বেশি বাড়ানো যাবে না। শীর্ষ আদালতের সেই রায়ের পর এবার কেন্দ্র সরাসরি অর্ডিন্যান্স জারি করে দুই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকদের মেয়াদ বাড়িয়ে দিল।
রাজনৈতিক মহল মনে করছে ইডির ডিরেক্টর সঞ্জয়কুমার মিশ্রর মেয়াদ বাড়াতেই এই অর্ডিন্যান্স জারি করা হয়েছে। সঞ্জয় কুমার মোদির কাছের লোক বলেই পরিচিত। এখন দেখার সঞ্জয়কুমারের মেয়াদ বাড়ানো হয় কিনা। ১৭ নভেম্বর সঞ্জয় কুমার মিশ্র-র মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগে এই অধ্যাদেশ আনা হল। মনে করা হচ্ছে সঞ্জয় কুমারকে যাতে তাকে আরো এক বছর ওই পদে রাখা যায় তার জন্যই এই সিদ্ধান্ত।
<
p style=”text-align: justify;”>প্রসঙ্গত, বিরোধীরা একাধিকবার নরেন্দ্র মোদি সরকারের বিরুদ্ধে ইডি এবং সিবিআইকে রাজনৈতিক উদ্দেশে ব্যবহার করার অভিযোগ তুলছে। বিরোধীদের দাবি, মোদি সরকার রাজনৈতিক প্রতিহংসা মেটাতেই সিবিআই, ইডির মতো বিভিন্ন কেন্দ্রীয় সংস্থাকে ব্যবহার করে। এরই মধ্যে হঠাৎই এই দুই সংস্থার শীর্ষ আধিকারিকদের মেয়াদ বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত বিরোধীদের হাতে নতুন অস্ত্র তুলে দিল বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। প্রসঙ্গত, ১৯৯৭ সালের আগে সিবিআই ডিরেক্টরদের মেয়াদ নির্ধারিত ছিল না এবং সরকার যে কোনও কারণে তাঁদের অপসারণ করতে পারতো। ভিনীত নারায়ন বনাম ভারত সরকারের মামলার রায়ে সুপ্রিম কোর্ট সিবিআই ডিরেক্টরকে স্বাধীনভাবে কাজ করার অনুমতি দেওয়ার জন্য ন্যূনতম দুই বছরের মেয়াদ নির্ধারণ করেছিল।