এক কথায় পাপ্পু (Rahul Gandhi) পাস করে গিয়েছে। শুধু রাজনীতির ময়দানে নয়, জুতোর কারিগর হিসেবেও রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi) ফুল মার্কস পেতে চলেছেন। আর হবে নাই বা কেন? তাঁর (Rahul Gandhi) সেলাই করা জুতোর মূল্য যে এখন বেড়েই চলেছে। তবে সেই জুতো দাম দিয়ে কেউ কিনতে পারবে কিনা, তা নিয়ে সন্দেহের অবকাশ আছে।
সম্প্রতি একটি মানহানির মামলার শুনানির জন্য উত্তরপ্রদেশে হাজির হয়েছিলেন সংসদের বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi)। আদালতে যাওয়ার পথেই সুলতানপুরে দাঁড়ায় রাহুলের (Rahul Gandhi) কনভয়। যেখানে দাঁড়িয়েছিল রাহুলের কনভয় সেখানেই ছিল একটি জুতো সারাইয়ের দোকান।
দরিদ্র মুচি রাম চেটের ঝুপড়ি দোকানে গিয়ে হাজির হয়েছিলেন রাহুল (Rahul Gandhi)। জুতো সেলাই থেকে শুরু করে অন্যান্য বিষয়ে তাঁর সঙ্গে খোশগল্প জুড়ে দেন তিনি। সেদিন রামের থেকে জুতো সেলাই শিখে, নিজের হাতে জুতো সেলাইও করেছিলেন রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi)।
শালবনী ইস্পাত কারখানা নিয়ে জারি জট জটিলতা, আদালতের কাঠগড়ায় সৌরভ গাঙ্গুলি?
আর রাহুলের এই সেলাই করা জুতোই ভাগ্য পাল্টে দিয়েছে দরিদ্র মুচি রাম চেটের। রাম এখন রীতিমতো সেলিব্রেটি মানুষ। আশেপাশের গ্রাম থেকেই শুধু নয়, ভিন রাজ্যের মিডিয়া থেকে শুরু করে রাজনৈতিক নেতারা হামলে পড়েছে রামের দোকানে।
পাপ্পুর পায়ের ধুলোতে যেন রামের দোকানের কপালই খুলে গিয়েছে। তবে সব থেকে অবাক করা বিষয় হল রাহুল গান্ধীর সেলাই করা জুতোর দাম। প্রথমে এক ভদ্রলোক সেই জুতো ৫ লক্ষ টাকা দিয়ে কিনে নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন রামকে। পরবর্তীকালে আরেক ক্রেতা ১০ লক্ষ টাকার টোপ দিয়েছে।
কিন্তু রাতারাতি বিখ্যাত হয়ে যাওয়া রামের পা এখনও বাস্তবের মাটিতেই রয়েছে। আপাতত রাম পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিয়েছে যে সে এই জুতো কোনও ভাবেই বিক্রি করবে না। এমনকি সংবাদ মাধ্যমের সামনে রাহুল গান্ধীর প্রতি কৃতজ্ঞতাও জানিয়েছে সে। রাহুলের জন্যই আজকে তার যে এই উন্নতি, সেটা সে শত মুখে স্বীকার করছে।
৫ লক্ষ চাকরি দিয়েছে মোদী সরকার, দাবি রেলমন্ত্রী অশ্বিনীর
অবশ্যই রাহুলও তাঁর জুতো তৈরির শিক্ষককে গুরুদক্ষিণা দিতে ভোলেননি। জুতো তৈরি শেখার পর দিনই গুরুর জন্য পাঠিয়েছেন উপহার। একেবারে নতুন এবং দামি জুতো সেলাই মেশিন উপহার হিসেবে হাজির হয়েছে রামের জন্য। রাহুলের তরফ থেকে এরকম উপহার পেয়ে রাম চেট রীতিমতন আপ্লুত। রাহুলের কয়েক মুহূর্তের উপস্থিতি যেন তার গোটা জীবনটাকে বদলে দিয়েছে।
এর আগে ভারত জোড়ো এবং ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রাতেও রাহুল গান্ধীর এরকম সাধারণ মানুষদের সাথে মিশে যাওয়ার চিত্র ধরা পড়েছে। কখনো কামারশালায় কামারের সঙ্গে, তো কখনো খেতে নেমে চাষীদের সাথে। সমাজের সব শ্রেণীর মানুষের সঙ্গে রাহুল মতবিনিময় করেছেন। অভিজ্ঞ রাজনৈতিক বিশারদদের মতে যা রাহুলকে শুধু যে অভিজ্ঞতা দিয়েছে তাই নয়, কংগ্রেসের মুখ হিসাবে রাহুলকে অনেক বেশি পরিণত এবং গ্রহণযোগ্যও করে তুলেছে।
রামের দোকানে বসে যে জুতোটি সেলাই করেছিলেন রাহুল গান্ধী, সেটি আদতে রামের এক কাস্টমারের সারাই করতে দেওয়া। তবে রাম এখন তার কাস্টমারকে জুতো ফেরত দেবেন না বলেই মনস্থির করেছেন। তার পরিবর্তে সেই প্লাস্টিকের জুতোর দাম তিনি মিটিয়ে দেবেন।
ছাত্র কীরকম সেলাই করেছে প্রশ্ন করতেই, রামের মুখে অনাবিল হাসি। আর সেই হাসি বলে দিচ্ছে, শুধু সংসদের আঙিনায় নয়, জুতো সেলাই এর কারিগরিতেও ফুল মার্কস পেয়েছেন রাহুল। এক কথায় পাপ্পু এখানেও পাশ করে গিয়েছেন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া জুতো সেলাইয়ের সেই ছবি কংগ্রেস হাই কম্যান্ডকেও যেন আলাদা করে অক্সিজেন দিয়েছে। বিরোধী দলনেতা যেন সর্বজনের নেতা হয়ে উঠছেন ধীরে ধীরে। কোথাও না কোথাও গিয়ে এককালে রাজনীতির যে ঘরানার জন্য সমালোচিত হয়েছেন, আজ সেটারই উত্তর ফেরাচ্ছেন রাহুল গান্ধী।
এমনকী রামের দোকানে রাহুল আসার পরপরই উত্তরপ্রদেশ প্রশাসনের আধিকারিকরাও হাজির হয়ে গিয়েছেন। কোথাও না কোথাও গিয়ে রাহুল শুধু নিজেই যে পাস করেছেন তা নয়। দরিদ্র রামের জীবনের সমস্যাও দূর করে দিয়েছেন সংসদের বিরোধী দলনেতা।