CPIM: বদলে যাবে সমীকরণ? দলে দলে বাম শিবিরে যোগদান

প্রতিটি জেলায় একই ছবি- শাসকদল ছেড়ে দলে দলে সিপিআইএমে যোগদান চলছে! এই পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করছেন শাসকদলের ভোট ম্যানেজাররা। তবে দলত্যাগ আটকানো সম্ভব হচ্ছে না। ত্রিপুরার…

CPIM

প্রতিটি জেলায় একই ছবি- শাসকদল ছেড়ে দলে দলে সিপিআইএমে যোগদান চলছে! এই পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করছেন শাসকদলের ভোট ম্যানেজাররা। তবে দলত্যাগ আটকানো সম্ভব হচ্ছে না।

ত্রিপুরার নির্বাচনী সমীকরণ কি বদলে যাবে এমনই প্রশ্ন উঠছে। উত্তর পূর্বাঞ্চলের বাংলাভাষী অধ্যুষিত রাজ্য ত্রিপুরায় শাসকদল বিজেপি ছেড়ে প্রধান বিরোধী দল সিপিআইএমে যোগদান চলছে। এ রাজ্যে গত দুটি বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি পরপর দুবার সরকার দখলে রেখেছে। তার আগে টানা পঁচিশ বছর বামফ্রন্ট শাসনে ছিল সীমান্ত রাজ্য ত্রিপুরা।

   

গত বিধানসভা নির্বাচনে এ রাজ্যে বাম ও কংগ্রেস জোট করেও সরকার দখল করতে পারেনি। নির্বাচনী ফলাফলে দেখা গেছিল উপজাতি দল তিপ্রা মথা এক ডজনের বেশি আসনে ভোট কেটে নেওয়ায় সংশ্লিষ্ট আসনগুলিতে অল্প ব্যবধানে বিজেপি জয়ী হয়। প্রধান বিরোধী দল হয় তিপ্রা মথা। পরে তারা সরকারপক্ষে সামিল হয়। ফের প্রধান বিরোধী দলের মর্যাদা পেয়েছে সিপিআইএম।

বিজেপি শাসনে ভোট সন্ত্রাসে সংঘর্ষে রক্তাক্ত ত্রিপুরা। তবে গত নির্বাচনের পর থেকে সিপিআইএমে যোগদান বাড়ছে। রাজ্যের সমতল এলাকায় বিজেপি ও পার্বত্য উপজাতি এলাকায় তিপ্রা মথা ছেড়ে ফের বাম শিবিরে পরপর যোগদান চলছে।

এদিকে অভিযোগ, বিপুল উন্নয়নের কথা বললেও কিছুই হয়নি। উপজাতি এলাকায় খাদ্য ও পানীয় জলের সংকট বেড়েছে। কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা নেই। বিদ্যুতের স্মার্ট মিটার বসানো নিয়ে বিতর্ক প্রবল। এই মিটারে অতিরিক্ত খরচের ভুরিভুরি অভিযোগ। ফলে শাসকদল ছাড়ার হিড়িক।

Advertisements

বাগবাসা, শান্তিরবাজার, আমবাসা, নলছড়, সাব্রুমসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে বিজেপি ও তিপ্রা মথা ত্যাগ করে সিপিআইএমে যোগদান চলছে। রাজধানী আগরতলাসহ অন্যান্য জেলা ও মহকুমা শহরে চলছে বিদ্যুতের স্মার্ট মিটার বসানোর বিরোধিতা করে বিরাট বিরাট বাম মিছিল।

রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ও সিপিআইএমের শীর্ষ সাংগঠনিক নেতা মানিক সরকার জানিয়েছেন, এখন যে বিদ্যুৎ মিটার চলে তাতে কোনও সমস্যা নেই। তাহলে কেন স্মার্ট মিটার বসানোর পরিকল্পনা। তবে মুখ্যমন্ত্রী ও বিজেপি শীর্ষ নেতা ডা. মানিক সাহার দাবি, বিদ্যুতের স্মার্ট মিটারে জনতা উপকৃত হবেন। বিরোধী দলনেতা ও রাজ্য সিপিআইএম সম্পাদক জীতেন্দ্র চৌধুরীর কটাক্ষ, স্মার্ট মিটারের জুমলা।

এ রাজ্যে ২০১৮ সালে পতন হয়েছে টানা আড়াই দশকের বাম শাসন। তারপর থেকে ক্রমাগত ক্ষয় হতে শুরু করে সিপিআইএমে। ২০২৩ সালেই ব্যাপক সরকার বিরোধী ক্ষোভ থাকলেও ত্রিপুরায় শুধুমাত্র উপজাতি ভোটারদের ভোট কেটে নেয়ার সুবাদে বিজেপি ক্ষমতা ধরে রাখে। তবে এ রাজ্যে সিপিআইএম সাংগঠনিক শক্তি ধরে রেখেছে তার প্রমাণ সম্প্রতি কেন্দ্রীয় শ্রমিক সংগঠনগুলোর ডাকা ভারত বনধে বিজেপি শাসিত রাজ্যটি প্রায় অচল হয়ে গেছিল।