রহস্যময় রত্নভাণ্ডারের দরজা খোলার সানডে সাসপেন্স! পুরীর মন্দিরে এবার হাজির সাপুড়েরাও?

অবশেষে খুলতে চলেছে সেই রহস্যময় রত্ন ভান্ডারের দরজা (Puri Jagannath Temple)। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী রবিবারই খোলা হতে চলেছে পুরীর (Puri Jagannath Temple) রত্ন ভান্ডারের…

অবশেষে খুলতে চলেছে সেই রহস্যময় রত্ন ভান্ডারের দরজা (Puri Jagannath Temple)। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী রবিবারই খোলা হতে চলেছে পুরীর (Puri Jagannath Temple) রত্ন ভান্ডারের দীর্ঘদিনের বন্ধ দরজা। ২৬ বছর আগে শেষবারের মতো হিসেবপত্র করা হয়েছিল জগন্নাথ দেবের রত্ন ভান্ডারের (Puri Jagannath Temple)। যদিও ১৯৮৫ সালেও রত্ন ভান্ডারের ভিতর কক্ষের দরজা খোলা হয়েছিল। তবে সেটা শুধুমাত্র দরজা মেরামতির জন্য। হাইপ্রোফাইল অফিসার থেকে শুরু করে সাপ ধরার সাপুড়ে, সবার উপস্থিতিতে আটঘাট বেঁধেই এবার খোলা হবে রহস্যময় দরজা।

কিন্তু কী রয়েছে পুরীর অধিপতি জগন্নাথ দেবের এই রত্ন ভান্ডারে? কী কারণে এত মিথ ছড়িয়ে রয়েছে রত্ন ভান্ডার কে ঘিরে? পুরীর জগন্নাথ মন্দির (Puri Jagannath Temple) প্রশাসনের হলফনামা অনুযায়ী, পুরীর রত্ন ভান্ডারে তিনটি ভাগ রয়েছে। তিনটি কক্ষে পৃথক পৃথক ভাবে সঞ্চিত রয়েছে মহাপ্রভু জগন্নাথের রত্ন সম্পত্তি। একেবারে বাইরের কক্ষের অলংকার নিত্য পূজায় সাজসজ্জার জন্য ব্যবহার করা হয়। বিশেষ কোনো উৎসবে মধ্যের কক্ষের বিশেষ অলংকার বাইরে আনা হয়। কিন্তু একেবারে ভিতরের কক্ষের অলংকারে কোন সময়ই হাত দেওয়া হয় না। এই একেবারে ভিতরের কক্ষকে ঘিরেই যত রহস্য যত কাহিনী যত মিথ।

   

বাংলার পর এবার মুম্বাইয়েও চুটিয়ে প্রচার মমতার! মারাঠা রাজনীতিতে তৃণমূলের এন্ট্রি?

কোন গুপ্তধন রয়েছে এই ভিতরে কক্ষের রত্ন ভান্ডারে? মন্দির প্রশাসনের দেওয়া হলফনামা অনুযায়ী সেটার একটা আনুমানিক হিসেব করা হয়েছে। সেই হিসেবে অনুযায়ী ভিতরের কক্ষে ৫০.৬০০ কেজি সোনা এবং ১৩৪.৫০ কেজি রুপো রয়েছে। মধ্যবর্তী কক্ষে ৯৫.৩২০ কেজি সোনা এবং ১৯.৪৮০ কেজি রুপো রয়েছে। একেবারে বাইরের ঘরে প্রতিদিনের ব্যাবহারের জন্য ৩.৪৮০ কেজি সোনা এবং ৩০.৩৫০ কেজি রুপো রয়েছে।

কিন্তু কোনও চলতি বাজারদরের হিসাবেই এই সমস্ত সম্পত্তির মূল্যায়ন করা যাবে না বলেই মত বিশেষজ্ঞদের। কারণ বিভিন্ন অলংকারগুলির ঐতিহাসিক মূল্য যেরকম রয়েছে, সেরকমই আজকের দিনে বাজারে সেই সমস্ত গয়নার কারিগর মিলবে না বলেই মতামত অনেকের।  তবে অনেকের মতে ১৯৮৫ সালে যখন দরজা মেরামতির জন্য ভিতর ভান্ডার খোলা হয়েছিল, তখনই বেশ কিছু মূল্যবান সামগ্রী সরিয়ে নেওয়া হয়।

২০১৮ সালের জুলাইয়ে আরও একবার ভিতরকক্ষের দরজা খোলার চেষ্টা করা হলেও চাবি না পাওয়ায় খোলা যায়নি দরজা। তারপরে বহু রাজনৈতিক চাপানতোর চলেছে পুরীর রত্নভান্ডার কে ঘিরে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ থেকে শুরু করে নির্বাচনে ইস্যু, সবই হয়েছে। খোদ প্রধানমন্ত্রীও প্রচারে এসে কথা দিয়েছিলেন ভোটে জেতার পরে রত্ন ভান্ডারের দরজা খুলে হিসেব করা হবে।

শুভেন্দু-দিলীপ নয়, বঙ্গ বিজেপির সভাপতি পদে বিরাট চমক, জানলেই চমকাবেন

আর এবার সেই রত্ন ভান্ডারের দরজাই খোলা হতে চলেছে আগামী রবিবার। পুরাতত্ত্ব বিভাগ থেকে শুরু করে সুপ্রিম কোর্টের বিশেষ কমিটির সদস্যরা সবাই উপস্থিত থাকবেন সেদিন। ডুপ্লিকেট যে চাবির কথা উল্লেখ করা হচ্ছে সেটা দিয়ে যদি দরজা খোলা না যায়, তাহলে তালা ভাঙ্গা হবে এমনটাই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এমনকি পুরীতে চলে আসা বহুবছরের মিথের কথা মাথায় রেখে সাপুড়েরও ব্যবস্থা করা হচ্ছে। যদি প্রচলিত লোককথা অনুযায়ী রত্ন ভান্ডারের ভেতরে সাপ থাকে, তাহলে তা সামলাবার জন্য ভুবনেশ্বর থেকে বিশেষজ্ঞ সাপুড়েরাও উপস্থিত থাকবেন এমনটাই জানা যাচ্ছে। তবে মজার বিষয় ১৯৭৮ সালের পর ২০২৪ সালেও তিথি নক্ষত্রের একই রকম অবস্থান হতে চলেছে। হিন্দু পঞ্জিকায় যে সমস্ত লগ্ন যে সমস্ত তিথির উল্লেখ ছিল ১৯৭৮-এ, এই বছরও অনেকটাই সেইরকম তিথি-লগ্ন রয়েছে। আর তাৎপর্যপূর্ণভাবে সেই একই বছরে খোলা হতে চলেছে পুরীর সেই রহস্যময় রত্ন ভান্ডারের দরজা। আপাতত সানডে সাসপেন্সে্ সেই রহস্যের পর্দা উন্মোচনের অপেক্ষায় রয়েছেন সবাই।