“ভারতের ঐক্যের শত্রু অনুপ্রবেশকারীরা!” মোদীর ভাষণে বড় ইঙ্গিত

নয়াদিল্লি: অনুপ্রবেশকারীদের জন্য ভারতের বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্য সংকটে! বুধবার এই বিস্ফোরক দাবি করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi)। “অনুপ্রবেশকারীদের জন্যই দেশের জনবিন্যাস পরিবর্তিত হচ্ছে। যার…

নয়াদিল্লি: অনুপ্রবেশকারীদের জন্য ভারতের বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্য সংকটে! বুধবার এই বিস্ফোরক দাবি করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi)। “অনুপ্রবেশকারীদের জন্যই দেশের জনবিন্যাস পরিবর্তিত হচ্ছে। যার সরাসরি প্রভাব সামাজিক ঐক্য এবং অভ্যন্তরীণ সুরক্ষার উপর আঘাত হানছে”, বলে উল্লেখ করলেন তিনি।

Advertisements

বিজেপির আদর্শিক গুরু রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (RSS) শতবর্ষ উদযাপন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্য তাঁর স্বাধীনতা দিবসের ভাষণের পুনরাবৃত্তি। ১৫ আগস্টের ভাষণে প্রধানমন্ত্রী যুবকদের জীবিকা কেড়ে নেওয়া এবং মহিলাদের ‘টার্গেট’ করা হচ্ছে বলে অনুপ্রবেশকারীদের দুষেছেন। তাঁদের হাত থেকে ভারতীয় নাগরিকদের ‘রক্ষা’ করার জন্য “জনবিন্যাস মিশন”-এর ঘোষণা করেছিলেন মোদী।

   

এদিনের মত স্বাধীনতা দিবসের ভাষণেও মূলত সংখ্যালঘুদেরকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছিলেন মোদী, বলে দাবি করেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। ‘অনুপ্রবেশকারি’-র নামে বাংলার মুসলিমদের দেশ থেকে ‘তাড়াতে’ চায় বিজেপি (BJP) বলে সুর চড়িয়ে আসছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অন্যদিকে, বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারীদের মমতা ‘আশ্রয়’ দিয়ে ভোটব্যাংক বাড়াচ্ছেন বলে অভিযোগ নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi) সহ গেরুয়া শিবিরের।

বিজেপির ‘অনুপ্রবেশকারী’ অভিযোগের প্রেক্ষিতে মমতার (Mamata Banerjee) বক্তব্য ছিল, সীমান্ত রক্ষার দায়িত্ব কেন্দ্রের। যদি অসম, পশ্চিমবঙ্গের মত বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী রাজ্যে অনুপ্রবেশ ঘটেই থাকে, তাহলে তা কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের গাফিলতির জন্যই হয়েছে বলে পাল্টা তোপ দেগে আসছে তৃণমূল কংগ্রেস। প্রসঙ্গত, বছর ঘুরলেই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। বিহারের ভোটার তালিকায় বিশেষ নিবিড় সংশোধনর (SIR) ঢেউ আছড়ে পড়বে পশ্চিমবঙ্গেও। ইতিমধ্যেই তার প্রস্তুতিও শুরু হয়ে গিয়েছে।

বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে পশ্চিমবঙ্গে ‘অনুপ্রবেশ’ অভিযোগ সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক ইস্যু। একদিকে বিজেপি অনুপ্রবেশকারী বিহীন নির্বাচনের পক্ষে সুর চড়াচ্ছে। অন্যদিকে, এসআইআর-এর নামে ভোটার তালিকা থেকে বিজেপির মানুষের নাম বাদ দেওয়ার চক্রান্ত এবং ঘুরপথে ‘এনআরসি'(NRC) ঢোকানো হচ্ছে বলে পাল্টা সরব রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস (TMC)। নবমীর ভাষণে মোদীর মুখে ‘অনুপ্রবেশকারী’ পশ্চিমবঙ্গের আসন্ন নির্বাচনকেই উদ্দেশ্য করছে বলে মনে করছেন রাজনীতিকরা।

এদিন পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন যে আরএসএস ১০০ বছর আগে বিজয়াদশমীতে (যা এই বছর বৃহস্পতিবার পড়েছে) প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এই উৎসবের প্রতীক হিসেবে মন্দের উপর ভালোর, মিথ্যার উপর সত্যের এবং অন্ধকারের উপর আলোর বিজয়ের কথা তুলে ধরেন মোদী। অর্থাৎ, পুজোর পরেই যে পশ্চিমবঙ্গে নিজেদের শক্তি আরও মজবুত করতে চলেছে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি, মোদীর এদিনের ভাষণে তা কার্যত স্পষ্ট।