জম্মু ও কাশ্মীরের বুদগামে জঙ্গি হামলায় গুলিবিদ্ধ দুই পরিযায়ী শ্রমিক

জম্মু ও কাশ্মীরের বুদগাম জেলায় বৃহস্পতিবার আবারও জঙ্গি হামলার (Terrorist Attack in Budgam) শিকার হলেন দুই পরিযায়ী শ্রমিক। উত্তরপ্রদেশ থেকে আগত ওই দুই শ্রমিককে গুলি…

Terrorist Attack in Budgam

জম্মু ও কাশ্মীরের বুদগাম জেলায় বৃহস্পতিবার আবারও জঙ্গি হামলার (Terrorist Attack in Budgam) শিকার হলেন দুই পরিযায়ী শ্রমিক। উত্তরপ্রদেশ থেকে আগত ওই দুই শ্রমিককে গুলি করা হয়, তবে তারা বর্তমানে আশঙ্কামুক্ত রয়েছেন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।  পুলিশের মতে, এই ঘটনাটি গত দুই সপ্তাহে কাশ্মীর উপত্যকায় পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর চতুর্থ আক্রমণ।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বুদগামের এই হামলায় আহত শ্রমিকদের মধ্যে রয়েছেন ২০ বছর বয়সী উসমান মালিক এবং ২৫ বছর বয়সী সাফিয়ান। আহতদের দ্রুত স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, এবং প্রাথমিক চিকিৎসার পর জানানো হয়, তারা বিপদমুক্ত।

   

সাম্প্রতিক আক্রমণগুলির ক্রমবর্ধমান স্রোত
গত দুই সপ্তাহে পরিযায়ী শ্রমিকদের ওপর জঙ্গি হামলার ঘটনা উদ্বেগজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর আক্রমণটি ঘটে ২০ অক্টোবর, যখন জঙ্গিরা গ্যান্ডেরবল জেলার একটি টানেল নির্মাণস্থলে হামলা চালিয়ে সাতজনকে হত্যা করে। নিহতদের মধ্যে একজন স্থানীয় চিকিৎসক এবং বিহার থেকে আগত দুই শ্রমিকও ছিলেন।

জঙ্গিদের পরিচয় ও প্রেক্ষাপট
এই হামলাগুলির পেছনে কারা রয়েছে, সেই বিষয়ে পুলিশের তদন্তে কিছু তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। ২০ অক্টোবরের ঘটনায় অভিযুক্ত দুই জঙ্গির মধ্যে একজন দক্ষিণ কাশ্মীরের কুলগামের বাসিন্দা, যিনি ২০২৩ সালে একটি জঙ্গি সংগঠনে যোগ দিয়েছিলেন। অপরজন সম্ভবত পাকিস্তান থেকে এসেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সম্প্রতি গুলমার্গ অঞ্চলের বোটা পথরিতে জঙ্গি হামলার ঘটনার সাথে যুক্ত জঙ্গিরা আগস্ট মাস থেকেই আফরাওয়াত পর্বতের উঁচু অঞ্চলে লুকিয়ে ছিল বলে ধারণা করছে নিরাপত্তা বাহিনী। এই হামলায় দুজন ভারতীয় সেনা ও দুইজন শ্রমিক প্রাণ হারান।

উপত্যকায় পরিযায়ী শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ
কাশ্মীর উপত্যকায় পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর একের পর এক হামলা এবং তাদের টার্গেট করে জঙ্গি কার্যকলাপ বাড়তে থাকায় নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ আরও বেড়েছে। সাম্প্রতিক হামলাগুলি এই অঞ্চলের স্থিতিশীলতায় বড় ধরনের আঘাত হেনেছে এবং সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে পরিযায়ী শ্রমিকরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে।

বিশ্লেষকদের মতে, জঙ্গিরা সুনির্দিষ্টভাবে পরিযায়ী শ্রমিকদের লক্ষ্য করে আক্রমণ চালাচ্ছে, যা উপত্যকায় সাধারণ মানুষের জীবনে স্থায়ী প্রভাব ফেলছে। পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনী হামলাগুলির পেছনের জঙ্গিদের শনাক্ত করতে এবং তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে তৎপর রয়েছে। কাশ্মীর উপত্যকায় শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে আস্থা ফিরিয়ে আনতে বিশেষ নজরদারি এবং টহলের মাধ্যমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চলছে।

কাশ্মীরের পরিস্থিতি আরও নিয়ন্ত্রণে আনতে সরকার এবং নিরাপত্তা সংস্থাগুলি একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করছে, কিন্তু জঙ্গি হামলাগুলি নিরীহ নাগরিকদের জীবনে প্রতিনিয়ত আতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টি করছে।