বিহারের সাহারসা জেলার বাঙ্গাঁও গ্রামে এক মন্দিরকে ‘গঙ্গাজল’ দিয়ে ধোওয়া হওয়ার ঘটনা সামনে এসেছে, যা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে গেছে। বুধবার কংগ্রেস নেতা কানহাইয়া কুমারের (Kanhaiya Kumar) গ্রামে আগমনের পর এই ঘটনা ঘটেছিল। কানহাইয়া কুমার তার চলমান ‘পালায়ন রোকো, রাজগার দো’ (মাইগ্রেশন থামাও, চাকরি দাও) যাত্রার অংশ হিসেবে বাঙ্গাঁও গ্রামে এসেছিলেন। তিনি গ্রামবাসীদের সঙ্গে একটি সভায় অংশ নেন এবং তারপর মন্দিরে গিয়েছিলেন।
কানহাইয়া কুমার, যিনি আধিকারিকভাবে ভারতের সর্বাধিক প্রভাবশালী অভিজাত ভূমিহার সম্প্রদায়ের সদস্য, সেখানে গ্রামবাসীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন। এর পরে, তিনি কিছু লোকের সঙ্গে দেখা করে পরবর্তী গন্তব্যে রওনা হন। কানহাইয়াকে গ্রামে এসে কিছু লোক ঐতিহ্যবাহী পাগড়ি এবং মালা দিয়ে অভ্যর্থনা জানায়। তবে, কানহাইয়ার গ্রাম ছাড়ার পর মন্দিরের আঙ্গিনাটি ধোয়া শুরু হয়।
ভিডিওতে দেখা যায় যে, কিছু লোক মন্দিরের জমি ধোওয়ার জন্য বালতিতে পানি নিয়ে আসছে। শুক্রবার, কিছু যুবক আবারও মন্দিরে গিয়ে সেখানে ‘গঙ্গাজল’ ছিটিয়ে ধোওয়ার কাজ শুরু করে। এই কাজটি allegedly, বাঙ্গাঁও নগর পঞ্চায়েতের এক ওয়ার্ড কাউন্সিলরের প্রতিনিধি, অমিত চৌধুরী’র নির্দেশে করা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান যে, কংগ্রেস নেতা কানহাইয়া কুমারের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে তাদের অসন্তোষ রয়েছে। তিনি যখন জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের (জেএনইউ) ছাত্র সংসদের সভাপতি ছিলেন, তখন তার বিরুদ্ধে দেশদ্রোহী মন্তব্য করার অভিযোগ উঠেছিল। এই ঘটনায় তিনি আরও বিতর্কিত হয়ে ওঠেন। স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, “আমরা তাকে কখনোই ক্ষমা করব না। তার অপরাধ এখনও মেটেনি।”
এই ঘটনাটি কংগ্রেস ও বিজেপির মধ্যে তীব্র রাজনৈতিক বিতর্কের সৃষ্টি করেছে। কংগ্রেস নেতারা অভিযোগ করেছেন যে, বিজেপি তাদের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ‘অচ্ছুত’ বানানোর চেষ্টা করছে। অপরদিকে, বিজেপি দাবি করেছে যে, এই ঘটনা কানহাইয়া কুমারের রাজনীতির প্রতি জনগণের প্রত্যাখ্যানের প্রকাশ। বিজেপি নেতারা বলেন, কানহাইয়ার বিরুদ্ধে জনগণের যে ক্ষোভ রয়েছে, তা এই ঘটনায় স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
এদিকে, এই ধরনের ঘটনায় মন্দিরকে ধোওয়ার ঘটনা রাজনীতির বাইরেও একটি সাংস্কৃতিক দৃষ্টিকোণ থেকেও আলোচনা সৃষ্টি করেছে। কিছু বিশ্লেষক মনে করছেন যে, এটি একটি সংস্কৃতি সংক্রান্ত অসহিষ্ণুতার প্রকাশ। তবে, এটি আরো একটি রাজনৈতিক কৌশল হতে পারে, যার মাধ্যমে নিজ নিজ রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি প্রতিফলিত করার চেষ্টা চলছে।
এতদিনের রাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যে, বিহারের এই ঘটনা জাতীয় রাজনীতির দিকে আরো একবার সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে, এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মধ্যে উত্তপ্ত বিতর্ক সৃষ্টি করেছে।