পাটনা: বিহার বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যের রাজনৈতিক পরিবেশ আরও গরম হতে শুরু করেছে। শুক্রবার, আরজেডি নেতা ও প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদব (Tejashwi Yadav) একাধিক জনমুখী প্রতিশ্রুতি দিয়ে নির্বাচনী প্রচার শুরু করেন। তিনি বলেন, “আমরা ক্ষমতায় এলে বিহারের সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত করব। এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডারের দাম নামানো হবে মাত্র ৫০০ টাকায়, আর বার্ধক্য ভাতা বাড়িয়ে দেওয়া হবে ১,৫০০ টাকা।”
তেজস্বীর দাবি, যদি মহাগঠবন্ধন ক্ষমতায় আসে, তাহলে বিহারে একটি “দুর্নীতিমুক্ত ও অপরাধমুক্ত সরকার” গঠন করা হবে। সাংবাদিক বৈঠকে তিনি আরও বলেন, “আমাদের সরকার মানুষের কথা শুনবে, মানুষের জন্য কাজ করবে। সাশ্রয়ী ওষুধ, কর্মসংস্থান এবং শিক্ষা নিশ্চিত করা হবে।”
তিনি বিজেপির বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানিয়ে বলেন, “বিজেপি গুজরাটে কারখানা খোলে, কিন্তু জয়ের আশা করে বিহারে। এভাবে আর চলবে না। প্রধানমন্ত্রী নিজেই ৫৫টি দুর্নীতির ঘটনা নীতীশ সরকারের বিরুদ্ধে বলেছেন। তাহলে তিনি ব্যবস্থা নিলেন না কেন?”
তেজস্বী অভিযোগ করেন, বিজেপি-শাসিত রাজ্যগুলিতেই সবচেয়ে বেশি অপরাধ ঘটে। তাঁর কথায়, “‘জঙ্গল রাজ’ তখনই হয় যখন দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয় না, আর অপরাধীরা রাস্তায় ঘোরে।”
নিজের রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি নিয়ে তিনি আত্মবিশ্বাসীভাবে বলেন, “আমি মিথ্যা বলি না। যা বলি, তা করি। যদি মহাগঠবন্ধন জেতে, তাহলে জনগণের মুখ্যমন্ত্রী হবে তেজস্বী যাদব। বিহারে আমি শিক্ষা, চিকিৎসা ও চাকরির নিশ্চয়তা দেব।”
এই প্রতিশ্রুতির জেরে বিহারের রাজনীতিতে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। বিরোধী দল বিজেপি বলেছে, তেজস্বীর প্রতিশ্রুতি সম্পূর্ণ অবাস্তব এবং ভোটের আগে মানুষের মন জয় করার কৌশল মাত্র। তবে বিশ্লেষকদের মতে, মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত ভোটারদের মধ্যে এই প্রতিশ্রুতি ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
বর্তমানে এলপিজি সিলিন্ডারের দাম বৃদ্ধি সাধারণ মানুষের গৃহস্থালি বাজেটে বিশাল চাপ সৃষ্টি করেছে। তেজস্বীর এই উদ্যোগ জনসাধারণের দৈনন্দিন সমস্যার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত। পাশাপাশি, ১,৫০০ টাকার বার্ধক্য ভাতা বৃদ্ধির প্রতিশ্রুতি প্রবীণ নাগরিকদের সামাজিক সুরক্ষায় বড় ভূমিকা নিতে পারে।
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, এই প্রতিশ্রুতিগুলি বিহারে ভোটারদের মধ্যে নতুন আশার সঞ্চার করেছে। অনেকেই মনে করছেন, এই পদক্ষেপগুলি কার্যকর হলে বিহারের সামাজিক ও অর্থনৈতিক চিত্র অনেকটাই বদলে যেতে পারে।


