বিহার, ২২ অক্টোবর: বিহারের রাজনীতিতে উত্তেজনা বাড়ছে। রাষ্ট্রীয় জনতা দলের (RJD) নেতৃবৃন্দের মধ্যে অন্যতম তেজস্বী যাদব (Tejashwi Yadav) বুধবার ঘোষণা করলেন একাধিক বড় নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি। তিনি ঘোষণা করেন, “জীবিকা দিদি” নামক স্বনির্ভরতা গোষ্ঠীর নারী সদস্যদের সরকারি চাকরির মর্যাদা দেওয়া হবে এবং তাঁদের বেতন মাসিক ৩০ হাজার টাকা করা হবে।
তেজস্বী যাদব বলেন, “আমরা বিহারের বিভিন্ন জেলায় গিয়েছি। জীবিকা দিদিদের সঙ্গে কথা হয়েছে। তাঁদের সমস্যা শুনে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, সমস্ত ‘জীবিকা কমিউনিটি মোবিলাইজার’ দিদিদের স্থায়ী সরকারি কর্মচারীর মর্যাদা দেওয়া হবে। শুধু তাই নয়, তাঁদের বেতনও আমরা বাড়িয়ে মাসে ৩০,০০০ টাকা করব।” জীবিকা দিদি হলেন সেই সব নারী সদস্য যারা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর (self-help groups) মাধ্যমে দরিদ্র মহিলাদের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের কাজ করেন। বিহারে এই প্রকল্পটি মূলত নারীর ক্ষমতায়ন এবং আত্মনির্ভরতার লক্ষ্যে চালানো হয়। জীবিকা দিদিরা স্থানীয় পর্যায়ে গৃহীত বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করেন, যেমন ক্ষুদ্রঋণ বিতরণ, ক্ষুদ্রব্যবসা সমর্থন, স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধি ইত্যাদি।
এখন পর্যন্ত জীবিকা দিদিরা এই কাজের জন্য সরকারি কর্মচারীর মর্যাদা পাননি এবং তাঁদের বেতনও সীমিত ছিল। বহু বছর ধরে তাঁরা সেবামূলক কাজ করলেও, আয়ের স্থায়িত্ব না থাকার কারণে অসংখ্য জীবিকা দিদি আর্থিক সমস্যায় ভুগছেন। তেজস্বী যাদবের এই ঘোষণাকে ইতিবাচকভাবে দেখা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, স্থায়ী চাকরি ও বেতন বৃদ্ধির মাধ্যমে জীবিকা দিদিদের আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে, তাঁদের সামাজিক মর্যাদা বাড়বে এবং দীর্ঘমেয়াদে নারীর ক্ষমতায়ন সম্ভব হবে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, বিহারের নির্বাচনে এই ধরনের প্রতিশ্রুতি প্রভাব ফেলতে পারে, বিশেষ করে গ্রামীণ নারী ভোটারদের মধ্যে। জীবিকা দিদিরা নিজেই এক বৃহৎ ভোট ব্যাংক গঠন করেন, যাদের মন জয় করা প্রতিটি রাজনৈতিক দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এক প্রেস কনফারেন্সে তেজস্বী বলেন, “জীবিকা দিদিরা আমাদের সমাজের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তাদেরকে সরকারি কর্মচারীর মর্যাদা দেওয়া আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। আমি বিশ্বাস করি, তাদের আর্থিক নিরাপত্তা ও মর্যাদা বৃদ্ধির মাধ্যমে আমরা বিহারের নারীদের ক্ষমতায়নের পথ সুগম করব।”