Tejashwi Targets Nitish Kumar Over Allegations of Financial Mismanagement
রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি) নেতা তেজস্বী যাদব (tejashwi) শুক্রবার পাটনায় একটি সাংবাদিক সম্মেলনে বিহারে আর্থিক অরাজকতা এবং সরকারি তহবিলের অপব্যবহার নিয়ে গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন। তিনি দাবি করেছেন যে রাজ্যে প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতি এবং সংগঠিত লুণ্ঠনের ফলে আর্থিক বিশৃঙ্খলার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তাঁর বক্তব্য রাজ্যের শাসক দল এবং প্রশাসনের বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনার জন্ম দিয়েছে এবং বিহারের রাজনৈতিক মহলে নতুন বিতর্কের সূচনা করেছে।
তেজস্বী যাদব (tejashwi) বলেন
সাংবাদিক সম্মেলনে তেজস্বী যাদব (tejashwi) বলেন, “আমরা আজ এই সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করেছি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে। সরকারের নিজস্ব তথ্য অনুযায়ী, প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতি এবং সংগঠিত লুণ্ঠনের কারণে বিহারে আর্থিক অরাজকতার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
গত ডিসেম্বর থেকে প্রায় ৬ থেকে ৭টি মন্ত্রিসভার বৈঠক হয়েছে, এবং এই বৈঠকগুলোতে ৭৬,৬২২ কোটি টাকার প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এই প্রকল্পগুলোর অধিকাংশই কেবল নির্মাণ প্রকল্পের সঙ্গে সম্পর্কিত।” তিনি আরও অভিযোগ করেন যে এই বিপুল পরিমাণ অর্থের বরাদ্দে স্বচ্ছতার অভাব রয়েছে এবং এটি রাজ্যের জনগণের স্বার্থের পরিবর্তে নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর লাভের জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে।
দুর্নীতির অভিযোগ ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট
তেজস্বী যাদবের (tejashwi) এই অভিযোগ বিহারের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ। বিহারে নীতীশ কুমারের নেতৃত্বাধীন জনতা দল (ইউনাইটেড) এবং ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)-র জোট সরকার ক্ষমতায় রয়েছে। তেজস্বী, যিনি আরজেডি-র প্রধান মুখ এবং রাজ্যের বিরোধী দলনেতা, দীর্ঘদিন ধরে এই সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি এবং প্রশাসনিক অব্যবস্থাপনার অভিযোগ তুলে আসছেন। তিনি পূর্বেও দাবি করেছেন যে রাজ্যে ভ্রষ্টাচারীদের প্রশ্রয় দেওয়া হচ্ছে এবং সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা ও কল্যাণের প্রতি সরকার উদাসীন।
তাঁর সাম্প্রতিক বক্তব্যে তেজস্বী (tejashwi) আরও জানান যে, এই বিপুল অর্থের প্রকল্পগুলোর বেশিরভাগই নির্মাণ খাতের সঙ্গে যুক্ত, যেখানে দরপত্র প্রক্রিয়া এবং বরাদ্দের ক্ষেত্রে ব্যাপক অনিয়মের সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, “এই প্রকল্পগুলোর জন্য কতটা স্বচ্ছভাবে দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে? এই অর্থ কি সত্যিই রাজ্যের উন্নয়নের জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে, নাকি কিছু নির্দিষ্ট ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর পকেটে যাচ্ছে?” তিনি এই বিষয়ে স্বাধীন তদন্তের দাবি জানিয়েছেন এবং জনগণের কাছে সরকারের এই কার্যকলাপের সমালোচনা করার আহ্বান জানিয়েছেন।
হাসপাতালে ভর্তি পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়, হঠাৎ অসুস্থতা ঘিরে উদ্বেগ
ফুলে’ বিতর্কে ক্ষমা প্রার্থনা অনুরাগের, বয়কটের ডাক ব্রাহ্মণ সমাজের
সরকারের প্রতিক্রিয়া এবং জনমত
সরকারের পক্ষ থেকে এখনও তেজস্বীর এই অভিযোগের বিরুদ্ধে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি। তবে, অতীতে নীতীশ কুমার এবং তাঁর সরকার তেজস্বীর অভিযোগগুলোকে “রাজনৈতিক প্ররোচনা” হিসেবে উড়িয়ে দিয়েছেন। সরকারের দাবি, তাঁরা রাজ্যের উন্নয়নের জন্য নিরলসভাবে কাজ করছে এবং নির্মাণ প্রকল্পগুলো রাজ্যের অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য অপরিহার্য।
সামাজিক মাধ্যমে, বিশেষ করে এক্স প্ল্যাটফর্মে, তেজস্বীর বক্তব্য নিয়ে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে। তাঁর সমর্থকরা এই অভিযোগকে বিহারে শাসক দলের “দুর্নীতির প্রমাণ” হিসেবে উল্লেখ করছেন। একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, “তেজস্বী যাদব সঠিক প্রশ্ন তুলেছেন। ৭৬,৬২২ কোটি টাকার প্রকল্পে কীভাবে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা হচ্ছে? জনগণের টাকা লুট হচ্ছে!” অন্যদিকে, শাসক দলের সমর্থকরা তেজস্বীর বক্তব্যকে “ভিত্তিহীন” এবং “নির্বাচনী প্রচারণা” হিসেবে অভিহিত করেছেন।
বিহারের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট
বিহারে আগামী বছরগুলোতে বিধানসভা নির্বাচনের সম্ভাবনা রয়েছে, এবং তেজস্বী যাদবের এই ধরনের বক্তব্য রাজনৈতিক উত্তাপ বাড়িয়ে তুলছে। আরজেডি, যিনি ২০২০ সালের নির্বাচনে তরুণ ভোটারদের মধ্যে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন, বিশেষ করে তাঁর “রোজগারের প্রতিশ্রুতি” প্রচারণার মাধ্যমে, এখন দুর্নীতি এবং প্রশাসনিক ব্যর্থতার বিষয়গুলোকে তুলে ধরে শাসক দলকে চাপে রাখার চেষ্টা করছে। তেজস্বী পূর্বেও অভিযোগ করেছেন যে নীতীশ কুমারের সরকার দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছে এবং জনগণের স্বার্থের প্রতি উদাসীন।
আগামী দিনের সম্ভাবনা
তেজস্বী যাদবের এই অভিযোগ বিহারের রাজনীতিতে নতুন মোড় আনতে পারে। তিনি স্বাধীন তদন্তের দাবি জানিয়েছেন, এবং এই বিষয়ে আরজেডি আগামী দিনে জনসমাবেশ এবং প্রতিবাদের পরিকল্পনা করতে পারে। অন্যদিকে, শাসক জোট এই অভিযোগের জবাবে কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানায়, তা রাজ্যের রাজনৈতিক গতিপ্রকৃতি নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
এই ঘটনা বিহারের জনগণের মধ্যে সরকারি তহবিলের ব্যবহার এবং প্রশাসনিক স্বচ্ছতা নিয়ে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। তেজস্বী যাদবের এই সাংবাদিক সম্মেলন কেবল রাজনৈতিক অভিযোগের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি রাজ্যের শাসনব্যবস্থার দায়বদ্ধতা এবং জনগণের প্রতি সরকারের দায়িত্বের প্রশ্ন তুলেছে। আগামী দিনে এই বিতর্ক কীভাবে উন্মোচিত হয়, তা বিহারের রাজনীতি এবং জনমানসের উপর গভীর প্রভাব ফেলবে।