বিহারের বিরোধী দলনেতা এবং রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি) নেতা তেজস্বী যাদব (tejashwi) শুক্রবার গভীর রাতে এক ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনার ঘটনায় অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে গেছেন। বিহারের বৈশালী জেলার গোরাউলের কাছে পাটনা-মুজাফফরপুর জাতীয় মহাসড়ক (এনএইচ-২২)-এ তাঁর কনভয়ের দুটি গাড়ির সঙ্গে একটি দ্রুতগামী ট্রাকের সংঘর্ষে তিনজন নিরাপত্তাকর্মী আহত হয়েছেন। ট্রাকের চালক এবং তাঁর সহকারীকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে এবং ঘটনার তদন্ত চলছে।
ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার (৭ জুন, ২০২৫) ভোররাত প্রায় ১:৩০ নাগাদ, যখন তেজস্বী যাদব (tejashwi)মাধেপুরায় একটি অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে পাটনা ফিরছিলেন। তিনি জানিয়েছেন, “আমরা মাধেপুরা থেকে পাটনা ফিরছিলাম। গোরাউলের কাছে একটি রাস্তার ধারের খাবারের দোকানে চা খাওয়ার জন্য আমাদের কনভয় থামে।
আমরা দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় একটি ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে আমার কনভয়ের দুই থেকে তিনটি গাড়িতে ধাক্কা দেয়। আমার ঠিক সামনে এই ঘটনা ঘটে। তিনজন নিরাপত্তাকর্মী আহত হয়েছেন।” তিনি আরও বলেন, “ট্রাকটি আমার থেকে মাত্র পাঁচ ফুট দূরে গাড়িগুলোতে ধাক্কা মেরেছে। আরেকটু এগোলে আমিও আঘাত পেতে পারতাম।”
দুর্ঘটনার পর তেজস্বী যাদব (tejashwi) আহত নিরাপত্তাকর্মীদের দেখতে হাজিপুরের সদর হাসপাতালে যান। তাঁর সঙ্গে ছিলেন আরজেডি বিধায়ক ড. মুকেশ রোশন এবং বৈশালীর সিভিল সার্জন। হাসপাতালে আহতদের অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানানো হয়েছে। তেজস্বী এই ঘটনাকে “ভয়াবহ” এবং “অবহেলার স্পষ্ট উদাহরণ” বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, “ভারতে সড়ক দুর্ঘটনা ক্রমশ সাধারণ হয়ে উঠছে এবং এর ফলে প্রচুর মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে।”
পুলিশ জানিয়েছে, দুর্ঘটনাটি গোরাউল টোল প্লাজার কাছে ঘটে, যখন কনভয়টি চা খাওয়ার জন্য থামে। ট্রাকটি নিয়ন্ত্রণ(tejashwi) হারিয়ে কনভয়ের গাড়িগুলোতে পেছন থেকে ধাক্কা দেয়, যার ফলে ঘটনাস্থলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। ট্রাকের চালক ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেও সরাই থানার পুলিশ তাকে টোল গেটের কাছে গ্রেপ্তার করে। চালক এবং তাঁর সহকারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। পুলিশ তেজস্বী যাদবের কাছে জানতে চেয়েছে, তাঁর নিরাপত্তায় কোনও ত্রুটি ছিল কিনা, তবে তিনি এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেননি।
এই ঘটনা রাজনৈতিক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে। আরজেডি নেতা ও কর্মীরা তেজস্বী যাদবের(tejashwi) নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং তাঁর নিরাপত্তা ব্যবস্থার পর্যাপ্ততা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। বিরোধী দলের নেতারা এই ঘটনাকে “চমকপ্রদ” এবং রাজ্যের নিরাপত্তা ব্যবস্থার “ব্যর্থতা” বলে সমালোচনা করেছেন। তারা আহত নিরাপত্তাকর্মীদের প্রতি সংহতি জানিয়েছেন। এক্স-এ পোস্ট করা কিছু মন্তব্যে এই ঘটনাকে বড় ধরনের ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত হিসেবে দেখা হচ্ছে, তবে এই দাবিগুলো এখনও অপ্রমাণিত।
তেজস্বী যাদবের (tejashwi)নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে এই ঘটনা নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে। আরজেডি সমর্থকদের মধ্যে এই আশঙ্কা দেখা দিয়েছে যে এই দুর্ঘটনা কেবল দুর্ঘটনা নাও হতে পারে। তবে পুলিশ এখনও তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে এবং ঘটনার পেছনের সঠিক কারণ নির্ধারণের চেষ্টা করছে।
এই ঘটনা বিহারের রাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে তাৎপর্যপূর্ণ।
তেজস্বী যাদব, (tejashwi)বিহার বিধানসভার বিরোধী দলনেতা হিসেবে, রাজ্যের রাজনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। সম্প্রতি তিনি মহারাষ্ট্রের নির্বাচন নিয়ে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর পাশে দাঁড়িয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে নির্বাচনী জালিয়াতির অভিযোগ তুলেছেন। এই ঘটনার পর তাঁর নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ আরও বেড়েছে।
এই দুর্ঘটনা ভারতে সড়ক নিরাপত্তার বিষয়টিকেও সামনে এনেছে। তেজস্বী নিজেই বলেছেন, সড়ক দুর্ঘটনা দেশে একটি গুরুতর সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভারতের জাতীয় মহাসড়কগুলোতে প্রায়ই এ ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে, যার পেছনে চালকের অবহেলা, অতিরিক্ত গতি এবং নিরাপত্তা নিয়মের অপ্রতুল প্রয়োগ দায়ী। এই ঘটনা সড়ক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার প্রয়োজনীয়তার উপর আলোকপাত করে।
বিমান চালাতে নারাজ পাইলট, যাত্রা বিলম্ব একনাথের
তেজস্বী যাদবের (tejashwi)এই ঘটনায় সুস্থ থাকা তাঁর সমর্থকদের মধ্যে স্বস্তি এনেছে, তবে আহত নিরাপত্তাকর্মীদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করা হচ্ছে। তিনি হাসপাতালে গিয়ে আহতদের সঙ্গে দেখা করে তাঁদের সুস্থতার জন্য শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। এই ঘটনা রাজনৈতিক মহলে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে এবং বিহারের নিরাপত্তা ব্যবস্থার উপর নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে। তদন্তের ফলাফল এবং ট্রাক চালকের জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে ঘটনার পেছনের প্রকৃত কারণ উদঘাটিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এই ঘটনা বিহারের রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিস্থিতির উপরও প্রভাব ফেলতে পারে। তেজস্বী যাদবের নেতৃত্বে আরজেডি রাজ্যে বিরোধী দল হিসেবে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছে। এই ধরনের ঘটনা তাঁর নিরাপত্তা এবং রাজনৈতিক কার্যক্রমের উপর প্রভাব ফেলতে পারে। তবে তিনি নিজে এই ঘটনার পরেও তাঁর দায়িত্ব পালনে অটল থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। আগামী দিনে এই ঘটনা রাজ্যের রাজনীতিতে কীভাবে প্রভাব ফেলে, তা দেখার বিষয়।