মিগ-২১-এর বিদায়ের প্রস্তুতি, নালিয়া বিমানঘাঁটিতে মোতায়েন হবে Tejas MK 1A

Tejas MK 1A: গুজরাটের উপকূলীয় অঞ্চলে অবস্থিত ভারতীয় বায়ুসেনার কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ বিমান ঘাঁটি নালিয়া এখন Tejas MK 1A-এর মতো অত্যাধুনিক দেশীয় যুদ্ধবিমান মোতায়েনের প্রস্তুতি নিচ্ছে।…

Tejas-MK1

Tejas MK 1A: গুজরাটের উপকূলীয় অঞ্চলে অবস্থিত ভারতীয় বায়ুসেনার কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ বিমান ঘাঁটি নালিয়া এখন Tejas MK 1A-এর মতো অত্যাধুনিক দেশীয় যুদ্ধবিমান মোতায়েনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এই পদক্ষেপকে বায়ুসেনার আধুনিকীকরণের দিকে একটি বড় পরিবর্তন হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। যেখানে এখনও পর্যন্ত মিগ-২ বিমান মোতায়েন করা হত। পাকিস্তান সীমান্তের কাছে অবস্থিত এবং সংবেদনশীল ‘Sir Creek’ এলাকা থেকে মাত্র ১০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই বিমানঘাঁটি ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় বায়ু প্রতিরক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

এই পদক্ষেপ ভারতের পশ্চিম সীমান্তে আকাশপথে নজরদারি, প্রতিশোধ এবং আক্রমণাত্মক কৌশলকে নতুন মাত্রা দেবে। ‘স্যার ক্রিক’ সম্পর্কে বললে ভারত ও পাকিস্তান সীমান্তে ৯৬ কিলোমিটার দীর্ঘ ‘জোয়ারের মোহনা’ রয়েছে, অর্থাৎ একটি উপকূলীয় অঞ্চল যেখানে নদীর মিষ্টি জল সমুদ্রের লবণাক্ত জলের সাথে মিলিত হয় এবং জোয়ারের কারণে সেখানকার জলস্তর পরিবর্তিত হয়।

এটি গুজরাটের কচ্ছ জেলা এবং পাকিস্তানের সিন্ধু দ্বারা সীমাবদ্ধ। এখানে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সীমান্ত নিয়ে বিরোধ রয়েছে। ভারতের গুজরাটকে পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশ থেকে পৃথককারী কচ্ছের রানের ৯৬ কিলোমিটার দীর্ঘ মোহনা নিয়ে এই বিরোধ। ভারত-পাকিস্তান সীমান্তের কাছাকাছি থাকার কারণে, এই বিমানঘাঁটি ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় বায়ু প্রতিরক্ষা শৃঙ্খলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

নালিয়া বিমানঘাঁটিতে তেজস এমকে১এ মোতায়েন
এই অঞ্চলের কৌশলগত গুরুত্বের কারণে, নালিয়া সরাসরি পাকিস্তানের মাসরুর বিমানঘাঁটির সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে, যা করাচির কাছে অবস্থিত পাকিস্তান নৌবাহিনী এবং বায়ুসেনার একটি প্রধান সামরিক ঘাঁটি। পাকিস্তান বায়ুসেনা মাসরুর বিমান ঘাঁটি থেকে তাদের যুদ্ধ অভিযান পরিচালনা করছে। এমন পরিস্থিতিতে, ভারতীয় বায়ুসেনার তেজস Mk1A মোতায়েন নালিয়াকে মাসরুর বিমানঘাঁটির বিরুদ্ধে একটি শক্তিশালী এবং কৌশলগত প্রতিপক্ষ করে তুলবে।

তবে, নালিয়া বিমানঘাঁটি ইতিমধ্যেই তেজস এমকে১-এর চূড়ান্ত অপারেশনাল ক্লিয়ারেন্স (এফওসি) সংস্করণের আয়োজন করেছে। ২০২৪ সালে, বায়ুসেনা নালিয়ায় তাদের ১৮ স্কোয়াড্রন ‘ফ্লাইং বুলেটস’ মোতায়েন করে এই দেশীয় যুদ্ধবিমানের জন্য পরিকাঠামো তৈরি শুরু করে। এখন নালিয়ায় তেজস এমকে১এ মোতায়েনের মাধ্যমে মিগ-২১-এর যুগের অবসান ঘটিয়ে আধুনিক প্রযুক্তির যুগে প্রবেশের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।

Advertisements

শত্রুর হুমকির জবাব দিতে সক্ষম হবে
ভারতীয় বায়ুসেনা ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ মিগ-২১ বিমানগুলিকে সম্পূর্ণরূপে অবসর নেওয়ার পরিকল্পনা করছে, যা ১৯৭০ সাল থেকে ভারতের বিমান শক্তির মেরুদণ্ড ছিল।

তেজাস এমকে১এ তার পূর্ববর্তী সংস্করণগুলির তুলনায় উন্নত এভিওনিক্স, উচ্চতর চালচলন, আধুনিক অস্ত্র ব্যবস্থা এবং পাইলট সুরক্ষা দিয়ে সজ্জিত। এর জন্য, গত এক বছরে নালিয়া বিমানঘাঁটিতে বেশ কয়েকটি উড়ন্ত পরীক্ষা পরিচালিত হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে বোমা-বিরোধী হ্যাঙ্গার, আধুনিক রাডার সিস্টেম এবং বিশেষ রক্ষণাবেক্ষণ সুবিধা।

সীমান্তের খুব কাছে অবস্থিত হওয়ায়, নালিয়া বিমানঘাঁটির দ্রুত প্রতিক্রিয়া ক্ষমতা এবং বায়ু প্রতিরক্ষা কার্যক্রমের গুরুত্ব আরও বেড়ে যায়। তেজস এমকে১এ মোতায়েনের পর, এই ঘাঁটি শত্রুর যেকোনো সম্ভাব্য হুমকির দ্রুত এবং কার্যকরভাবে জবাব দিতে সক্ষম হবে। এই মোতায়েন কেবল একটি প্রযুক্তিগত পরিবর্তনই নয়, বরং স্বনির্ভর ভারতের প্রতিরক্ষা উৎপাদন ক্ষমতাকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার দিকেও একটি পদক্ষেপ।