কলকাতা: সংখ্যালঘু হিন্দুদের পদদলিত করে, তাদের নির্যাতন নিগ্রহ করে দেশ থেকে তাড়ান মুসলিমদের বিরুদ্ধে সরব হলেন প্রবীণ বিজেপি নেতা তথাগত রায়। সোমবার বাংলাদেশের ট্রাইব্যুনাল আদালত শেখ হাসিনাকে মানবতা বিরোধী অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে। এবার এরই প্রতিবাদে নিজের এক্স হ্যান্ডেলে প্রতিবাদ করলেন এই প্রবীণ রাজনীতিবিদ। তথাগত রায় অভিযোগ তোলেন—১৯৪৭ সাল থেকে বাংলাদেশ বারবার রাজনৈতিক অস্থিরতা, সামরিক শাসন, ক্ষমতা দখল, হত্যা ও অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের মধ্যে দিয়ে গেছে।
শেখ হাসিনার প্রসঙ্গে তথাগত বলেন, পদ্মা সেতুসহ একাধিক বড় প্রকল্পে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক রক্ষা করে উন্নয়নের চেষ্টার পরও হাসিনাকে ‘ক্যাঙ্গারু কোর্টে’ মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনা নক্কারজনক এবং বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করায়। তিনি প্রশ্ন তোলেন যদি আবারও দেশ রাজনৈতিক অস্থিরতা, গৃহযুদ্ধ বা সামরিক শাসনের দিকে ধাবিত হয়, তবে দেশের যুবসমাজের ভবিষ্যৎ কোথায়?
তাঁর বক্তব্য অনুযায়ী, “সংখ্যাগুরু বাঙালি মুসলমানদের” সিদ্ধান্ত ও রাজনৈতিক আচরণের ফলেই দেশ দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতা পায়নি। তিনি মন্তব্য করেন একসময় বাংলাদেশের মুসলমানরা পঞ্জাবি মুসলিমদের বুটের তলায় চাপা পড়েছিল। এখানেই তিনি আরও বলেন, সংখ্যালঘু হিন্দুরা একসময় শিক্ষা, সমৃদ্ধি ও সংস্কৃতিতে অবদান রাখলেও তাদের নির্যাতন করে দেশ থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, যা দেশের ভেতরকার বৈচিত্র্যকে আরও সংকুচিত করেছে।
তথাগত রায় তাঁর বার্তায় মন্তব্য করেন তৎকালীন বাংলাদেশের হিন্দুরা লড়াই করে মুসলিম নেতাদের ক্ষমতায় বসিয়েছে। কিন্তু তারপরে তাদেরই হত্যা করেছে সেখানকার ক্ষমতালোভী রাজনীতিবিদ। তথাগতের তালিকায় উঠে এসেছে জিয়াউর রহমান এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম। যাদের নির্মম ভাবে হত্যা করা হয়েছিল শুধুমাত্র ক্ষমতার জন্য।
বাংলাদেশের অতীত ও বর্তমান নেতৃত্বের একটি দীর্ঘ তালিকা তুলে ধরেন তথাগত যার মধ্যে তাজউদ্দীন আহমেদ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান থেকে শুরু করে জিয়াউর রহমান, এরশাদ, খালেদা জিয়া, শেখ হাসিনা, এমনকি নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসও আছেন। তাঁর অভিযোগ, দেশটির অধিকাংশ সরকারই এসেছে অস্বাভাবিক উপায়ে, আর রাজনৈতিক ধারাবাহিকতার অভাবই আজকের অস্থিরতার মূল কারণ।
প্রবীণ এই নেতা এও দাবি করেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি এখনো আমদানি নির্ভর, যথেষ্ট খনিজ সম্পদ নেই, রফতানিও প্রধানত পোশাকশিল্পের উপর নির্ভরশীল যার কাঁচামালও বিদেশ থেকে আসে। তাঁর বক্তব্যে এই সংকটকে তিনি ‘দীর্ঘস্থায়ী ব্যর্থতার চক্র’ বলে উল্লেখ করেন।
সবশেষে, ভারতের তুলনামূলক উন্নতি এবং বাংলাদেশিদের অনুপ্রবেশ সম্পর্কিত মন্তব্যেও তিনি বিতর্ক উসকে দেন। ভারতের অর্থনৈতিক অগ্রগতি, মাথাপিছু আয়ের বৃদ্ধি এবং গণতান্ত্রিক পরিবেশকে সামনে রেখে তিনি বলেন, “অনুপ্রবেশ করে আয় হবে এই আশাও এখন গুড়ে বালি।” তাঁর মন্তব্য সামাজিক মাধ্যমে যেমন সমর্থন পাচ্ছে, তেমনই তীব্র সমালোচনার মুখেও পড়ছে।
