তামিলনাড়ুর (Tamil Nadu) দিন্দিগুল জেলায় বৃহস্পতিবার রাতে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে (hospital fire) অন্তত ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে একটি শিশুও। ঘটনাটি তিরুচি রোডে অবস্থিত চারতলা একটি বেসরকারি হাসপাতালে ঘটে। প্রাথমিকভাবে আগুন লাগার সঠিক কারণ এখনও জানা যায়নি।
Also Read | পুরুষের বিচার কোথায়? স্ত্রীর নির্যাতনে অতুলের আত্মঘাতী হওয়া নিয়ে প্রশ্ন ভাইয়ের
রাত গভীর হওয়ার পরেই হাসপাতাল ভবনে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। হাসপাতালের বিভিন্ন তলায় থাকা রোগী ও কর্মীদের জন্য এটি ছিল এক আতঙ্কজনক পরিস্থিতি। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, আগুনের ফলে হাসপাতালের একটি বড় অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। হাসপাতালের বাইরে জ্বলন্ত শিখা এবং ঘন কালো ধোঁয়ার দৃশ্য সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে।
পুলিশ এবং দমকল বাহিনীর কর্মীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধারকাজ শুরু করেন। অন্তত তিনটি দমকল ইউনিট, দশটি সরকারি অ্যাম্বুলেন্স এবং ত্রিশটি বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স উদ্ধার অভিযানে অংশ নেয়। উদ্ধারকৃত প্রায় ১০০ জনকে হাসপাতাল ভবন থেকে বের করে আনা হয়। আহতদের মধ্যে ২৮ জনকে দিন্দিগুল সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এ ঘটনায় তিনজন মহিলা এবং এক শিশুসহ ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। আহতদের চিকিৎসা চলছে।অগ্নিকাণ্ডের খবর পাওয়ার পরপরই দিন্দিগুল জেলার কালেক্টর এম.এন. পুঙ্গোডি, তামিলনাড়ুর গ্রামীণ উন্নয়ন মন্ত্রী আই. পেরিয়াসামি, প্রাক্তন মন্ত্রী সি. শ্রীনিবাসান এবং দিন্দিগুল সুপারিনটেনডেন্ট অফ পুলিশ এ. প্রদীপ ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান। তারা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেন এবং উদ্ধারকাজের তদারকি করেন।
Also Read | আন্তর্জাতিক চকোলেট অ্যাওয়ার্ডসে সোনা জিতল ভারতীয় চকলেট
অগ্নিকাণ্ডের সঠিক কারণ এখনও জানা যায়নি। প্রাথমিকভাবে সন্দেহ করা হচ্ছে যে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে এই আগুন লাগতে পারে। তবে তদন্ত শুরু হয়েছে এবং বিশেষজ্ঞ দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন লাগার কারণ খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে।
ঘটনার পরে তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম.কে. স্টালিন নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেছেন এবং আহতদের দ্রুত চিকিৎসার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি জানান, এমন মর্মান্তিক ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে রাজ্য সরকার কঠোর ব্যবস্থা নেবে।
Also Read | ‘এক দেশ এক ভোট’ নীতি নিয়ে কেন্দ্রকে খোঁচা মমতার
এই অগ্নিকাণ্ড দিন্দিগুলে এক ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। এর আগে মাত্র তিন সপ্তাহ আগে উত্তরপ্রদেশের ঝাঁসিতে এক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে কয়েকজন নবজাতক প্রাণ হারিয়েছিল। হাসপাতালগুলিতে এমন অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা রোগী ও তাঁদের পরিবারের জন্য গভীর উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলিতে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা এবং নিরাপত্তা প্রোটোকল আরও কঠোরভাবে মেনে চলা দরকার। আগুন লাগলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কর্মীদের প্রশিক্ষণ এবং হাসপাতালের ভিতরে অগ্নিনির্বাপণ সরঞ্জামের প্রাপ্যতা নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
দিন্দিগুলে এই মর্মান্তিক ঘটনা শুধু তামিলনাড়ু নয়, সারা দেশের জন্য একটি সতর্কবার্তা। রোগী ও কর্মীদের সুরক্ষার জন্য হাসপাতালের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সুনিশ্চিত করা অপরিহার্য। এই ঘটনার পর আশা করা হচ্ছে প্রশাসন আরও কঠোর পদক্ষেপ নেবে যাতে ভবিষ্যতে এমন দুর্ঘটনা রোধ করা যায়।