নয়াদিল্লি: বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজোকে সামনে রেখে রাজনৈতিক মহলে নতুন চর্চা শুরু হয়েছে। বিজেপি নেতা ও রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) দিল্লিতে গিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক করেন। বৈঠক চলে প্রায় ৪৫ মিনিট।
শুভেন্দু জানিয়েছেন, বাংলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, বিরোধী দলের সদস্যদের নিরাপত্তা এবং বিজেপির সাংগঠনিক অবস্থার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আলোচনায় উঠে এসেছে। পাশাপাশি, অমিত শাহকে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে পশ্চিমবঙ্গে দুর্গাপুজো উপলক্ষে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণও জানান।
বৈঠক শেষে শুভেন্দু নিজের সোশ্যাল মিডিয়ায় অমিত শাহের সঙ্গে একটি ছবি শেয়ার করেন। সেখানে তিনি লেখেন, “কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সম্মানীয় শ্রী অমিত শাহ জির সাথে আজ ওনার বাসভবনে সৌজন্য সাক্ষাৎ করলাম। ব্যস্ততা সত্বেও প্রায় ৪৫ মিনিট সময় দিয়ে আমাকে কৃতজ্ঞ করেছেন।”
শুভেন্দুর এই বার্তা সামনে আসতেই রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোড়ন পড়েছে। অনেকের মতে, বৈঠক নিছক সৌজন্যের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এর পিছনে রয়েছে রাজনৈতিক তাৎপর্যও। বিশেষ করে ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপি কীভাবে রাজ্যে নিজেদের সংগঠনকে শক্তিশালী করবে, সেই রূপরেখা নিয়েও আলোচনা হতে পারে।
দলীয় সূত্রের খবর, সাম্প্রতিক সময়ে বাংলায় বিজেপির সাংগঠনিক ভিত নিয়ে একাধিক প্রশ্ন উঠেছে। জেলা ও গ্রামীণ স্তরে সক্রিয় নেতৃত্বের অভাব, কর্মীদের নিরাপত্তা সংক্রান্ত উদ্বেগ এবং সাংগঠনিক দুর্বলতাকে কাটিয়ে উঠতে চাইছে দল। তাই অমিত শাহ-শুভেন্দু বৈঠক বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।
একইসঙ্গে দুর্গাপুজোকে সামনে রেখে বিজেপির জনসংযোগের পরিকল্পনা নিয়েও জল্পনা শুরু হয়েছে। অমিত শাহ যদি বাংলায় এসে কোনও পুজো মণ্ডপে যান, তাহলে তা শুধু উৎসবের সৌন্দর্য নয়, রাজনৈতিক বার্তাও বয়ে আনবে। কারণ, দুর্গাপুজোকে কেন্দ্র করে সাধারণ মানুষের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ স্থাপনের সুযোগ তৈরি হয়।
অন্যদিকে, তৃণমূল শিবিরের দাবি, বিজেপি বারবার কেন্দ্রীয় নেতাদের ভরসায় রাজনীতি করছে, কিন্তু তাতে বাংলার মানুষ সাড়া দেয়নি। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, অমিত শাহ যদি দুর্গাপুজোর সময় বাংলায় আসেন, তবে তা নিঃসন্দেহে বিজেপির পক্ষে বড় রাজনৈতিক লাভ বয়ে আনতে পারে।
সব মিলিয়ে, শুভেন্দু-অমিত শাহ বৈঠক রাজ্য রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। দুর্গাপুজোর আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাংলায় সফরের সম্ভাবনা ঘিরে এখন রাজনীতির কারবারিদের মধ্যে জল্পনা তুঙ্গে। দেখা যাক, আমন্ত্রণের সাড়া দিয়ে সত্যিই কি অমিত শাহ বাংলায় পা রাখেন।