বেটিং অ্যাপ মামলায় ইডি দফতরে সুরেশ রায়না

প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটার সুরেশ রায়না বেআইনি বেটিং অ্যাপ মামলায় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) তদন্তের মুখোমুখি হয়েছেন (Suresh Raina)। এই মামলায় তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠানো হয়েছে…

Suresh Raina in ED office

প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটার সুরেশ রায়না বেআইনি বেটিং অ্যাপ মামলায় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) তদন্তের মুখোমুখি হয়েছেন (Suresh Raina)। এই মামলায় তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠানো হয়েছে এবং বুধবার (১৩ আগস্ট ২০২৫) তিনি দিল্লির ইডি দফতরে হাজিরা দিয়েছেন। তদন্তকারী সংস্থার অভিযোগ, রায়না একটি বেআইনি বেটিং অ্যাপের প্রচারের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।

এই অ্যাপের মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে আর্থিক বিনিয়োগের প্রলোভন দেখানো হয়েছিল। এই ঘটনা ক্রিকেট মহলে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে, এবং তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে সকলের নজর রয়েছে।

   

ইডি সূত্রে জানা গেছে, সুরেশ রায়নার সঙ্গে ওই বেটিং অ্যাপের ব্যবসায়িক লেনদেনের সম্পর্ক ছিল। এই অ্যাপটি ভুয়ো নামে পরিচালিত হয়ে একাধিক নিষিদ্ধ প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে বেআইনি ব্যবসা চালাচ্ছিল বলে অভিযোগ। তদন্তকারীদের দাবি, রায়না এই অ্যাপের বিজ্ঞাপনের মুখ ছিলেন, যার ফলে বহু মানুষ আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন।

ইডি এই মামলায় বৈদেশিক মুদ্রা আইন এবং অর্থ তছরুপ রোধ আইনের অধীনে তদন্ত চালাচ্ছে। রায়নার বক্তব্য নথিভুক্ত করার জন্য তাঁকে দিল্লির ইডি দফতরে ডাকা হয়েছে।

এই মামলায় শুধুমাত্র সুরেশ রায়নাই নন, আরও কয়েকজন প্রাক্তন ক্রিকেটার এবং সেলিব্রিটির নাম জড়িয়েছে। তদন্তে জানা গেছে, প্রাক্তন ক্রিকেটার হরভজন সিং, যুবরাজ সিং, অভিনেতা সোনু সুদ এবং উর্বশী রৌতেলাও এই অ্যাপের প্রচারের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ইডি সূত্রে দাবি করা হয়েছে, জনপ্রিয় মুখদের প্রভাব কাজে লাগিয়ে এই বেটিং অ্যাপগুলি সাধারণ মানুষকে প্রলুব্ধ করেছে।

এই অ্যাপগুলির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার অবৈধ লেনদেন এবং হাওয়ালার মাধ্যমে টাকা পাচারের অভিযোগও উঠেছে। শীঘ্রই হরভজন, যুবরাজ, সোনু সুদ এবং উর্বশী রৌতেলাকেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করা হতে পারে বলে সূত্রে জানা গেছে।

এই মামলার তদন্তের অংশ হিসেবে ইডি ইতিমধ্যেই গুগল এবং মেটার মতো টেক জায়ান্টদের নোটিস পাঠিয়েছে। অভিযোগ, এই সংস্থাগুলি বেটিং অ্যাপের প্রচারে সহায়তা করেছে এবং তাদের প্ল্যাটফর্মে বেটিং অ্যাপের বিজ্ঞাপনের স্লট এবং লিঙ্ক প্রদর্শিত হয়েছে।

এর ফলে এই অ্যাপগুলি সাধারণ মানুষের মধ্যে আরও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। ইডি-র এক আধিকারিক জানিয়েছেন, “তারকাদের প্রভাব কাজে লাগিয়ে এই নিষিদ্ধ অ্যাপগুলি সাধারণ মানুষের মধ্যে জনপ্রিয়তা পেয়েছে।”

Advertisements

এর আগে, চলতি বছরের মার্চে হায়দরাবাদে এই একই অভিযোগে ২৫ জন সেলিব্রিটির বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছিল। এই তালিকায় ছিলেন দক্ষিণী তারকা বিজয় দেবরকোন্ডা, রানা দগ্গুবতী, মাঞ্চু লক্ষ্মী, প্রণীতা, প্রকাশ রাজ এবং নিধি আগরওয়াল।

অভিযোগ, এই তারকারা মোটা পারিশ্রমিকের বিনিময়ে বেটিং অ্যাপের প্রচার করেছেন, যার ফলে সাধারণ মানুষ আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তবে, কেউ কেউ এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, তারা শুধুমাত্র এমন অঞ্চলে প্রচার করেছেন যেখানে স্কিল-বেসড গেম আইনিভাবে অনুমোদিত।

সুরেশ রায়না এই বিষয়ে এখনও কোনও মন্তব্য করেননি। তবে তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে গোয়েন্দা মহলে ইঙ্গিত দেওয়া হচ্ছে যে আরও বড় নাম এই মামলায় জড়িয়ে পড়তে পারে। এই ঘটনা ভারতের ক্রীড়া ও বিনোদন জগতে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। সাধারণ মানুষের মধ্যে বেটিং অ্যাপের প্রভাব এবং এর পিছনে সেলিব্রিটিদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।

ইডি-র তদন্তে লেনদেনের পরিমাণ এবং এই অ্যাপগুলির সঙ্গে তারকাদের যোগসূত্র আরও স্পষ্ট হবে বলে আশা করা হচ্ছে।এই ঘটনা সামাজিক মাধ্যমেও ব্যাপক আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে। অনেকে সুরেশ রায়নার মতো জনপ্রিয় ক্রিকেটারের এমন মামলায় জড়িয়ে পড়ায় হতাশা প্রকাশ করেছেন।

১৫ আগস্ট মাংস নিষিদ্ধে রাজনৈতিক বিতর্কে সরব বিরোধী নেতারা

তবে, তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত এই বিষয়ে চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যায়নি। ইডি-র তদন্তের ফলাফল এই মামলায় জড়িত সকলের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।