কেন্দ্রীয় সরকারি (supreme-court) কর্মচারীরা যারা তাদের বার্ষিক বেতন বৃদ্ধির তারিখের একদিন আগে অবসর গ্রহণ করবেন, তারা এখন পেনশন গণনার জন্য নোশনাল ইনক্রিমেন্ট পাওয়ার যোগ্য হবেন। এই সিদ্ধান্ত সুপ্রিম কোর্টের একটি নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে কার্যকর করা হয়েছে।
কর্মী মন্ত্রণালয়ের জারি করা হয়েছে
কর্মী মন্ত্রণালয়ের জারি করা একটি আদেশে বলা হয়েছে, “মাননীয় সুপ্রিম কোর্টের (supreme-court) ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫-এর আদেশ অনুসারে, যেসব কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীরা বার্ষিক ইনক্রিমেন্টের তারিখ, অর্থাৎ ১ জুলাই বা ১ জানুয়ারির একদিন আগে, অর্থাৎ ৩০ জুন বা ৩১ ডিসেম্বর অবসর গ্রহণ করেন বা করছেন, তাদের পেনশন গণনার জন্য নোশনাল ইনক্রিমেন্ট প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে, যদি তারা অবসর গ্রহণের সময় প্রয়োজনীয় যোগ্যতার সময়কাল পূর্ণ করেন এবং তাদের কাজ ও আচরণ সন্তোষজনক হয়।”
বি এস এফের অপারেশনে শুধু সাম্বাতেই নিষ্ক্রিয় ৫০ জঙ্গি, বিবৃতি ডি আই জি মান্ডের
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ (supreme-court)
এই সিদ্ধান্ত সুপ্রিম কোর্টের (supreme-court) একটি গুরুত্বপূর্ণ রায়ের ফলাফল, যা কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের পেনশন সংক্রান্ত দীর্ঘদিনের একটি বিতর্কের সমাধান করেছে। অনেক কর্মচারী যারা বার্ষিক ইনক্রিমেন্টের ঠিক একদিন আগে অবসর গ্রহণ করছেন, তারা পেনশন গণনায় এই ইনক্রিমেন্টের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছিলেন।
এই বিষয়ে বিভিন্ন হাইকোর্টে মামলা দায়ের করা হয়েছিল, এবং অবশেষে সুপ্রিম কোর্ট (supreme-court) এই বিষয়ে স্পষ্ট নির্দেশনা দিয়েছে। আদালতের রায়ে বলা হয়েছে, যেসব কর্মচারীরা তাদের অবসরের দিনে প্রয়োজনীয় যোগ্যতার সময়কাল পূর্ণ করেছেন, তাদের পেনশন গণনার সময় নোশনাল ইনক্রিমেন্ট বিবেচনা করা উচিত।
নোশনাল ইনক্রিমেন্ট কী?
নোশনাল ইনক্রিমেন্ট বলতে বোঝায় সেই বেতন বৃদ্ধি, যা একজন কর্মচারী তাঁর পরবর্তী ইনক্রিমেন্টের তারিখে পেতেন, যদি তিনি অবসর না নিতেন। উদাহরণস্বরূপ, যদি একজন কর্মচারী ৩০ জুন অবসর গ্রহণ করেন, তবে তিনি ১ জুলাইয়ের ইনক্রিমেন্ট পাওয়ার যোগ্য হবেন না, যদিও তিনি পুরো বছর ধরে কাজ করেছেন। সুপ্রিম কোর্টের (supreme-court)এই নির্দেশের ফলে এখন এই ইনক্রিমেন্ট পেনশন গণনার জন্য বিবেচিত হবে, যা কর্মচারীদের পেনশনের পরিমাণ বাড়াবে।
কর্মচারীদের জন্য সুবিধা
এই নির্দেশের ফলে লক্ষাধিক কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারী উপকৃত হবেন। বিশেষ করে যারা ৩০ জুন বা ৩১ ডিসেম্বর অবসর গ্রহণ করেন, তারা এখন তাদের পেনশন গণনায় অতিরিক্ত ইনক্রিমেন্টের সুবিধা পাবেন। এটি তাদের মাসিক পেনশন এবং অবসরকালীন সুবিধাগুলি বাড়াবে।
উদাহরণস্বরূপ, একজন কর্মচারীর বেতন যদি ইনক্রিমেন্টের আগে ৫০,০০০ টাকা হয় এবং ইনক্রিমেন্টের পর তা ৫১,৫০০ টাকায় উন্নীত হয়, তবে পেনশন গণনার সময় ৫১,৫০০ টাকা বিবেচনা করা হবে। এটি পেনশনের পরিমাণে উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি ঘটাবে।
কর্মী মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা
কর্মী মন্ত্রণালয়ের আদেশে বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলিকে এই নির্দেশ কার্যকর করতে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। এই আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে যে, যেসব কর্মচারী অবসর গ্রহণের সময় সন্তোষজনক কাজ এবং ভালো আচরণের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় যোগ্যতার সময়কাল পূর্ণ করেছেন, তাদের ক্ষেত্রে এই নোশনাল ইনক্রিমেন্ট প্রযোজ্য হবে। মন্ত্রণালয়ের এই নির্দেশনা বিভিন্ন কেন্দ্রীয় সরকারি বিভাগ, যেমন রেল, ডাক, প্রতিরক্ষা এবং অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের কর্মচারীদের ক্ষেত্রে কার্যকর হবে।
বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিক্রিয়া
কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারী সংগঠনগুলি এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে। তারা এটিকে দীর্ঘদিনের একটি ন্যায্য দাবির পূরণ হিসেবে দেখছে। অল ইন্ডিয়া সেন্ট্রাল গভর্নমেন্ট পেনশনার্স অ্যাসোসিয়েশনের একজন প্রতিনিধি বলেন, “এটি একটি ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত। অনেক কর্মচারী তাদের পুরো কর্মজীবন কাজ করার পরও শুধুমাত্র একদিনের জন্য ইনক্রিমেন্ট থেকে বঞ্চিত হচ্ছিলেন। এই রায় তাদের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করেছে।”
অন্যদিকে, কিছু অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী সংগঠন দাবি করেছে যে, এই সিদ্ধান্তের সুবিধা পূর্ববর্তী অবসরপ্রাপ্তদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য করা উচিত। তারা সরকারের কাছে এই বিষয়ে স্পষ্টীকরণ চেয়েছে।
অর্থনৈতিক প্রভাব
এই সিদ্ধান্তের ফলে সরকারের পেনশন ব্যয় বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে, বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই অতিরিক্ত ব্যয় সরকারের বাজেটের উপর তেমন বড় প্রভাব ফেলবে না। বরং, এটি অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারীদের আর্থিক নিরাপত্তা বাড়াবে এবং তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করবে।
অন্যান্য রাজ্যে প্রভাব
যদিও এই নির্দেশ কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের জন্য প্রযোজ্য, বিভিন্ন রাজ্য সরকার এই নজির অনুসরণ করতে পারে। ইতিমধ্যে, কিছু রাজ্যে এই ধরনের মামলা হাইকোর্টে বিচারাধীন রয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের এই রায় রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের জন্যও একটি নজির হিসেবে কাজ করতে পারে।
সুপ্রিম কোর্টের (supreme-court)এই নির্দেশ এবং কর্মী মন্ত্রণালয়ের আদেশ কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের পেনশন সংক্রান্ত একটি দীর্ঘদিনের অভিযোগের সমাধান করেছে। এটি লক্ষাধিক অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারীদের আর্থিক সুবিধা নিশ্চিত করবে এবং তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করবে।
এই সিদ্ধান্ত সরকারি কর্মচারীদের প্রতি সরকারের দায়বদ্ধতা এবং সুপ্রিম কোর্টের ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টার প্রতিফলন। ভবিষ্যতে এই রায়ের ফলে আরও বেশি সংখ্যক কর্মচারী উপকৃত হতে পারেন, যদি এটি পূর্ববর্তী অবসরপ্রাপ্তদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হয়।