মহুয়া মৈত্রর আবেদন শুনবে সুপ্রিম কোর্ট ৯ অক্টোবর

moitra-faces-political-backlash-for-aligning-with-vloggers-indian-bashing-post

নয়াদিল্লি: বিদেশি পোর্টফোলিও বিনিয়োগকারী (Foreign Portfolio Investors – FPIs) এবং বিকল্প বিনিয়োগ তহবিলের (Alternative Investment Funds – AIFs) চূড়ান্ত মালিকানা ও বিনিয়োগ পোর্টফোলিও জনসমক্ষে প্রকাশের দাবিতে দায়ের করা তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ মহুয়া মৈত্রর (Mahua Moitra) জনস্বার্থ মামলার শুনানি আগামী ৯ অক্টোবর নির্ধারণ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। শুক্রবার বিচারপতি বি. ভি. নাগারথ্না এবং আর. মহাদেবনের বেঞ্চ এই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে।

Advertisements

মহুয়া মৈত্রর আবেদনের মূল লক্ষ্য দেশের পুঁজিবাজারে স্বচ্ছতা আনা এবং বিনিয়োগকারীদের সচেতনতা বৃদ্ধি করা। তিনি আদালতের কাছে আবেদন করেছেন যাতে FPIs, AIFs এবং তাদের মধ্যস্থতাকারীদের চূড়ান্ত উপকারভোগীদের (Ultimate Beneficial Owners – UBOs) তথ্য এবং বিনিয়োগের বিশদ জনসমক্ষে প্রকাশ বাধ্যতামূলক করা হয়।

সুপ্রিম কোর্টে মহুয়ার পক্ষে উপস্থিত ছিলেন আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ। তিনি আদালতকে জানান, বিচারপতির নির্দেশ মেনে মহুয়া মৈত্র ২৩ মে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অফ ইন্ডিয়া (SEBI)-এর কাছে একটি বিস্তারিত প্রতিনিধিত্ব পেশ করেন। তবে SEBI থেকে উত্তর আসে অনেক দেরিতে — ২৩ সেপ্টেম্বর, যদিও সেটি লেখা হয়েছিল ১৯ সেপ্টেম্বর তারিখে।

ভূষণ আদালতে জানান, “আমাদের নতুন করে আর কোনও রিট আবেদন করার প্রয়োজন নেই। আমরা SEBI-র উত্তরকেই এই মামলার অংশ হিসেবে জমা দেব এবং এর বিরুদ্ধে একটি সংক্ষিপ্ত হলফনামা দাখিল করব।” বিচারপতি প্রশ্ন করেন, ভূষণ কি SEBI-র উত্তরে অসন্তুষ্ট? উত্তরে ভূষণ বলেন, “হ্যাঁ, আমরা সম্পূর্ণভাবে অসন্তুষ্ট। এই উত্তর আমাদের স্বচ্ছতার মূল দাবিকে পূরণ করে না।”

মহুয়া মৈত্র তাঁর আবেদনে উল্লেখ করেছেন, বর্তমানে অনেক বিদেশি বিনিয়োগকারী ও বিকল্প বিনিয়োগ তহবিলের প্রকৃত মালিকানা গোপন থাকে। এই গোপনীয়তার ফলে অর্থপাচার, কর ফাঁকি এবং কালো টাকার প্রবাহের মতো সমস্যার আশঙ্কা থেকে যায়।

Advertisements

তাঁর দাবি, যদি SEBI এই তথ্য প্রকাশ বাধ্যতামূলক করে, তাহলে বিনিয়োগকারীরা আরও স্বচ্ছ পরিবেশে সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন। পাশাপাশি দেশের পুঁজিবাজারেও আস্থা বাড়বে এবং সন্দেহজনক লেনদেন রোধ করা সম্ভব হবে।

কেন্দ্রের পক্ষে আইনজীবী আদালতে জানান, “SEBI প্রয়োজনীয় সব প্রশ্নের উত্তর ইতিমধ্যেই দিয়েছে।” কিন্তু ভূষণ জানান, “উত্তর সন্তোষজনক নয়, আমরা এর বিরুদ্ধে আমাদের যুক্তি উপস্থাপন করব।” আদালত জানিয়েছে, এই বিষয়ে ৯ অক্টোবর পরবর্তী শুনানি হবে। যদি দেখা যায় যে SEBI প্রতিনিধিত্ব যথাযথভাবে বিবেচনা করেনি, তবে মামলাকারীর কাছে অন্যান্য আইনি পথ খোলা থাকবে।

উল্লেখ্য, এর আগে ১ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্ট মহুয়া মৈত্রকে নির্দেশ দিয়েছিল SEBI-র কাছে প্রথমে প্রতিনিধিত্ব জানাতে। তখন আদালত বলেছিল, যদি যুক্তিসঙ্গত সময়ের মধ্যে বিষয়টি বিবেচনা না করা হয়, তবে আবেদনকারী অন্যান্য আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারবেন।

এই মামলার ফলাফল ভারতের আর্থিক বাজারে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। কারণ, আদালতের সিদ্ধান্ত যদি মহুয়া মৈত্রর পক্ষে যায়, তবে তা বিদেশি বিনিয়োগে এক নতুন স্বচ্ছতার যুগের সূচনা করতে পারে।