নয়াদিল্লি: পহেলগাঁও সন্ত্রাসবাদী হামলার পরিপ্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্টের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তে উঠে এসেছে বিচারব্যবস্থার সীমাবদ্ধতা ও জাতীয় নিরাপত্তার প্রতি সংবেদনশীলতা। গত ২২ এপ্রিলের কাশ্মীরের বৈসরণ উপত্যকায় নৃশংস জঙ্গি হামলার ঘটনায় বিচারবিভাগীয় তদন্ত চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন কাশ্মীরের তিন ব্যক্তি। পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি গোষ্ঠী লস্কর-ই-তৈবার হামলার তদন্তের জন্য বিচারিক কমিশন গঠনের আবেদনও করা হয়েছিল। বৃহস্পতিবার তাঁদের আবেদনের শুনানি হওয়ার কথা থাকলেও শীর্ষ আদালত তাদের আবেদন শুনল না। আদালত সাফ জানায়, এই মুহূর্তে বিচারবিভাগীয় তদন্ত হলে সেনার মনোবল আঘাতপ্রাপ্ত হবে। এই মুহূর্তে নিরাপত্তাবাহিনীর মনোবলে আঘাত করা উচিত নয়।
আদালতের কঠোর বার্তা: সেনাবাহিনীকে অবমূল্যায়ন নয়
সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং বিচারপতি সঞ্জীব খন্নার বেঞ্চ মামলাকারী আইনজীবী বিনীত ধান্ডাকে তীব্র সমালোচনা করেছেন। বিচারপতি সূর্য কান্ত বলেন, “আপনারা দেশপ্রেমের দায়িত্ব পালন করছেন তো? এই সংকটময় সময়ে প্রতিটি ভারতীয় সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে একত্রিত হয়েছে। বাহিনীকে অবমূল্যায়ন করবেন না।” আদালত আরও বলেন, “আমরা তদন্তের জন্য বিশেষজ্ঞ নই; আমাদের কাজ বিরোধ নিষ্পত্তি করা।”
মামলাকারীর অতীত ও আদালতের সতর্কতা Supreme Court refuses Pahalgam probe
বিনীত ধান্ডা অতীতে বিভিন্ন মামলায় জনস্বার্থ মামলা দায়ের করে আলোচিত হয়েছেন। আদালত তার অতীত রেকর্ডের ভিত্তিতে সতর্কতা প্রকাশ করেছে, বিশেষ করে যখন তিনি অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিকে তদন্তের দায়িত্ব দিতে চেয়েছিলেন। আদালত স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, বিচারপতিরা তদন্তকারী সংস্থা নন; তাদের কাজ বিচার করা।
কাশ্মীরি ছাত্রদের নিরাপত্তা: আদালতের নির্দেশনা
মামলায় কাশ্মীরি ছাত্রদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আবেদন করা হয়েছিল। আদালত মামলাকারীকে উপযুক্ত হাইকোর্টে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে, কারণ এটি রাজ্য সরকারের বিষয় এবং সেখানে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে।
জাতীয় নিরাপত্তা ও বিচারব্যবস্থার সীমাবদ্ধতা
এই সিদ্ধান্তটি বিচারব্যবস্থার সীমাবদ্ধতা ও জাতীয় নিরাপত্তার প্রতি সংবেদনশীলতার প্রতিফলন। আদালত স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, সেনাবাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলির কাজের ক্ষেত্রে আদালতের হস্তক্ষেপ সীমিত। জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়গুলি সরকারের ক্ষেত্র এবং আদালতের উচিত সেখানে হস্তক্ষেপ না করা।
এই সিদ্ধান্তটি বিচারব্যবস্থার স্বাধীনতা ও সরকারের কার্যক্রমের মধ্যে সঠিক ভারসাম্য রক্ষার গুরুত্বকে তুলে ধরে। জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে আদালতের হস্তক্ষেপের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন, যাতে বিচারব্যবস্থার মর্যাদা ও সরকারের কার্যক্রমের মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় থাকে।
সর্বোপরি, সুপ্রিম কোর্টের এই সিদ্ধান্তটি বিচারব্যবস্থার সীমাবদ্ধতা ও জাতীয় নিরাপত্তার প্রতি সংবেদনশীলতার প্রতিফলন। এটি আদালতের দায়িত্ব ও সরকারের কাজের মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় রাখার গুরুত্বকে তুলে ধরে।
Bharat: Supreme Court rejects judicial inquiry into Pahalgam terror attack, citing potential harm to army morale and national security. Criticizes petitioners, emphasizing judiciary’s role in dispute resolution, not investigation. Focus on national unity against terrorism.