নয়াদিল্লি: ভারত-চিন সীমান্ত উত্তেজনার প্রেক্ষিতে রাহুল গান্ধীর এক মন্তব্যে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করল দেশের শীর্ষ আদালত (Supreme Court rebukes Rahul Gandhi)। ২০২০ সালের গালওয়ান সংঘর্ষ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে রাহুল বলেন, ভারতীয় ভূখণ্ডে চিনের অনুপ্রবেশ ঘটেছে৷ তাঁর এই বক্তব্য ঘিরে দায়ের হওয়া এক মানহানির মামলায় সোমবার অন্তর্বর্তীকালীন সুরক্ষা পেলেও, সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চ তাঁর মন্তব্যকে ভর্ৎসনা করে বলেছে, “যদি আপনি সত্যিকারের ভারতীয় হন, আপনি এমন মন্তব্য করতেন না।”
সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত ও বিচারপতি এজি মসীহের ডিভিশন বেঞ্চে এ দিন রাহুলের বিরুদ্ধে গুজরাটে দায়ের হওয়া মামলার কার্যক্রম স্থগিত করা হয়। তবে সেই সুরক্ষার আড়ালেও আদালতের মৌখিক পর্যবেক্ষণ ছিল দৃঢ় ও স্পষ্ট।
“সংসদে বলুন, সোশ্যাল মিডিয়ায় কেন?”
রাহুল গান্ধীর হয়ে শুনানিতে অংশ নেন বর্ষীয়ান আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি। তিনি সওয়াল করেন, “সংসদে বিরোধী দলনেতার দায়িত্বই হল প্রশ্ন তোলা। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে তিনি যা বলেছেন, তা তাঁর রাজনৈতিক অধিকার।”
তবে বিচারপতি দত্ত এই যুক্তি মেনে নেননি। তিনি সরাসরি প্রশ্ন তোলেন, “আপনি যদি সাংসদ হন, তাহলে এই বিষয়গুলি সংসদেই তুলুন। সামাজিক মাধ্যমে কেন এ ধরনের মন্তব্য করছেন? এটি কি রাজনৈতিক দায়িত্বশীলতার পরিচয়?”
রাজনৈতিক মন্তব্যে আদালতের সীমারেখা
যদিও আদালত রাহুলকে মামলার কার্যক্রম থেকে সাময়িক সুরক্ষা দিয়েছে, তাদের পর্যবেক্ষণ নতুন করে প্রশ্ন তুলছে, সাংসদদের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও তার সীমা ঠিক কতদূর? শীর্ষ আদালতের এই মন্তব্য শুধু একটি মামলার নিরিখে নয়, বৃহত্তর রাজনৈতিক পরিসরে বিরোধী কণ্ঠের অবস্থান ও দায়বদ্ধতা নিয়ে আলোচনার ক্ষেত্র খুলে দিল।
বিজেপি ইতিমধ্যেই রাহুলের গালওয়ান-সম্পর্কিত মন্তব্যকে ‘অসামরিক’ ও ‘সেনাবিরোধী’ বলে চিহ্নিত করেছে। এবার শীর্ষ আদালতের কড়া ভাষাও সেই রাজনৈতিক চাপ বাড়াল বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।