উপাচার্য নিয়োগে কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাতের মাঝে মুখ্যমন্ত্রীর পক্ষে রায় শীর্ষ আদালতের

রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপাচার্য নিয়োগ (appointment case) নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলা বিতর্কে নতুন মোড় আনল দেশের শীর্ষ আদালত। সোমবার সুপ্রিম কোর্টে উপাচার্য নিয়োগ সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে…

Supreme Court big dig for trinamool

রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপাচার্য নিয়োগ (appointment case) নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলা বিতর্কে নতুন মোড় আনল দেশের শীর্ষ আদালত। সোমবার সুপ্রিম কোর্টে উপাচার্য নিয়োগ সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে বিচারপতি সূর্যকান্ত স্পষ্ট জানান, উপাচার্য নিয়োগে কোনও কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপ হয়নি। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যে তালিকা পাঠিয়েছেন, সেই তালিকাকেই ভিত্তি করেই নিয়োগ হয়েছে। সমস্যা ছিল শুধুমাত্র বিশ্ববিদ্যালয়গুলির মধ্যে সমন্বয় নিয়ে।

সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি সূর্যকান্ত আরও জানান, প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি উদয় উমেশ ললিতের নেতৃত্বাধীন কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে এই মন্তব্য করা হয়েছে। বিচারপতি ললিতের রিপোর্টে বলা হয়েছে, নিয়োগ প্রক্রিয়ায় মুখ্যমন্ত্রীর পাঠানো নামই অগ্রাধিকার পেয়েছে এবং রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে কেন্দ্রের সঙ্গে সমন্বয়ের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল।

   

বিচারপতি সূর্যকান্তের পর্যবেক্ষণ

বিচারপতি সূর্যকান্ত বলেন, “সমস্যা ছিল বিশ্ববিদ্যালয়গুলির নিজস্ব কিছু টেকনিক্যাল এবং প্রশাসনিক ঘাটতিতে। কিন্তু যাঁদের নিয়োগ করা হয়েছে, তাঁদের নাম মুখ্যমন্ত্রীর তালিকা থেকেই এসেছে। তাই বলা চলে, নিয়োগে মূলত রাজ্য সরকারের মতামতই প্রতিফলিত হয়েছে।”

এই পর্যবেক্ষণ রাজ্য সরকারের পক্ষে একটি বড় জয় বলে মনে করছে শিক্ষামহল। কারণ, এতদিন ধরে নিয়োগ নিয়ে যেভাবে রাজনৈতিক চাপানউতোর চলছিল, তা অনেকটাই প্রশমিত হবে এই রায়ের পরে।

ললিত কমিটির সুপারিশ

প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি ললিতের নেতৃত্বাধীন কমিটি গত মাসেই একটি রিপোর্ট জমা দেয় সুপ্রিম কোর্টে। সেখানে উল্লেখ করা হয়, রাজ্য ও কেন্দ্রের মধ্যে কিছু ভুল বোঝাবুঝির কারণে নির্দিষ্ট সময়ে উপাচার্য নিয়োগ সম্ভব হয়নি। তবে পরবর্তী সময়ে এই সমস্যা মেটাতে যৌথভাবে উদ্যোগ নেওয়া হয়।

Advertisements

কমিটির মতে, শিক্ষা ও সংস্কৃতির বিষয়ে রাজ্য সরকারদের স্বাধীনতা থাকা উচিত। কেন্দ্র এই বিষয়ে তার সীমা লঙ্ঘন করলে তা সাংবিধানিক ভারসাম্য ভাঙতে পারে।

রাজনীতির আবহে আদালতের পর্যবেক্ষণ

গত কয়েক মাস ধরেই রাজ্য বনাম রাজ্যপাল সংঘাতের কেন্দ্রে ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ। মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করেছিলেন, রাজ্যপাল শিক্ষামন্ত্রীর পরামর্শ না নিয়েই একাধিক উপাচার্য নিয়োগ করছেন। অন্যদিকে রাজভবনের দাবি ছিল, কেন্দ্রীয় ইউজিসি নির্দেশিকা মেনেই এই নিয়োগ করা হয়েছে।

সেই প্রেক্ষিতেই রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টে যায় এবং আদালতের নির্দেশে প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি ললিতকে নিয়ে একটি কমিটি গঠিত হয়।

পরবর্তী শুনানি ১০ দিন পর

বিচারপতি সূর্যকান্ত জানিয়ে দেন, এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে ১০ দিন পর। ততদিনে সমস্ত পক্ষকে তাঁদের বক্তব্য ও নথিপত্র আদালতে জমা দিতে হবে।