সুপ্রিমকোর্ট চত্বরে কুকুরের উপদ্রব কমাতে নয়া সিদ্ধান্ত

সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court) সম্প্রতি একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ জারি করে বলেছে যে, কোর্ট চত্বরে অবশিষ্ট খাবার সঠিকভাবে ডাস্টবিনে ফেলতে হবে যাতে কুকুরের কামড়ের ঘটনা রোধ…

Supreme Court new order

সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court) সম্প্রতি একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ জারি করে বলেছে যে, কোর্ট চত্বরে অবশিষ্ট খাবার সঠিকভাবে ডাস্টবিনে ফেলতে হবে যাতে কুকুরের কামড়ের ঘটনা রোধ করা যায়। এই আদেশ জননিরাপত্তার উদ্বেগ এবং সুপ্রিম কোর্টের চত্বরে বিপথগামী কুকুরের উপস্থিতি নিয়ে ক্রমবর্ধমান অভিযোগের প্রেক্ষিতে দেওয়া হয়েছে।

আদালতের এই নির্দেশ কোর্টের কর্মী, আইনজীবী এবং দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে গৃহীত হয়েছে। এই পদক্ষেপের মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে পরিচ্ছন্নতা ও নিরাপত্তার মান উন্নত করার উপর জোর দিয়েছে।

   

সুপ্রিম কোর্ট চত্বরে বিপথগামী কুকুরের উপস্থিতি দীর্ঘদিন ধরে একটি সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কোর্টের চত্বরে খাবারের অবশিষ্টাংশ, বিশেষ করে ক্যান্টিন এবং আশেপাশের এলাকায় ফেলে রাখা খাবার, এই কুকুরদের আকর্ষণ করে। ফলে, কুকুরের কামড়ের ঘটনা এবং দর্শনার্থীদের মধ্যে আতঙ্কের অভিযোগ বেড়েছে।

সম্প্রতি, কয়েকজন আইনজীবী এবং কোর্টের কর্মী এই সমস্যা নিয়ে আদালতের নজরে আনেন, যার পরিপ্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্ট এই নির্দেশ জারি করেছে। আদালত জানিয়েছে যে, অবশিষ্ট খাবার সঠিকভাবে নিষ্পত্তি না করা হলে তা বিপথগামী কুকুরদের জন্য খাদ্যের উৎস হয়ে ওঠে, যা তাদের উপস্থিতি এবং আগ্রাসী আচরণকে উৎসাহিত করে।

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, কোর্টের প্রাঙ্গণে অবশিষ্ট খাবার সংগ্রহ ও নিষ্পত্তির জন্য একটি কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। ক্যান্টিন, খাবারের স্টল এবং অন্যান্য এলাকায় খাবারের অবশিষ্টাংশ ফেলা যাবে না। এর জন্য নির্দিষ্ট বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ইউনিট স্থাপন করা হবে, এবং নিয়মিত পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম পরিচালিত হবে।

আদালত আরও নির্দেশ দিয়েছে যে, কোর্টের প্রাঙ্গণে কুকুরদের খাওয়ানোর জন্য খাবার সরবরাহ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। এই পদক্ষেপগুলি কুকুরের উপস্থিতি হ্রাস করতে এবং তাদের আগ্রাসী আচরণ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করবে বলে আদালত মনে করে।

এই আদেশ প্রাণী অধিকার কর্মীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। কিছু কর্মী মনে করেন যে, এই নির্দেশ বিপথগামী কুকুরদের কল্যাণের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে, কারণ এটি তাদের খাদ্যের উৎস সীমিত করবে। তারা পরামর্শ দিয়েছেন যে, কুকুরদের জন্য নির্দিষ্ট খাওয়ানোর জায়গা তৈরি করা এবং নিয়মিত নির্বীজন ও টিকাদান কর্মসূচি চালানোর মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান করা যেতে পারে।

তবে, অন্যরা আদালতের এই পদক্ষেপকে জননিরাপত্তার জন্য প্রয়োজনীয় বলে সমর্থন করেছেন। এক্স প্ল্যাটফর্মে এই বিষয়ে আলোচনা তীব্র হয়েছে, যেখানে কেউ কেউ লিখেছেন, “সুপ্রিম কোর্টের নিরাপত্তা অগ্রাধিকার পাওয়া উচিত, তবে কুকুরদের জন্য মানবিক সমাধানও খুঁজতে হবে।”

Advertisements

সুপ্রিম কোর্টের প্রশাসনিক বিভাগকে এই নির্দেশ বাস্তবায়নের জন্য একটি কমিটি গঠন করতে বলা হয়েছে। এই কমিটি কোর্টের প্রাঙ্গণে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং পরিচ্ছন্নতার কার্যক্রম তদারকি করবে। এছাড়া, স্থানীয় পৌরসংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে বিপথগামী কুকুরদের জন্য নির্বীজকরণ এবং টিকাদান কর্মসূচি জোরদার করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। আদালতের নির্দেশে বলা হয়েছে যে, এই ব্যবস্থাগুলি কঠোরভাবে পালন করতে হবে এবং এর বাস্তবায়নের অগ্রগতি নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা হবে।

এই আদেশ শুধুমাত্র সুপ্রিম কোর্টের প্রাঙ্গণের জন্যই নয়, অন্যান্য সরকারি ও পাবলিক প্রতিষ্ঠানের জন্যও একটি উদাহরণ স্থাপন করতে পারে। দেশের বিভিন্ন স্থানে বিপথগামী কুকুরের কারণে জননিরাপত্তার সমস্যা বাড়ছে, এবং এই নির্দেশ এই সমস্যা মোকাবিলায় একটি নতুন দৃষ্টিভঙ্গি প্রদান করতে পারে।

তবে, প্রাণী অধিকার কর্মীরা দাবি করেছেন যে, কুকুরদের প্রতি মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ। তারা বলছেন, “বিপথগামী কুকুরদের অপসারণ বা তাদের খাদ্য সীমিত করার পরিবর্তে, তাদের জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ এবং সঠিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে সমাধান খুঁজতে হবে।”

সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশ জননিরাপত্তা এবং পরিচ্ছন্নতার বিষয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এটি কোর্টের প্রাঙ্গণে কুকুরের কামড়ের ঘটনা কমাতে সাহায্য করবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে, এই নির্দেশ বাস্তবায়নের সময় প্রাণী কল্যাণের বিষয়টিও বিবেচনায় রাখা প্রয়োজন।

খাদ্য ও জ্বালানিতে মূল্য সংকোচন, রেকর্ড নিম্নে WPI

এক্স প্ল্যাটফর্মে এই নির্দেশ নিয়ে বিতর্ক চলছে, যেখানে কেউ কেউ নিরাপত্তার পক্ষে এবং কেউ কেউ প্রাণীদের প্রতি সহানুভূতির কথা বলছেন। সুপ্রিম কোর্টের এই পদক্ষেপ কীভাবে বাস্তবায়িত হয় এবং এর ফলাফল কী হয়, তা আগামী দিনে পরিষ্কার হবে।