সুপ্রিম কোর্ট বুধবার বিহারের বিশেষ নিবিড় সংশোধন (SIR) প্রক্রিয়াকে ভোটারদের জন্য সুবিধাজনক এবং সহায়ক (Supreme Court) হিসেবে উল্লেখ করে রায় দিয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট বলেছে এই প্রক্রিয়ায় ভোটার তালিকা সংশোধনের জন্য গ্রহণযোগ্য পরিচয়পত্রের তালিকা সম্প্রসারণ করা হয়েছে, যা ভোটারদের জন্য সুবিধা বাড়িয়েছে।
এছাড়াও, আধার কার্ড ব্যবহারের বাধ্যবাধকতা বা বর্জন সংক্রান্ত উদ্বেগকে সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্টভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে। এই রায় ভোটার তালিকার স্বচ্ছতা এবং নির্ভুলতা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।বিহারের নির্বাচনী তালিকা সংশোধনের এই বিশেষ উদ্যোগটি ভোটারদের তথ্য আপডেট করা, নতুন ভোটারদের তালিকাভুক্ত করা এবং ভুল বা সদৃশ এন্ট্রি অপসারণের লক্ষ্যে গৃহীত হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের বেঞ্চ এই প্রক্রিয়াকে ‘ভোটার-বান্ধব’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন, কারণ এটি ভোটারদের জন্য পরিচয় প্রমাণের ক্ষেত্রে আরও নমনীয়তা প্রদান করে। আগে যেখানে আধার কার্ডকে প্রাথমিক পরিচয়পত্র হিসেবে গণ্য করা হতো, সেখানে এখন পাসপোর্ট, প্যান কার্ড, ড্রাইভিং লাইসেন্স, রেশন কার্ড, এবং অন্যান্য সরকার-অনুমোদিত পরিচয়পত্রও গ্রহণযোগ্য হিসেবে বিবেচিত হবে।
এই পদক্ষেপ ভোটারদের জন্য তালিকাভুক্তি প্রক্রিয়াকে আরও সহজ এবং অ্যাক্সেসযোগ্য করে তুলেছে।সুপ্রিম কোর্টের এই রায় এসেছে এমন এক সময়ে, যখন আধার কার্ডের বাধ্যতামূলক ব্যবহার নিয়ে বিভিন্ন মহলে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছিল। অনেকে আশঙ্কা করেছিলেন যে, আধার কার্ডের উপর অতিরিক্ত নির্ভরতা কিছু ভোটারকে তালিকা থেকে বাদ পড়তে বাধ্য করতে পারে, বিশেষ করে যারা প্রান্তিক সম্প্রদায়ের বা যাদের আধার কার্ড নেই।
তবে, সুপ্রিম কোর্ট এই উদ্বেগকে প্রত্যাখ্যান করে বলেছে যে, নির্বাচনী তালিকা সংশোধনের জন্য আধার কার্ড বাধ্যতামূলক নয়। এর পরিবর্তে, অন্যান্য পরিচয়পত্র ব্যবহারের সুযোগ দেওয়া হয়েছে, যা নিশ্চিত করবে যে কোনও বৈধ ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়বেন না।বিহার নির্বাচন কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে যে, এসআইআর প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ভোটার তালিকার নির্ভুলতা বাড়ানোর পাশাপাশি ভোটারদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হচ্ছে।
এই প্রক্রিয়ায় বিশেষভাবে গ্রামীণ এবং প্রান্তিক এলাকার ভোটারদের উপর জোর দেওয়া হয়েছে, যাতে তারা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগে কোনও সমস্যার সম্মুখীন না হন। এছাড়াও, এই প্রক্রিয়ায় ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের ব্যবহার বাড়ানো হয়েছে, যার মাধ্যমে ভোটাররা অনলাইনে তাদের তথ্য আপডেট করতে পারেন।
সুপ্রিম কোর্টের এই মন্তব্য নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা এবং অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করার দিকে একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই পদক্ষেপ বিহারের নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে আরও গণতান্ত্রিক এবং অংশগ্রহণমূলক করে তুলবে। তবে, কিছু সমালোচক মনে করেন যে, এই প্রক্রিয়ার সফল বাস্তবায়ন নির্ভর করবে স্থানীয় প্রশাসন এবং নির্বাচনী কর্মীদের দক্ষতার উপর।
নবান্ন অভিযান ঘিরে উত্তেজনা, লাঠিচার্জ-এফআইআরের বিরুদ্ধে মামলা হাইকোর্টে
এই রায়ের পর ভোটারদের মধ্যে একটি ইতিবাচক বার্তা পৌঁছেছে। বিহারের সাধারণ মানুষ এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন, কারণ এটি তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগে আরও সুবিধা প্রদান করবে। সুপ্রিম কোর্টের এই পদক্ষেপ ভারতের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে আরও শক্তিশালী করার দিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।