নয়াদিল্লি: নিজের ১১ বছরের বিশেষভাবে সক্ষম (Special Needs) ছেলেকে নিয়ে ১৩ তলা থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা (Suicide) করলেন ৩৭ বছরের এক মহিলা। মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে গ্রেটার নয়ডার এস সিটি সোসাইটিতে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেহদুটিকে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায় বিসরাখ থানার পুলিশ। মৃত মহিলার নাম সাক্ষী চাওলা এবং তাঁর ছেলের নাম দক্ষ চাওলা বলে জানা গিয়েছে।
মৃতদের ফ্ল্যাট থেকে একটি ‘সুইসাইড নোট’ (Suicide Note) পাওয়া গেছে। যেখানে স্বামী দর্পণ চাওলাকে উদ্দেশ্য করে সাক্ষী লিখেছিলেন, “আমরা এই পৃথিবী থেকে বিদায় নিচ্ছি। আমরা আর কাউকে বিরক্ত করতে চাই না। আমাদের উপস্থিতিতে তোমার জীবন ক্ষতিগ্রস্ত হোক, তা চাই না। আমাদের মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়”।
পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে, সাক্ষী এবং দর্পণের ১১ বছরের পুত্র বেশ কয়েক বছর ধরে মানসিক সমস্যায় ভুগছিল। একাধিক চিকিৎসকের পরামর্শ, ওষুধ, চিকিৎসা, প্রার্থনার পরেও দক্ষর মানসিক পরিস্থিতিতে কোনও পরিবর্তন আসছিল না। প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, ছেলের মানসিক সমস্যা নিয়ে সাক্ষী নিজেও অবসাদগ্রস্ত (Depression) থাকত এবং বেঁচে থাকার ইচ্ছাশক্তি হারিয়ে ফেলেছিল।
শনিবার সকালে পেশায় চার্টার্ড আকাউন্টেন্ট দর্পণ সাক্ষীকে ছেলেকে ওষুধ খাওয়াতে বলেন। এর কিছুক্ষণ পরেই ছেলেকে নিয়ে নিজেদের ১৩ তলার ফ্ল্যাটের বারান্দা থেকে ঝাঁপ দেন সাক্ষী। ঘটনাস্থলেই মা ও ছেলের মৃত্যু হয়। তাঁদের চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা ছুটে এসে রক্তাক্ত দেহ নীচে পড়ে থাকতে দেখেন।
মধ্য নয়ডার ADCP শভ্য গোয়েল বলেন, “আমরা জানতে পেরেছি ছেলেটি মানসিক রোগগ্রস্ত ছিল এবং এই নিয়ে মাও অবসাদে ভুগছিলেন। আমরা একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করেছি। দেহগুলিকে ময়নাতদন্তে পাঠিয়ে তদন্ত শুরু করা হয়েছে।” প্রতিবেশী সূত্রে খবর, চাওলাদের আদি বাড়ি উত্তরাখন্ডের গারহি নেগি গ্রামে। তাঁরা বেশ শান্ত স্বভাবেরই বাসিন্দা ছিলেন। মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনায় গ্রেটার নয়ডার এস সিটি সোসাইটিতে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।