উরি বাঁধ থেকে হঠাৎ জল ছাড়ার ফলে পাকিস্তান (kashmir) অধিকৃত কাশ্মীরে সৃষ্টি হয়েছে চরম বন্যা পরিস্থিতি। বিতস্তা (ঝেলম) নদীর জল বেড়ে যাওয়ায় হাট্টিয়ান বালা, মুজাফ্ফরাবাদ, (kashmir) চাকোটি সহ একাধিক এলাকা সম্পূর্ণ জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। বহু মানুষ ঘরছাড়া, বহু জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। ইতিমধ্যেই স্থানীয় প্রশাসন সেখানে জরুরি অবস্থা জারি করেছে এবং নদীর ধারবর্তী অঞ্চলগুলি থেকে মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
পাকিস্তানের (kashmir) অভিযোগ, ভারত (kashmir) কোনও রকম পূর্বঘোষণা ছাড়াই উরি(kashmir) বাঁধের জল ছেড়েছে, যা সরাসরি সিন্ধু জলচুক্তির শর্ত লঙ্ঘন। ওই চুক্তি অনুযায়ী, ভারত-পাকিস্তান দুই দেশকেই জল ছাড়ার আগে অপর পক্ষকে নির্দিষ্ট সময় আগে সতর্ক করতে হয়। কিন্তু ইসলামাবাদের দাবি, কোনও রকম পূর্ব সতর্কতা ছাড়াই হঠাৎ করে ভারতের তরফে জল ছাড়ায় বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, এবং এই ঘটনাকে তারা আখ্যা দিচ্ছে ‘জল সন্ত্রাস’।
পরিস্থিতির বর্ণনা
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার রাত থেকে আচমকা নদীর জল বাড়তে শুরু করে। ঘুম থেকে উঠে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন মুজাফ্ফরাবাদ, হাট্টিয়ান বালা ও ঢালকোট এলাকার সাধারণ মানুষ। নদীর ধার ঘেঁষে থাকা গ্রামগুলি থেকে রাতারাতি সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে মানুষজনকে।
কৃষিক্ষেত্রে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি
নদীর (kashmir) জল ঢুকে পড়েছে বহু কৃষিজমিতে। ধান, গম সহ একাধিক ফসল পানিতে ডুবে গিয়েছে। কোহালা ও ঢালকোটের মতো নিচু এলাকাগুলিতে ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। বহু পশুপাখিও ভেসে গেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
ভারতের প্রতিক্রিয়া নেই
এই বিষয়ে ভারতের (kashmir) তরফে এখনও কোনও সরকারি প্রতিক্রিয়া দেওয়া হয়নি। না স্বীকার, না অস্বীকার—দুই দিকেই নীরবতা বজায় রাখা হয়েছে। তবে কিছু ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের দাবি, উরি বাঁধ থেকে জল ছাড়ার ক্ষেত্রে কোনও নিয়ম ভাঙা হয়নি। পরিস্থিতি অনুযায়ী নিয়ম মেনেই জল ছাড়া হয়েছে। ভারী বৃষ্টিপাত ও বাঁধে জলস্তর বেড়ে যাওয়ায় এই পদক্ষেপ ছিল জরুরি।
সিন্ধু চুক্তি স্থগিতের প্রভাব
এই ঘটনার নেপথ্যে বড় ভূমিকা নিচ্ছে ভারতের সদ্য ঘোষিত সিন্ধু জলচুক্তি (kashmir) স্থগিত করার সিদ্ধান্ত। পহেলগাঁওয়ে পর্যটকদের উপর জঙ্গি হামলার ঘটনার পর ভারত পাকিস্তানের প্রতি কঠোর মনোভাব গ্রহণ করেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, একবার চুক্তি স্থগিত হয়ে গেলে ভারতের আর বাধ্যবাধকতা থাকে না পূর্বঘোষণার। ফলে জল ছাড়ার সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণভাবেই ভারত সরকারের উপর নির্ভরশীল।
রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া
পাকিস্তানের (kashmir) একাধিক নেতা ও আমলা ভারতের এই পদক্ষেপকে ‘কৌশলগত প্রতিশোধ’ বলে ব্যাখ্যা করেছেন। তাঁদের বক্তব্য, জল এখন ভারতের হাতে অস্ত্র হয়ে উঠেছে, যেটা তারা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রয়োগ করছে। পাকিস্তানের জলসম্পদের উপর এমন আচমকা আঘাত ভবিষ্যতে বড় কূটনৈতিক সংঘাতের দিকেও ঠেলে দিতে পারে দুই দেশকে।
ভারত-পাকিস্তান(kashmir) সম্পর্কের টানাপোড়েনে এবার নতুন মাত্রা যোগ করেছে জলবণ্টন। বিতস্তার হঠাৎ জল ছাড়ার ফলে পাক অধিকৃত কাশ্মীরে যে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তা মানবিক সংকটের সঙ্গে সঙ্গে কূটনৈতিক দ্বন্দ্বকেও আরও তীব্র করে তুলেছে। এই ঘটনার পিছনে ভারত সরকারের স্পষ্ট নীতি ও মনোভাব এখন বিশ্ব রাজনীতির নজরে। সামনে কী পদক্ষেপ নেয় ভারত, আর কীভাবে পাল্টা প্রতিক্রিয়া দেয় পাকিস্তান, সেটাই এখন দেখার।