নয়াদিল্লি: সম্প্রতি একটি ভিডিও বার্তায় ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালকে প্রকাশ্য হুমকি দিয়েছিল খালিস্তানি (Khalistani) জঙ্গি গুরপাওয়ান্ত সিং পান্নুন। তিনি বলেছিলেন, “অজিত ডোভাল, তুমি ইউরোপ বা আমেরিকায় এসে আমাদের গ্রেফতারির চেষ্টা করো না কেন? আমি তোমার জন্য অপেক্ষা করছি!” এর ঠিক দু-দিনের মাথায় আবু ধাবি থেকে পাঞ্জাবের ওয়ান্টেড “বাব্বর খালসা ইন্টারন্যাশনাল”-এর জঙ্গি পরমিন্দর সিং ওরফে “পিন্ডি”-কে দেশে ফিরিয়ে হেফাজতে নিল পাঞ্জাব পুলিশ।
পাঞ্জাব পুলিশের ডিজিপি গৌরব যাদব বলেন, “পাঞ্জাব পুলিশ এবং কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলির সমন্বয় ও প্রচেষ্টার ফলে পাঞ্জাবের এই ওয়ান্টেড জঙ্গিকে দেশে ফেরান সম্ভব হয়েছে”। ডিজিপি জানান, পিন্ডি বিদেশ-স্থিত সন্ত্রাসী হরবিন্দর সিং ওরফে রিন্দা এবং হ্যাপি পাসিয়ার ঘনিষ্ঠ সহযোগী এবং বাটালা-গুরুদাসপুর অঞ্চলে পেট্রোল বোমা হামলা, আক্রমণ এবং চাঁদাবাজি সহ একাধিক জঘন্য অপরাধের সাথে জড়িত”।
কীভাবে আটক করা হয় পিন্ডিকে?
জানা গিয়েছে, বাটালা পুলিশের “রেড কর্নার নোটিশ”(RCN)-এর ভিত্তিতে একজন ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তার নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি দল গত ২৪ সেপ্টেম্বর আবু ধাবির উদ্দেশ্যে রওনা হয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রক এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত কর্তৃপক্ষের সমন্বয়ে আবু ধাবি থেকে পিন্ডিকে গ্রেফতার করে পাঞ্জাবে নিয়ে আসা হয় বলে জানা গিয়েছে।
ডিজিপি যাদব জানিয়েছেন, “সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে পাঞ্জাবের জিরো টলারেন্স নীতি এবং আধুনিক ইন্টেলিজেন্স ব্যবহার করেই পিন্ডিকে আটক এবং দেশে ফেরান সম্ভব হয়েছে।” এই জন্য কেন্দ্রীয় সংস্থা, পররাষ্ট্র মন্ত্রক এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত সরকারকে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন পাঞ্জাব পুলিশের ডিজিপি।
রেড কর্নার নোটিশ বা RCN কি?
আরসিএন (RCN) হলো ইন্টারপোল কর্তৃক একটি আন্তর্জাতিক সতর্কতা যা একটি সদস্য দেশের (এই ক্ষেত্রে, ভারত) অনুরোধে জারি করা হয়, যাতে সন্ত্রাসবাদ সহ গুরুতর অপরাধের জন্য অভিযুক্ত ব্যক্তিদের খুঁজে বের করা এবং অস্থায়ীভাবে গ্রেফতার করা হয়।
পাঞ্জাব পুলিশ, জাতীয় তদন্ত সংস্থা (NIA) এবং কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরো (CBI) এর মতো ভারতীয় আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলির তথ্য অনুযায়ী, পাঞ্জাব-ভিত্তিক সন্ত্রাসবাদের সাথে যুক্ত বেশ কয়েকজন ব্যক্তির মূলত বাব্বর খালসা ইন্টারন্যাশনাল (বিকেআই), খালিস্তান লিবারেশন ফোর্স (KLF) এবং খালিস্তান জিন্দাবাদ ফোর্স (KZF)-এর মতো খালিস্তানি বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলির বিরুদ্ধে সক্রিয় আরসিএন (RCN) রয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে পাঞ্জাবে হামলা, টার্গেট কিলিং এবং সন্ত্রাসে অর্থায়নের অভিযোগ রয়েছে।