শ্রীলঙ্কার (Sri Lanka) প্রেসিডেন্ট অনুরা কুমার দিসানায়েক দিল্লিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (Narendra Modi) সঙ্গে বৈঠক করার পর নিউ দিল্লিতে আশ্বাস দিয়েছেন যে, শ্রীলঙ্কার ভূখণ্ড কোনোভাবেই ভারতের স্বার্থের ক্ষতি করার জন্য ব্যবহার করা হবে না। শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্টের এই আশ্বাসটি ভারতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত হিসেবে ধরা হচ্ছে।
দ্বিপাক্ষিক আলোচনা চলাকালীন, শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট মোদিকে নিশ্চিত করেছেন যে, তাদের দেশের ভূখণ্ড কোনো ধরনের আঞ্চলিক বা আন্তর্জাতিক ইস্যুর জন্য ভারতের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হবে না। এর মাধ্যমে তিনি ভারতের নিরাপত্তা এবং স্বার্থকে অগ্রাধিকার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন, যা বিশেষত ভারত-শ্রীলঙ্কা সম্পর্কের মধ্যে চিরকালীন গুরুত্ব বহন করে।
এই আলোচনা, যা ভারতের বিদেশনীতি এবং নিরাপত্তা বিষয়ক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, তা একটি আবেগপূর্ণ মুহূর্তও ছিল। শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্টের আশ্বাসের পর, ভারতীয় সরকারও সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে, এবং মনে করছে যে এটি দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক আস্থা এবং সহযোগিতা আরো দৃঢ় করবে।
শ্রীলঙ্কার ভূখণ্ডের নিরাপত্তা নিয়ে ভারতের উদ্বেগের বিষয়টি নতুন নয়। এর আগে বিভিন্ন সময়ে ভারত শ্রীলঙ্কার মধ্যে ক্রমবর্ধমান চীনা উপস্থিতির প্রতি উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। বিশেষত, চীনের সামরিক এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক শ্রীলঙ্কার সঙ্গে বৃদ্ধি পাওয়ার পর ভারত এই বিষয়ে নিজের নিরাপত্তার জন্য আরও বেশি সচেতন হয়ে উঠেছিল। এই প্রসঙ্গে, শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্টের দেওয়া আশ্বাসটি বিশেষ গুরুত্ব বহন করে।
শ্রীলঙ্কা ও ভারতের মধ্যে সম্পর্কের ক্ষেত্রে, এই আশ্বাস শুধু ভূখণ্ডের নিরাপত্তা সংক্রান্ত নয়, বরং এটি একটি বৃহত্তর রাজনৈতিক ও কৌশলগত পটভূমি নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী মোদি এবং প্রেসিডেন্ট দিসানায়েকের মধ্যে এই বৈঠকটি দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অগ্রগতি এবং ভবিষ্যতের সহযোগিতার প্রতি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
বিশ্বব্যাপী সুরক্ষা এবং সমৃদ্ধি নিশ্চিত করার জন্য ভারত ও শ্রীলঙ্কা একে অপরকে সমর্থন দেওয়ার প্রতিশ্রুতি জানিয়েছে। দুই নেতা একসঙ্গে ব্যবসা, বাণিজ্য, পর্যটন, শিক্ষা এবং প্রযুক্তি ক্ষেত্রে সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা করেছেন। তারা জলবায়ু পরিবর্তন, বিপর্যয় মোকাবিলা এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা সম্পর্কিত সমস্যা সমাধানে একযোগভাবে কাজ করার অঙ্গীকার করেছেন।
এই বৈঠকটি ভারত ও শ্রীলঙ্কার সম্পর্কের মধ্যে একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে, যেখানে দুই দেশই একে অপরের জাতীয় নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক অগ্রগতি এবং আঞ্চলিক শান্তি বজায় রাখার জন্য একত্রে কাজ করবে।
এটি ভারতীয় কর্তৃপক্ষের জন্য একটি ভালো সংকেত, যা নিশ্চিত করে যে শ্রীলঙ্কা তাদের ভূখণ্ডে ভারতের স্বার্থ রক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকবে, এবং এটি ভারত ও শ্রীলঙ্কার মধ্যে সহযোগিতার নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে।